লকডাউনঃ ২১ দিন পর আমাদের কি করতে হবে
ডঃ বাসব ঘোষ
ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র রাজ্য ত্রিপুরা এখন আর কেভিড-১৯ এর ছোঁয়া মুক্ত নয়। রাজ্যেও ‘২১ দিন ধরে লকডাউন’ চলবে। কিন্তু ‘২১ দিন লকডাউন’ শেষ কথা নয়, এরপরও যুদ্ধ চলবে! আন্তরিক সরকারি প্রচেষ্টা, ডাক্তারদের ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের হার না মানা মানসিকতা এবং অধিকাংশ জনগণের সহযোগিতাতেই এখনো ত্রিপুরাতে সব ঠিকঠাক চলছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন একটি সাংঘাতিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানব স্বার্থে প্রতিটি দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা নিজেদের মধ্যে তথ্যের আদান প্রদান সঠিক দিশাতে করছেন। এই কোভিড-১৯ আরও একবার প্রমান করেছে, আন্তর্জাতিক সমন্বয়, বিজ্ঞান জগৎ এ কতটা গভীরভাবে বিরাজ করছে।
গত ডিসেম্বর ২০১৯ এর শুরুতে চীন দেশে পঞ্চান্ন বছরের এক মহিলার নিউমোনিয়া হওয়ার চার সপ্তাহের ভিতর সংক্রামক ভাইরাসটি যে আলাদা তা বুঝে সেটিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এই সীমিত সময়ের মধ্যে তাকে প্যাথলোজি ল্যাবরেটরিতে সনাক্ত করার সহজ পরীক্ষাও ঠিক করে ফেলে চিকিৎসা বিজ্ঞান। এই যুদ্ধ আমরা হারবো না। এ যেন তারই আগামসূচী! এরপর ছয় সপ্তাহের কম সময়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ক তথ্যের আদান প্রদানের মাধ্যমে ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তে ভাইরাসটিকে জানতে পারে সারা বিশ্ব। এই নতুন ভাইরাসটি অনেকটা ২০০২-২০০৫ সালে পৃথিবীব্যাপী বিপর্যয় ঘটানো SARS ভাইরাসের মতোই, তাই এর নামকরন করা হয়েছে SARS-2 । এখানে বলে রাখি, ঐ বিপর্যয়ের সময় মাত্র তিন জন ভারতীয়-র দেহে SARS সনাক্ত করা হয়েছিল। তাই আমাদের সরাসরি অভিজ্ঞতা ঐ রোগের বিষয়ে সীমিত।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান তাই SARS ভাইরাস সম্পর্কে জানতে দুই বছর লাগলেও, মাত্র দশ সপ্তাহের কম সময়ে SARS -2 এর বিষয়ে সব তথ্য বৈজ্ঞানিকদের হাতে এসে যায়। তাইতো এখন শুধু পঁয়ত্রিশটি গবেষণাগারে ভ্যাকসিন বা টিকার কাজই চলছে না, অনেক গবেষণাগারে মানুষের দেহের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। তবে কোভিড-১৯ টিকা ডাক্তারদের হাতে আসতে এখনো এক থেকে দেড় বছর সময় লেগে যাবে। শুনলে অবাক হতে হবে HIV ভাইরাসকে বুঝতে সময় লেগেছিল দশ বছর অর্থাৎ ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল। কিন্তু আজকের দিনে যুগান্তরকারী বৈজ্ঞানিক তৎপরতা অসম্ভবকে সম্ভব করতে প্রস্তুত।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সামাজিক রোগ প্রতিরোধ শাস্ত্রে ‘সোশ্যাল ডিসটেন্স’ নতুন বিষয় নয়। ১৯১৬ সালে নিউইয়র্ক সিটি প্রথম প্লেগ রোগ প্রতিরোধ করতে এর সাহায্য নেয়। এরপর বার বার নানা ভাবে সংক্রামক মহামারী গুলি কাবু করতে ‘সোশ্যাল ডিসটেন্স’ পদ্ধতি কার্যকরী হয়। এই পদ্ধতিতে রোগের সংক্রমণ আটকাতে মানুষের মানুষের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে আহ্বান করেন সরকারী আইন প্রনায়নকারীরা