রতিমোহন জমাতিয়া, দিলখোলা লোকের মানুষ, কখনো অভব্য আচরন করতেন না
প্রদীপ চক্রবর্তী
অবসান হল এক অধ্যায়ের। পরলোকে চলে গেলেন রতিমোহন জমাতিয়া। তাঁর মৃত্যুতে উদয়পুর শোকস্তব্ধ। শোকস্তব্ধ কিল্লা,বাগমা সহ উপজাতিয় অধ্যূষিত গ্রামাঞ্চল। বর্ষীয়ান জননেতা উপজাতি যুব সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। পরবর্তীতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। পাঁচ বারের বিধায়ক ছিলেন। লড়াকু নেতা হিসেবে পরিচিত রতিবাবু বাগমা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তাঁর বাড়ীও বাগমা এলাকায়।গত দু'বছর ধরে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। বলা হয় তিনি কোমায় ছিলেন। চিকিৎসা করেও উন্নতি হয়নি। তিনি রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ ও ছিলেন। দক্ষিণ জেলার উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তাঁর মৃত্যতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযুস বিশ্বাস, সিপিএম বিধায়ক রতন ভৌমিক শোকপ্রকাশ করে সমবেদনা জানিয়েছেন। রাজ্যে জেলা পরিষদ গঠনের আন্দোলনে তিনি ও ছিলেন পুরোধা। সহজ সরল,সাধাসিধের মানুষ ছিলেন রতিবাবু। এলাকার লোকজন সাতসকালে তার বাড়ী ছুটে আসতেন। এদের সমস্যা নিয়ে জেলাশাসক এর সাথে কথা বলতেন। যারাই ছিলেন ডিএম, তারা রতিবাবুকে শ্রদ্ধা করতেন।
শুকর কেটে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিলেন শ্যামা চরন ত্রিপুরার সাথে। ভূড়িভোজ হয়েছিল তখন।দিলখোলা লোকের মানুষ। অভব্য আচরন করতেন না। তৎকালীন বাগমা এলাকাবাসীর কাছে তিনি ছিলেন সব সমস্যার সমাধান। তাদের ব্যাপার ছিল অন্য রকম। যে যার সমস্যা নিয়ে আসতেন। তাদের নিয়ে তিনি সপ্তাহে দুদিন ছুটতেন ব্লক,এসডিএম ও সংশ্লিষ্ট অফিসে। সমাধান হয়ে যেত ফটাফট। কেননা মৃদুভাষী, নেহাত ভদ্রলোক বলে পরিচিত। তাই সব জটিলতা কাটিয়ে সমাধান হয়ে যেত।জনজাতিরা তো বেজায় খুশি। সাংগঠনিক কাজকর্মের ধরন ছিল অন্যরকম। এক একেক দিন একেক পাড়ায় যেতেন। পাড়ার লোকজন, দলের লোক জড় হতেন। শুনতেন,বলতেন। কর্মসূচি জানিয়ে দিতেন। ব্যস এবার অন্য পাড়ায়। সেখানেও একই ভাবে আলোচনা। দুপুরের ভোজন। এভাবেই তিনি ২৫ বছর এলাকা ধরে রেখেছেন। সদাহাস্যময় রতি দা। রেগে গেলে ভয়ঙ্কর। রোদ বৃষ্টি ঝড় ছিল তাঁর নিত্য সঙ্গী। শেষ দিক ভালো যায়নি। অসুস্হতা লেগেই ছিল। কোমায় আচ্ছন হয়ে পড়েন। ছিলেন বিছানায় প্রায় দেড়বছর। শুক্রবার চলেই গেলেন। তাঁর মৃত্যুতে এক অধ্যায়ের অবসান ঘটল।