এমন অভাবিত লকডাউন সম্ভবত আগরতলা দেখেনি কখনো, দেখেনি এমন কঠোর পুলিশী তৎপরতা
প্রদীপ চক্রবর্তী
এমন অভাবিত লকডাউন সম্ভবত আগরতলা দেখেনি কখনো। দেখেনি এমন কঠোর পুলিশী তৎপরতা। রাস্তাঘাট প্রায় শুনশান। কেউ নেই। মাঝেমধ্যে যে জরুরি প্রয়োজনে চলাচল ছিল তাও স্তব্ধ। এমন অবস্থা মেডিসিন ষ্টোরগুলিও ঝাঁপ লাগানো।অথচ এর প্রয়োজন ছিল আগেই। আগে এমন না হওয়ার জন্য জনসাধারণ এর একটি বৃহৎ অংশ যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাব।
রাজ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রোগী সনাক্ত হওয়ার পর এমন অভাবিত লকডাউন শুরু হয়েছে গতকাল রাত থেকেই। ধলেশ্বর বাজারতো বটেই এমনকি খোদ মহারাজগঞ্জ বাজার প্রায় শুনশান। সবার অবস্থা এমন যাক সবকিছু তবুও বাঁচি। কিন্তু এমন তো আগে ছিল না। আগে থাকলে তো হয়তো বা রাজ্য করোনা সংক্রমন থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হত। যদিও তথ্য ব্যবস্থাপনা বা ইতিহাস বলে মহামারী হলে, কোন এলাকা বাদ যায় না। মহামারীর ছোবল ভয়াবহ থাকে। মূহূর্তে গ্রাস করে নেয় একের পর এক পাড়া, গ্রাম, শহর ও জনপদ।
প্রশ্ন হচ্ছে যে মহিলা সংক্রামিত হয়েছেন তিনি তো ১৯ শে মার্চে রাজ্যে আসেন। ছিলেন গুয়াহাটি, এলেন খয়েরপুর, গেলেন নিজের বাড়ী গকুলনগরে। ওখানে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করালেন, গেলেন উদয়পুর হাসপাতালে, এলেন আইএল এসে। এরা বেগতিক দেখে পাঠিয়ে দিলেন এজিএমসিতে। ওখানে ভর্তি করানো হল মেডিসিন ওয়ার্ডে। ভয়ংকর ঘটনা। তাহলে ওই ভদ্রমহিলা তো অনেককেই সংক্রামিত করেছেন অজান্তেই। রেলের কোচে যারা ছিলেন সম্ভবত তাঁরাও সংক্রামিত হয়েছেন। এই যে দীর্ঘায়িত ব্যাপার তা তো উদ্বেগজনক। এদের সন্ধান চলছে বলে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এবিষয়টি তদারকী করছেন। সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের খোঁজ অব্যাহত। ধারনা করা হচ্ছে আগামী কদিনের মধ্যে সংস্পর্শে আসা লোকদের কোয়েরাইন্টাইনে পাঠানো হবে।
অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে গত কদিনে লকডাউন ছিল ঠিকই কিন্তু তা যথাযথ ভাবে পালিত হয়নি। কিছু কিছু ব্যবসায়ী যেমন আখের গোছানোর জন্য আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মুনাফা লুটেছেন। ঔষুধ ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ মাক্স আর সেনিটাইজার বিক্রির নামে যাচ্ছে ইচ্ছে তাই করেছেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়াই হয়নি। অথচ সবাই সব জানে, কাজের কাজ হয়নি। সন্ধ্যায় এডভাইজার চৌমুহনী এলাকায় ঘুরঘুর করতে দেখা যায়।
কিন্তু এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে আশা কর্মীদের ভূমিকা। এদের কাজই হল বাড়ী বাড়ী গিয়ে প্রতিটি লোকজনের খবরাখবর নেওয়া। এরা যেমন তা যথাযথ ভাবে নেয়নি, তেমনি তদারকীও সেভাবে হয়নি। হলে তো গকুলনগরের পার্লারের মালকিন কবেই ধরা পড়তেন।
এখন প্রয়োজন আইসিএম আদরের গাইড লাইন অনুযায়ী প্রতিটি লোকের বিশেষ করে বয়স্কদের সোয়াব পরীক্ষা করা। যদিও বাধ্যবাধকতা করে আইন প্রয়োগ হয়নি এখনও। হয়তো বা হবে আগামী কদিনের মধ্যেই।
তবে গকুলনগর কিন্তু ত্রিপুরাকে ফ্যাসাদে ফেলে দিয়েছে।