Hare to Whatsapp
ভোট সন্ত্রাসী কাজে যুক্ত সমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক: সিপিএম
By Our Correspondent
আগরতলা, নভেম্বর ৭, : রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সহ চলতি পুর/নগর সংস্থা সমূহের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে শাসক বিজেপি দল দ্বারা সংগঠিত চরম অগণতারিক কার্যকলাপ এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে সি পি আই (এম) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী নিলিখিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
১। বিগত দূর্গাপূজোর সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে সংগঠিত কিছু অঞ্জাতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরা রাজ্যে শাসক বিজেপি দলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে কিছু সংগঠন দ্বারা রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে চরম উস্কানীমূলক কাৰ্য্যকলাপ সংগঠিত করার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। এই ঘটনাবলীতে সাময়িকের জন্য হলেও সংখ্যালঘু জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ দেখা গেছে।
এই ঘটনায় শত প্ররোচনা সত্ত্বেও দল, মত ও ধর্ম বিশ্বাস নির্বিশেষে রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সতর্ক থাকায় এবং দেরীতে হলেও আরক্ষা প্রশাসন সক্রিয় হওয়ার কারণে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ব্যতিরেকে ঘটনা বেশীদূর গড়াতে পারেনি। রাজ্য প্রশাসন প্রথম থেকেই সতর্ক হলে পানিসাগর, বিশালগড়, উদয়পুর, কুমারঘাট, কৈলাশহর এবং সদরে যে দুঃখজনক ঘটনাগুলি ঘটেছে তা এড়ানো যেত।
এই ঘটনা চলাকালীন সময়ে এবং পরে সংহতি বিরোধী এই ঘটনাবলী সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য বহিরাজ্য থেকে বেশ কিছু সংগঠন এবং ব্যক্তিরাজ্য সফর করেছেন। তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণ এবং আরক্ষা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছেন। রাজধানীতে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এবং কেউ কেউ রাজ্য সরকারের কাছেও বক্তব্য তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দেখা গেছে, রাজ্য সরকার তাঁদের বক্তব্য না শুনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা প্রণীত দানবীয় দেশদ্রোহী আইনে মামলা রুজু করেছে। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১০২ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরা।
সি পি আই (এম) রাজ্য সরকারের এই ভূমিকাকে চরম অসহিষ্ণুতামূলক, ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ এবং সংবিধান বিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে। কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের ভূমিকা যদি সংহতি বিরোধী হয়ে থাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত। কিন্তু সরকার সেটা না করে এক তরফা পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
সিপিআই(এম) দাবী জানাচ্ছে মিশ্রবসতি এলাকাগুলিতে প্রশাসনের উদ্যোগে নাগরিকদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন ও শান্তিসভা সংগঠিত করার জন্য এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমূহকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য।
২। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতা, রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের ধারাবাহিক নির্লিপ্ততা এবং শাসক বিজেপি দলের দ্বারা সংগঠিত বল্গাহীন সন্ত্রাসের কারণে ৭টি নগর সংস্থায় সি পি আই (এম) সহ আন্যান্য বিরোধী দল সমূহও মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। সেখানে ইতিমধ্যে নির্বাচকমন্ডলীর সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। অন্য ১৩টি নগর সংস্থায় গতকাল মনোনয়ন পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন সে সকল নগরগুলিতেও শাসক দল আশ্রিত সমাজবিরোধীর দ্বারা লাগামহীন সন্ত্রাস সংগঠিত করা হচ্ছে। বাড়ী ঘরে আগুন লাগানো, ভাঙচুর করা, সম্পত্তি ধংস করা থেকে শুরু করে টেলিফোনে প্রাণহানী ঘটানোর জন্য হুমকী ইত্যাদি দেয়া হচ্ছে।
সি পি আই (এম) রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছেসুস্থ এবং ভয়মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন সম্পাদন করার সার্থে প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা করুন। সমস্ত রাজনৈতিক দল যাতে অবাধে নির্বাচনী প্রচার সংগঠিত করতে পারে তার উদ্যোগ নিন। সন্ত্রাসী কাজের সাথে যুক্ত সমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।