আইইউসিএন বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেস ২০২৫: ভারতের জাতীয় লাল তালিকার রোডম্যাপ উন্মোচন
অনুপম গুহ
October 13, 2025
আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সংরক্ষণ ইউনিয়ন (IUCN) একটি বিশ্বব্যাপী সংগঠন, যার সদস্য সংখ্যা ১,৪০০ এর বেশি এবং ১৭০টিরও বেশি দেশের মধ্যে বিস্তৃত। ১৯৪৮ সালের ৫ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সদর দফতর গ্ল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডে। এই সংস্থা প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য নিবেদিত। এটি জীববৈচিত্র্য মূল্যায়নের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ নীতিগুলি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আইউসিএন বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেস ২০২৫, যা আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে, ৯-১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এটি প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানুষের জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি এবং সহযোগী কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হবে বলে বর্তমান প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে। এই বছর বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেস ২০২৫ থিম হলো "পাওয়ারিং ট্রান্সফরমেটিভ কনসারভেশন (Powering Transformative Conservation)"। এই বছর কংগ্রেস গুরূত্বপূর্ণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যেমন জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলা, পাশাপাশি সংরক্ষণে অগ্রাধিকার নির্ধারণের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করবে। সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন এনজিও থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ও বাস্তবায়নকারীরা, চার বছরের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে একত্রিত হয়ে সংরক্ষণ চালনা করবেন এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ সংক্রান্ত এজেন্ডা নির্ধারণ করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, যা "বিশ্ব জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র সংক্রান্ত ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করার” উপর কেন্দ্রিত, আইউসিএন-এর বিভিন্ন প্রস্তাবনার ওপর কেন্দ্র করে আলাপ আলোচনা সংগঠিত হবে। এতে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য হারানো, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত অবক্ষয় মোকাবেলায় সমন্বিত আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। এই বছর কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে,৯ই অক্টোবর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রস্তাবনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ নীতিকে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। প্রস্তাবনা-০৮৭, যা প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সম্পর্কিত সিন্থেটিক বায়োলজির উপর একটি বিস্তৃত আইউসিএন নীতির গ্রহণের আহ্বান জানায়। এতে ০৮৭-এর রূপান্তরকারী সম্ভাবনা—যেমন প্রজাতি পুনরুদ্ধার স্বীকৃত হলেও এর সাথে জড়িত ঝুঁকিগুলোর বিষয়ে সতর্কতা জোরদার করা হবে, যেমন পরিবেশবিক্রিয়া এবং জৈব-সুরক্ষায উদ্বেগ। এই প্রস্তাবনাটি সদস্যদেরকে আহ্বান জানায় বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে শাসন কাঠামো তৈরি করার জন্য, যেখানে উদ্ভাবন ও সতর্কতা সমন্বিত হবে। অন্যদিকে, প্রস্তাবনা-১০৮, যা বন্যপ্রাণীর বাণিজ্যিক পোষা প্রাণীর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আইউসিএন নির্দেশিকা প্রণয়নের জন্য আহ্বান জানায়। এই শিল্পের ভূমিকা উল্লেখ করে, যেখানে অতিরিক্ত শিকার ও অবৈধ পাচার প্রাণীর সংখ্যা হ্রাসের জন্য দায়ী, এবং এর মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীকল্যাণ রক্ষা করার জন্য শক্তিশালী ন্যাশনাল আইন, আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও টেকসই বিকল্পের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও, উপস্থিত প্রতিনিধিরা প্রস্তাবনা-42, “জৈববৈচিত্র্য ও জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় জীবাশ্ম জ্বালানি সরবরাহ-প্রান্তের পদক্ষেপ ও ন্যায্য রূপান্তর” নিয়েও আলোচনা করেন। এই আলোচনা থেকে সিদ্ধান্ত হয় যে আইউসিএন: কয়লা, তেল ও গ্যাস অর্থাৎ জীবন্ত জীবাশ্ম ব্যবহার ধাপে ধাপে কমানোর জন্য পথনকশা তৈরি করবে, যা প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কেন্দ্রে জীবাশ্ম জ্বালানী হ্রাস করতে সচেষ্ট হবে। যদি গৃহীত হয়, তবে এটি আইইউসিএনকে প্রথম বড় পরিবেশগত সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে, যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চালানোর জন্য “ফসিল ফুয়েল নন-প্রোফিলারেশন ট্রিটি” এর পক্ষপাতিত্ব করবে, যার লক্ষ্য হলো জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণ বন্ধ করা এবং শ্রমিক ও সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায্য রূপান্তর নিশ্চিত করা।