এবং কেন, কতদিন, কিভাবে ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর চিকিৎসা শাস্ত্রের সূত্র মেনে নির্ধারিত হয়। এই কোভিড-১৯ জীবানু হাঁচি, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সংক্রামিত ব্যাক্তির নাক, মুখ থেকে জলকনার সঙ্গে বেড়িয়ে অন্য সুস্থ ব্যাক্তির দেহে তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সরাসরিভাবে অথবা হাতে যদি জীবানু লেগে থাকে তা নাক, মুখ বা চোখের মাধ্যমেও দেহের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। যেন তেন প্রকারনে SARS-2 শ্বাসনালীতে ঢুকে সোজা ফুসফুসে গিয়ে সংখ্যা বৃদ্ধি করছে খুব দ্রুত হারে। আর তা থেকেই হচ্ছে কোভিড-১৯ রোগ, যার ধরন-ধারন নিউমোনিয়ার মতো।
সংক্রামক রোগের সংক্রামণ রোধ করার প্রাথমিক সূত্র হচ্ছে ব্যাক্তিগতভাবে সংক্রমণ আটকানোর প্রচেষ্টা করা হবে প্রথম কাজ। এরপর সোশ্যাল ডিসটেন্সের কথা আসবে। ব্যাক্তিগত পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ করতে ব্যাক্তি নাক-মুখ ঢাকা মাস্ক ব্যবহার করবেন ও ঘনঘন সাবান জলে হাত ধুয়ে নেবেন। এই ভাইরাসটির বাইরের আবরণ চর্বি দিয়ে তৈরি তাই সুবিধা হলো সাবান জল দিয়ে কুড়ি সেকেন্ড হাত ধুয়ে সেটিকে ধ্বংস করা যায়। কারন সাবান জলে তার বাইরের চর্বির আস্তরন ভেঙ্গে ধ্বংস হয়ে যায়। যদি অল্প টাকার সাবান জল না থাকে বা সঙ্গে নিয়ে ঘোরা সম্ভব নয়, তখন দাম দিয়ে কেনা ৬ শতাংশের বেশী মাত্রার অ্যালকোহল আছে এমন সেনিটাইজার ব্যবহার করা যাবে।
সোশ্যাল ডিসটেন্সের পরের মাত্রা হলো একত্রিত ভাবে জন সমাগম আটকে দেওয়া। যেমন মিটিং, মিছিল, সন্মেলন, বাজারের ভিড়, দোকানের ভিড় ইত্যাদি বন্ধ করা; স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি বন্ধ রেখে ভিড় রোধ করা; অফিসগুলিতে অবাঞ্ছিত ভিড় এড়িয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া; প্রয়োজনে ঘর থেকেই অফিসের কাজ করা। মোট কথা দূরত্ব বজায় রেখে ছোঁয়াচে রুগের সংক্রমণকে একজন থেকে আরেকজনের হতে দেব না। এবং বিভিন্ন দেশ বড় আকারে সোশ্যাল ডিসটেন্সের সাহায্য নিলেও ২০০২-২০০৫ সালের SARS মহামারীর সময় চীন প্রথম বড় সড় সোশ্যাল ডিসটেন্সে করতে বাধ্য হয়। এবার SARS-2 এর কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বের সব আক্রান্ত দেশই সোশ্যাল ডিসটেন্সের নিয়ম লাঘু করেছে। ভারতে কেরল রাজ্য প্রথম আক্রান্ত হয় ৩০শে জানুয়ারি ২০২০। কিন্তু এরপর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মহারাস্ট্রে এবং অন্য রাজ্য গুলিতে। রাজ্য স্তরে সোশ্যাল ডিসটেন্স মহারাষ্ট্রে প্রথম লাঘু করা হয়। কিন্তু দেশব্যপি আরো বড় পদক্ষেপের প্রয়োজন দেখা দেয়- না হলে মহামারী আটকানো অসম্ভব ছিল। ১২ই মার্চ কোভিড-১৯ থেকে প্রথম মৃত্যু হয় আমাদের দেশে, ঐ দিন মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৮২ জন । এর এক সপ্তাহ পর ১৯শে মার্চ মোট সংক্রামিতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯৮ জন, আর মৃত্যু হয় ৪ জনের । তখন লকডাউনের সিদ্ধান্ত ছিল আপাতদৃষ্টিতে প্রয়োজনীয়, কিন্তু সংখ্যার নিরিখে তর্ক সাপেক্ষ !
