যদি, কিন্তু-র মধ্যে গ্রাম ত্রিপুরা হয়ে উঠতে পারে শষ্য সমৃদ্ধ

প্রদীপ চক্রবর্তী

রাজ্যের প্রত্যন্ত জনপদ তীব্র সংকটে ধূকছে। পরিশ্রুত তো দূরের কথা এমনিতেই জলসংকটে জেরবার। বিশেষ করে উপজাতিয় অধ্যূষিত অঞ্চলে বসবাসকারীরা জলের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তাদের না আছে জলের উৎস,না ট্যাঙ্কারে জল সরবরাহ। এরা পানের জল পায় না, তো দিনে ৫/৬ বার হাত ধূবে কিভাবে, জল আসবে কোত্থেকে? সেনিটাইজার তো দূরের কথা। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার কিভাবে রোধ হবে।

আশা কর্মী রয়েছে। সরকার তো ইচ্ছে করলে এদের মাধ্যমে বাড়ী বাড়ী সেনিটাইজার পৌঁছিয়ে দিতে পারে। কিন্তু না, এ পথে তো ওরা হাঁটছে না। এলাকার আশা কর্মীরা বাড়ীঘর চেনেন। তাদের কাছে এলাকার পঞ্জি রয়েছে। তাদের মাধ্যমে পৌছে দিলে তো করোনা বিস্তার রোধ করা যাবে অতি সহজেই। পঞ্চায়েত কিংবা এডিসি ভিলেজ অফিসের মাধ্যমেও তা করা যেতে পারে।সরকার এগুলো হয়তো বা ভেবে দেখতেই পারে। আখেড়ে তো উপকৃত হবে রাজ্যবাসী। কৃতিত্বের ফায়দা তো ওদের পক্ষেই যাবে। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় একবার যদি উপজাতিয় অঞ্চলে করোনা সংক্রমন হতে থাকে তাহলে একে সামাল দেয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। রাজ্যের উপজাতিয় অধ্যূষিত অঞ্চল সমূহের যে ভৌগলিক অবস্থান তাতে জরুরী ভিত্তিতে কোন কিছু পৌঁছে দেয়া কষ্ট সাধ্য ব্যাপার।

এমনিতেই খবর আসছে যে কাঞ্চনপুরে দূর্গম জনপদ খেদাছড়া, সিংলুম, পিপলাছড়ায় খাদ্যসংকট তীব্র। রয়েছে দামদই, দিনত্লাং, সিমলুং ১/২ তে জনজাতিরা খাদ্যের জন্য পাগলপারা। জলের কথা এদের মাথায় যাচ্ছেই না। বলি আগে তো চাল, তারপর অন্য কথা। এরা নানা সংকটের সাথে যুদ্ধ করছে। বেঁচে থাকাটা এদের কাছে এই মুহূর্তের বড় সংকট। এদের কাছে কোন ধরনের কাজ নেই। না আছে মনরেগার কাজ। অথচ জবকার্ডধারী রয়েছেন অনেক।

বলি কাজ তো এখনো সৃষ্টি করাই হয়নি।বা রেগার কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়নি।কবে দেয়া হবে তা সরকার বলতে পারবেন, অন্যদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

এরমধ্যেই খবর হলো এবিসি এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্হা সুনিশ্চিত করতে দুটি দপ্তর কাজ করে চলেছে। জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ১৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এডিসি এলাকায় বসবাসকারীদের কাছে পৌঁছে যাবে। বকেয়া টাকা নাকি সবার একাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে বা যাবে। ইতিমধ্যেই নাকি ৪০ কোটি টাকা জবকার্ড ধারীদের একাউন্টে ঢুকে গেছে। ভাল কথা। ঢুকলে তো উপজাতিয়রা বেঁচে যাবেন। চাল ডাল কিনতে পারবেন, ১০০ টাকার সেনিটাইজার ২০০ টাকায় কিনতেই পারবেন। এসপিরেশন ব্লকের ৯২,৮৯৯ জন জবকার্ড ধারীদের ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে ৪কোটি ৬৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক একাউন্টে এই টাকা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আরো একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্হা, খাদ্যের সংস্হান যেখানে করা হয়েছে বা হচ্ছে, সেখানে তো উপজাতিদের সমস্যা থাকার কথাই নয়। পিএম কিষান যোজনা, জনধন যোজনার টাকাও বেনিফিসিয়ারিদের একাউন্টে ঢুকেছে বলে শিক্ষামন্ত্রী দাবী করেছেন।

এখন সমস্যা তাহলে কৃষকদের নিয়ে। কাঞ্চনপুর এলাকার খবর লকডাউন এর ফলে স্হানীয় কৃষকরা অভাবিত ক্ষতির সামনে পড়েছে। তাঁরা না পারছেন বাজারে যেতে আবার পাইকাররাও আসতে পারছেনা।ফলে উৎপাদিত ফসল তেমন বেগুন, করলা, ঝিঙে,গাজর, টমেটো জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের মাথায় হাত উঠেছে। তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভবিষ্যতের কথা ভেবে। কৃষকরা জলের দরে স্হানীয় বাজার, হাটে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।অথচ এবছর প্রচুর উৎপাদন হয়েছে।

যদিও রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য অনেক ছাড় দিয়েছেন। এরা জমিতে যেতে পারবেন বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে।

রাজ্য সরকার জানিয়েছে এদের অনুমতি পত্র সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু যেখানে পরিবহন ব্যবস্হা নেই সেখানে এরা কিভাবে অনুমতি পত্র সংগ্রহ করতে ডিএম, এস ডি এম অফিসে যাবেন? এ ক্ষেত্রে সরকার ভি এল ডবলু, কৃষক বন্ধুদের কাজে লাগাতে পারতেন। অর্থাৎ বিএলডবলিউদের মাধ্যমে অনুমতি পত্র দেওয়ার ব্যবস্হা করতে পারলে কৃষকরা নানা ভাবে অনুমতি পত্র পেয়ে যেতে পারবেন। তাতে এদের অনেক সুবিধা যেমন হবে তেমনি কৃষিকাজ করা সহজতর হয়ে উঠতে পারে।

মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়টি ভেবে দেখলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.