আইইউসিএন বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেস ২০২৫, ভারতের পক্ষ থেকে তার ন্যাশনাল রেড লিস্ট রোডম্যাপ এবং ভিশন ২০২৫-২০৩০ চালু করা হয়, যা প্রজাতি সংরক্ষণ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি এছাড়াও সিন্থেটিক বায়োলজির নীতি ও জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধের বিষয়েও আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগ গ্রহণের কথা কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শ্রীকীর্তি বর্ধন সিং অনুষ্ঠানের উনার বক্তব্যে তুলে ধরেন এবং দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। এটি ভারতীয় জীববৈচিত্র্য ডকুমেন্টেশন, হুমকি মূল্যায়ন ও প্রমাণভিত্তিক সংরক্ষণ পরিকল্পনাকে আরও জোরদার করবে বলে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের অভিমত। উদ্বোধনী অধিবেশনে শ্রী সিং বলেছেন, “এই রোডম্যাপটি ২০৩০ পর্যন্ত ভারতের সংরক্ষণ কৌশলকে নির্দেশনা দেবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যখন আমরা সংরক্ষণ ও প্রজাতির কথা বলি যেখানে বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন, তখন ব্যাসলাইন ডেটা, সুস্পষ্ট কাঠামো এবং সঠিক সংখ্যা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমাদের নীতিগুলোর সঠিক দিক নির্দেশনা হয়।” শ্রী সিং জোর দিয়ে বলেছেন যে, রেড লিস্টের মতো বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যার মাধ্যমে অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও সম্পদ সংস্থান কার্যকরভাবে পরিচালিত হয়। “এই উদ্যোগ আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে, যা উভয় উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য আরও কার্যকর সংরক্ষণ নীতি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে,” বলে তিনি আশা ব্যাক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের জীববৈচিত্র্য শুধুমাত্র স্থলজপ্রাণী নয়, বরং এতে ২০,০০০ এর বেশি সামুদ্রিক প্রজাতিও অন্তর্ভুক্ত। শ্রী সিং আরো বলেন, বিজ্ঞান ভিত্তিক ডকুমেন্টেশন, যেমন "রেড লিস্টেড ডেটা" গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা অগ্রাধিকার ভিত্তিক নির্ধারণ দিক নির্দেশনা করবে। এই উদ্যোগ আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণকে সঠিক পথে চালিত করবে, যাতে আরও কার্যকর সংরক্ষণ নীতি গড়ে তোলা যায়,”—এই আশ্বাস দিয়ে তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষ করেন।
ভারতবর্ষ, বিশ্বের ১৭টি অতি জীববৈচিত্র্যবৈচিত্র্যপূর্ণ দেশের একটি, এখানে চারটি জীববৈচিত্র্য হটস্পটের বাসস্থান—হিমালয়, পশ্চিমঘাট, ইন্দো-বর্মা এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। যদিও ভারতবর্ষ বিশ্বের মোট ভূমির মাত্র ২.৪%, তবুও এটি প্রায় ৮% বিশ্বজুড়ে উদ্ভিদ এবং ৭.৫% প্রাণী আবাসস্থল, যেখানে ২৮% এর বেশি উদ্ভিদ এবং ৩০% প্রাণী স্বতন্ত্র। ভারতের ডকুমেন্টেড জীববৈচিত্র্য ১০৪,০০০ এর বেশি প্রাণী প্রজাতি, ১৮,০০০ এর বেশি স্বপুষ্পক উদ্ভিদ, এবং প্রায় ২০,০০০ সামুদ্রিক প্রজাতি। ভারতের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শক্তিশালী আইনী কাঠামোর কথা তুলে ধরে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে যে, ১৯৭২ সালে প্রবর্তিত ও ২০২২ সালে সংশোধিত "ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশন অ্যাক্ট সংরক্ষণ" আইনটি প্রনয়ন হয়। এটি সিআইটিইএস(CITES)এর অ্যাপেন্ডিসের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতিগুলোর জন্য সুরক্ষা বাড়িয়েছে। জাতীয় রেড লিস্ট মূল্যায়ন উদ্যোগটি আইইউসিএন-এর বৈশ্বিক মানদণ্ড বা মাপকাঠির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ভারতের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে কাজ করে। এটি কুনমিং-মন্ট্রিয়াল বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য কাঠামোর অধীনে ভারতবর্ষের প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে সমন্বিত।