মহামারী রোধে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রয়োজনে প্রথম লকডাউন হয় ২০০২-২০০৫ এ SARS মহামারীর সময় চিনে। সোশ্যাল ডিসটেন্সের চূড়ান্ত প্রান্তিক পর্যায় হচ্ছে লকডাউন । এটি একটি কঠিন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। চীন তখন লকডাউন করে বেজিং শহরের সাড়ে তিন হাজারেরও বেশী অঞ্চলকে আটকে দিয়েছিল, এভাবেই SARS ভাইরাস ক্ষান্ত হয়।
লকডাউনের উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বাড়ীর গতিবিধি বেঁধে দিয়ে কোয়ারেন্টাইনের ধাঁচে রোগের সংক্রমণকে ব্যক্তি নয় পরিবারগত ভাবে আটকে দেওয়া এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন করে বাইরে থেকে নতুন ভাবে রোগের সংক্রমণকে রোধ করা।
এবার কোভিড-১৯ মহামারীর সময় চীন আবারো লকডাউন করে এবং ২০০২-২০০৫ সালের পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আরো বড় ভাবে প্রায় ছয় কোটি দেশবাসীকে আবদ্ধ করে দেয়; হয়তো ২৩শে জানুয়ারী ২০২০ তে না করে আরো কিছু সপ্তাহ বা মাস আগে করলে এতটা বড় আকার নিত না চীনের মহামারী ।
চীনের ঊহান শহর ও তার আশপাশের সব শহরকে লকডাউন করে দেওয়া হয়। এই চূড়ান্ত প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ফল পায় চীন , আট সপ্তাহে সংক্রমণ শূন্যে নেমে আসে। ২০শে মার্চ আট সপ্তাহ শেষ হলেও রোগের মূল কেন্দ্র ঊহান শহরে তা চলবে প্রায় এগার সপ্তাহ অর্থাৎ ৭ই এপ্রিল পর্যন্ত । অন্য শহর গুলিতে পাঁচ দিনের মধ্যেই আইন শিথীল করে দেওয়া হয়। এই ধীরে ধীরে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন, তাই এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের রিপোর্ট ও বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দেবে এটাই কাম্য।
বহু দেশ যেমন আমেরিকা এবং ইদানিং কালে সিঙ্গাপুর সিদ্ধান্তহীনতার কারনে আজও ভুগছে। কিন্তু ভারত তা করেনি। ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন নেবে এবং সাড়া বিশ্বে ভারতের চিন্তা ভাবনায় প্রভাবিত হবে ।তাই কাল বিলম্ব না করে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের কথা শুনে বুঝে ২৫শে মার্চ ২০২০ মধ্যরাত থেকে দেশব্যপী লকডাউন লাঘু করেন । এই দেশব্যপী বৃহৎ লকডাউন করে ১৩৬ কোটি ভারতবাসীকে আবদ্ধ করার ঘটনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম। এবার চীন ঊহান শহর ও তার নিকটবর্তী শহর গুলি লকডাউন করে ছয় কোটি দেশবাসীকে আবদ্ধ করে মাত্র আট সপ্তাহে সাফল্য পায়। কাজেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর এই সময়োপযোগী ঘোষণার সুফল দেশ দেখবে সামনের দিনগুলিতে ।
এখন আমরা লক ডাউনের তৃতীয় সপ্তাহে বিরাজ করছি। লক ডাউন ২১ দিন পর শেষ হলেই সব শেষ হয়ে হাবে তা নয় । লকডাউন চলাকালীন খুঁজে খুঁজে সন্দেহভাজন রোগীদের বের করে তাদের কুয়ারেন্টাইনে পাঠানো, পরীক্ষা করে রোগ সঠিক ভাবে নির্ধারণ করা এবং অসুস্থদের চিকিৎসা দেওয়া বিশাল কর্মযজ্ঞ । হাঁসপাতালের অন্য রোগীদের সংক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে এটা করা খুবই জরুরী, কিন্তু কঠিন কাজ, আরো কঠিন হচ্ছে কর্মরত ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মী , সাফাই কর্মী ও নিরাপত্তা কর্মী সবার স্বাস্থ্য নিরাপদ রাখা, অন্তত ব্যয় বহুল ও পরিকল্পিত ব্যবস্থা বাঞ্চনীয়। এটা করতে না পারলে স্বাস্থ্যকর্মীরা যুদ্ধ ক্ষেত্রেই প্রান দেবেন! গোটা বিশ্ব এমনকী ভারতেও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিতে গিয়ে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন, কাজেই যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের নিরাপত্তা সবথেকে বেশী প্রয়োজন। কাজেই ভবিষ্যত বাজেটে আরো গভীর মানবিকতার প্রয়োজন থাকে যেন! সমস্ত জনগনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা না থাকলে লকডাউন সাফল্য আনবে না। একজন থেকে অন্যজনের দূরত্ব একমিটার থেকে বেশী রাখতে হবে; কোন জায়গায় জন সমাগম করে যাতে এই নিয়মভঙ্গ না হয় তা নজরে রাখা প্রতিটি নাগরিকের সামাজিক দায়িত্ববোধের পরিচয়। তাই লকডাউনের সাফল্য হলো জনগনের পরস্পরের মধ্যে জীবানুর সংক্রমনের সেতু ভেঙ্গে দেওয়া এবং নতুন করে জীবানুকে বাইরে থেকে ঢুকতে না দেওয়া। এর জন্য আদর্শ নাগরিকের কাজ হবে সরকারী নির্দেশ গুলি সঠিকভাবে পালন করা। বাকি রইল রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগীর চিকিৎসা, তা প্রশাসন সঠিক সহায়তা দেবেন এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সবাইকে সুরক্ষিত রাখবেন এই বিশ্বাস রইল সবার বুকে!
