মৃত্যু তুচ্ছ করে ময়দানে লড়ছে সাংবাদিককূল

প্রদীপ চক্রবর্তী

মৃত্যু তাড়া করে নিয়ে যাচ্ছে মানবসভ্যতাকে। প্রতিনিয়ত গ্রাস করছে একের পর এক প্রান। বিশ্ব দেখছে মৃত্যুর ভয়ঙ্কর তান্ডব। এক মুহুর্তে ও জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই। চোখের সামনেই অপর প্রান্তে থরথর সাজানো মৃতদেহ। যদিও তা নিউইয়র্কে। মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এই সভ্যতা, চিকিৎসক,গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। নিরন্তর গবেষণায় তাঁরা নিয়োজিত। মানব সভ্যতাকে কিভাবে বাঁচানো যায় সেটাই তাদের লক্ষ্য। আজ নুতন নয়। যুগে যুগে চলছে এই তপস্যা। গত এক শতকে যেমন এরা সাত সাতটি মহামারীর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন এই বিশ্বকে। ভ্যাকসিন আবিস্কারের মধ্যদিয়েই বিজ্ঞান সভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছে, রুখে দিয়েছে মারনব্যাধির তান্ডব।

নানা জাতি, নানা ধর্মের দেশেও আজ এর তান্ডব। গোটা দেশ লড়াই করছে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। নিজের দেশে লড়াই আবার অন্যদেশে মৃত্যুর লড়াই রোধ করতে বেঙ্গল ক্যামিকেলের তৈরী ঔষুধ পাঠানো। ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে এই ঔষধ। বিশ্বের আরো ২৭ টি দেশে ভারত এই ঔষধ পাঠাবে।

মৃত্যুর পরোয়ানাকে মাথায় রেখেই সৈনিকের মতো লড়াই করে চলেছে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা। পিছিয়ে নেই ভিজুয়াল মিডিয়া, অনলাইন নিউজ পোর্টাল। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রভাব এখন অনেক বেশি,বিশেষ করে এই ক্রান্তিকালে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময়ে মৃত্যুকে দূরে সরিয়ে সরাসরি ময়দানে ছুটছেন সাংবাদিক,ক্যামেরাম্যানরা। দিন নেই, রাত নেই, মৃত্যু ভয় নেই,কাজে এদের বিরাম নেই। হাসপাতাল থেকে সচিবালয়,অফিস দিনভর ছোটাছুটি। সবার লক্ষ্য সর্বশেষ খবর পৌঁছে দেওয়া। এ রাজ্যে একজনকেই সব কাজ করতে হয় বলা চলে। সোজা কথায় জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ। এ রাজ্যের সংবাদপত্রের আর্থিক হালহকিকত সবারই কমবেশি জানা। দু-তিনটি বাদ দিলে বাকী সংবাদপত্রগুলির কাঠামো খুব দূর্বল। সাংবাদিকদের এক-একজনকে তিনটে চারটে বিট সামলাতে হয়। ফলে বাইকই এদের ভরসা। প্রথম সারির দুটি সংবাদপত্রের কথা অবশ্য আলাদা। বিট ভাগ করা আছে, যে যার বিটে কাজ করে থাকে। অফিসের গাড়ী আছে। বিটে পৌঁছে যেতে কসরৎ করতে হয়না। কিন্তু ব্যতিক্রমও আছে। ওয়েব মিডিয়া বা অনলাইন নিউজ পোর্টাল ত্রিপুরাইনফোর পরিকাঠামো ও অনেকটাই মজবুত বলে অনেকেই বলে থাকেন।

এ রাজ্যে বেশ কয়েকটি স্হানীয় নিউজ চ্যানেল রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২/৩টি র পরিকাঠামো নেহাত দূর্বল নয়। তবু ওরা লড়াই করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে সংবাদপত্র নিয়ে। বলা হয়েছে এই শিল্পের সাথে প্রায় পাঁচ হাজার জন যুক্ত। এদের পরিবারের ভরন পোষন এই আয় থেকেই হয়ে থাকে। কিন্তু লকডাউনে অনেক কিছু নাকি প্রায় শেষের পথে। নিউজপ্রিন্টের মজুতে টান ধরেছে। রঙ্গীন কালিও প্রায় নেই। তদোপরি রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় সংবাদপত্র পৌঁছাতে পারছেনা ।বাধা সৃষ্টি করছে। পুলিশও নাকি কোন কোন ক্ষেত্রে যুক্ত বলে অভিযোগ। এই অবস্থা চলতে থাকলে সংবাদপত্রের অস্তিত্বের সংকট দেখা যাবে বলে অভিযোগ। প্রশ্ন হচ্ছে বা কারা বাধা দিচ্ছে, এদের পরিচয় কি, কেন বাধা দিচ্ছে? এই তিনটি বিষয় খোলামেলাভাবে বললে অন্তত পাঠকরা জানতে পারত।

এখন ডিজিটাল যুগ। নাই নাই করে হলেও ৭/৮ টা সংবাদপত্রের পোর্টাল রয়েছে। পাঠক ভোরেই প্রকাশিত সংবাদপত্র পড়তে পারেন।

এ ক্ষেত্রে দর্পন এগিয়ে। রাত ২টার মধ্যেই আপলোড হয়ে যায় কাগজ। ফলে পাঠকের অসুবিধা হয় না। এই প্রতিবেদক তো রাত ২/৩টা নাগাদ পত্রিকা পড়ে নিতে পারে। সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া যায় ত্রিপুরাইনফো.ডটকমে।

মূল প্রসঙ্গে ফিরে এসে বলা যায় বর্তমান রাজ্য সরকার বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তো মিডিয়া অনুরাগী। কোন রাজ্য সরকার সংবাদপত্রের প্যাকেট রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে দিয়ে থাকে ? সম্ভবত ত্রিপুরা সরকারই। যে সরকার বেসরকারী সংবাদপত্র, সরকারী ব্যবস্হাপনায় ডেসটিন্যাশনে পৌঁছে দিচ্ছে, সে সরকার থাকতে তো অন্যসব বাধা থাকার কথাই নেই।থাকলে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ভাবে ব্যবস্হা নেবে এটা প্রত্যাশিত। অনেকেই বলছেন সরকারী উদ্যোগে নিউজপ্রিন্ট এনে দেওয়ার ব্যবস্হা করে দেয়ার জন্যই হয়তো নানা ইস্যু উঠে আসছে।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.