ভারতবর্ষ ২০৩০ সালের মধ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের জন্য জাতীয় রেড ডেটা বুক(Red Data Book) প্রকাশের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। রোডম্যাপ অনুযায়ী, প্রস্তাবিত রেড লিস্টটি দেশের ভবিষ্যত পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক সংরক্ষণ প্রকল্পগুলোর জন্য একটি ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া, বিশ্বজুড়ে, আইইউসিএন রেড লিস্ট বিলুপ্তির ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য সর্বোচ্চ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এখন পর্যন্ত ১৬৩,০০০ প্রজাতির মূল্যায়ন করা হয়েছে, যার প্রায় ২৮% বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে, যা শক্তিশালী সংরক্ষণ কার্যক্রমের জরুরী প্রয়োজনের একটি স্মারক। এই উদ্যোগের মাধ্যমে, ভারত তার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বৈশ্বিক টেকসইতা এজেন্ডার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। ভিশন ২০২৫–২০৩০ ডকুমেন্টটি, যা ভারতের জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (ZSI) ও বোটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (BSI), আইইউসিএন এবং সেন্টার ফর স্পিসিস সারভাইভাল-এর সহযোগিতায় প্রস্তুত হবে , এটি একটি জাতীয় সমন্বিত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি নির্ধারণ করবে, যা ভারতের উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংরক্ষণ অবস্থা মূল্যায়ন ও মনিটরিং করার জন্য ভূমিকা পালন করবে।
গত ৯ই অক্টোবর আইইউসিএন বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেসের সপ্তাহব্যাপী উদ্বোধন এক গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহের সূচনা করে, যেখানে সংলাপ, অংশীদারিত্ব, এবং নীতিগত প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বৈশ্বিক সংরক্ষণের পথকে নতুন করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। আইইউসিএনের অনন্য ক্ষমতা, যা রাষ্ট্রায়ত্ত ও অরাষ্ট্রায়ত্ত উভয় ধরনের অংশীদারদের একত্রিত করতে সক্ষম, যা ভবিষ্যত প্রাকৃতিক সংরক্ষায়নের জন্য একটি শক্তিশালী অঙ্গীকারের ভিত্তি স্থাপন করবে। প্যারিস চুক্তি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, এবং বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য ২০৩০ এর সময়সীমা সম্মুখ সমরে, তাই আবুধাবিতে ২০২৫ সালের আইইউসিএন কংগ্রেস একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে স্বনির্ভরশীলতা বাড়ানো, কর্মপ্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করা, এবং সহযোগী সমাধানগুলোকে প্রসারিত করে প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে সম্পর্কের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করাই হবে মূল লক্ষ্য।
একই সঙ্গে, আইইউসিএন কংগ্রেসে ১০ এবং ১১ অক্টোবর ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনেরও আয়োজন করা হযেছে, যা একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে, বিভিন্ন তথ্য ভিত্তিক আলোচনা এবং অংশগ্রহণে সকলকে উৎসাহিত করবে , পাশাপাশি তাদের সমাধান ও উদ্ভাবনের সন্ধান মিলবে যা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সহায়ক হবে। এই ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনটি সকল নিবন্ধিত আইইউসিএন কংগ্রেস অংশগ্রহণকারীর জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা।
কংগ্রেসে আরও আলোচনা করা হয়, আইইউসিএন ইকোসিস্টেম ব্যবস্থাপনা কমিশনের মাধ্যমে নতুন গ্লোবাল নির্দেশিকা প্রকাশের বিষয়ে, যা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করবে। এই নির্দেশিকাগুলো প্রাকৃতিক ভিত্তিতে সমাধান ও ক্ষতিগ্রস্ত ইকোসিস্টেমের পুনরুদ্ধার এবং জীববৈচিত্র্য রেজিলিয়েন্স বাড়ানোর জন্য ব্যবহারিক টুল সরবরাহ করবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার (WCS) দ্বারা যৌথভাবে পরিচালিত, একটি মোশন উপস্থাপন করা হবে, যা পরিবেশ অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। এটি আইইউসিএন সদস্যদের একটি বিস্তৃত জোটের সমর্থন পেয়েছে। এই প্রস্তাবটি বিশ্বব্যাপী সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানায়, যার লক্ষ্য হলো বন্যপ্রাণী পাচার, অবৈধ কাঠ সংগ্রহ, খনি খনন, এবং মাছ ধরা বন্ধ করা, যা পরিচালন ব্যবস্থা, জীবিকা, এবং ইকোসিস্টেমের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।
বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য হারানো, এবং পরিবেশগত অবক্ষয়ের মোকাবিলা করছে, এই আইইউসিএন কংগ্রেসের ফলাফল ভবিষ্যতের কার্যক্রমের জন্য একটি রূপরেখা হিসেবে কাজ করবে। ধরনীর সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করা শুধুমাত্র একটি নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং মানব কল্যাণ ও টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। আগামী বছরগুলিতে, আবুধাবিতে শুরু হওয়া উদ্যোগের সফলতা নির্ভর করবে স্থায়ী প্রতিশ্রুতি, সহযোগিতা, এবং উদ্ভাবনের উপর। এই কংগ্রেসের উত্তরাধিকার হলো একটি বৈশ্বিক আন্দোলনকে উদ্বুদ্ধ করা, যা প্রতিশ্রুতিশীল, টেকসই, এবং জীববৈচিত্র্যপূর্ণ পৃথিবী গড়ার জন্য নিবেদিত - ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
আরও পড়ুন...