কিন্তু ২১ দিন লকডাউনের পর ত্রিপুরা কি অবস্থান নেবে সেটি ভাবনার বিষয়? SARS-2 ভাইরাস ত্রিপুরাতে বিশেষ লীলা দেখায়নি এখনো, সেই অর্থে আমাদের রাজ্য প্রাশসনিক সিদ্ধান্তে পৌছনো বিশেষ কঠিন হতে পারে। ভারতবর্ষে সংক্রমনের ধারা বলছে চলতি মাসের শেষে সংক্রমন চরম মাত্রা পেতে পারে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়বে। চিকিৎসা সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা হবে আকাশ ছোয়া। স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা পোষাক, রোগ নির্ণয়ের কীট, ঔষধ, অন্তিম চিকিৎসার জন্য কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস যন্ত্র, ভেন্টিলেটর, ইত্যাদি সব কিছুর চাহিদা মতো যোগান আজকেই সেরে রাখতে হবে। হাতে অনেক সময় পেয়েছি। ভুল সিদ্বান্তে লকডাউন যেন বৃথা না যায়! আমার দৃড় বিশ্বাস ত্রিপুরা প্রশাসন নিচের সিদ্বান্ত গুলি নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা করে চলেছেন!
১) ২১ দিন লকডাউনের অন্তত আরো সাতদিন বাড়াতে হবে। মোট ২৮ দিন যদি লকডাউন না হয় তাহলে সঠিক ফল পাওয়া যাবেনা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ধারায় ভাইরাসের অন্তঃত দুটো ইনকুবেশন পিরিয়ড (সক্রিয় জীবন চক্র) দেখে সংক্রমনের মাত্রা কম এই সিদ্বান্ত নেওয়া উচিৎ। এখানে মনে রাখতে হবে SARS-2 ভাইরাসের ইনকুবেশন পিরিয়ড ১৪ দিন।
২) আগামী দিন গুলিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে সমস্ত ত্রিপুরাবাসী ঘরের বাইরে নাক মুখ ঢাকা মাস্ক ব্যবহার করবেন। এটি চলবে যতদিন না ভারতে সংক্রমনের হার শূন্যে পৌছাচ্ছে।
৩) প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে কেবিনেট থেকে আইন পাস করাতে হবে, ঠিক যেমন হেলমেট নিয়ে কড়াকড়ি করা হয় মাথার চোট আঘাত প্রতিরোধ করার জন্য।
৪) বাজার গুলিতে সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রাখতে, সোশ্যাল ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি লোকাল ক্লাব গুলিকে দায়িত্ব দিতে হবে। এই নজরদারী ভারতে কোভিড-১৯ এর সংক্রমন শূন্যে আসা পর্যন্ত চালু রাখতে হবে।
৫) বিমানবন্দর ও রেলষ্টেশনে করোনা সনাক্তকরন প্রক্রিয়া চালু থাকবে। পাশাপাশি আন্তরাজ্য বাসযাত্রীদের জন্য চোরাইবাড়ীতেও করোনা সনাক্তকরন চালু করতে হবে। এই ব্যবস্থা চলবে ভারতে সংক্রমন শূন্যে আসা পর্যন্ত।
৬) বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমানা এখন বন্ধ থাকবে, যতদিন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশে সংক্রমন শূন্য ঘোষনা করছে।
৭) প্রথম দফায় ইউনিভার্সিটি ও কলেজ গুলি খুলবে। তারপর কয়েকদিন পর স্কুল গুলি চালু হবে। এতে শিশুদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত হবে।
আশা করা যায়, এভাবেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সময়োচিত দ্রুত লকডাউনের সুফল সামনের দিনগুলি ত্রিপুরাবাসী তথা ভারতবাসীকে কোভিড-১৯ থেকে মুক্তির দিশা দেখাবে। এছাড়া হাইড্রোক্সি ক্লোরকুইন, বিসিজি টিকাকরন, যক্ষা রোগের পূর্ব প্রভাব, করোনার অপছন্দের ভ্যাপসা আবহাওয়া, ভারতীয়দের রোগ জীবানুর প্রতি সহজাত নিরাপত্তা, ইত্যাদি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কোভিড-১৯ থেকে চিরতরে মুক্তি এনে দেবে। এই আশা নিয়েই তাকিয়ে আছি সামনের সুন্দর মায়াবী ভোরের দিকে। কিন্তু ততদিন ব্যক্তিগত ভাবে নাক-মুখ ঢাকা মাস্ক ও নিজেদের মধ্যে এক মিটারের বেশী দুরত্ব রেখে চলা একান্ত প্রয়োজন ।