আমরা দুর্গত মানুষদের সাহায্য করতে Citizens Collective Against COVID-19 গড়েছি

পুরুষোত্তম রায় বর্মন

দেশজুড়ে এক অভূতপূর্ব অস্বাভাবিক পরিস্থিতি । করোনা হামলা ও লকডাউন জনিত কারণে। দেশের সাধারণ মানুষ এক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। লকডাউন পরিস্থিতি অবশ্যই এড়ানো যেত। ১৩০ কোটি মানুষকে নাকাবন্দি করে সারা দেশকে অচল না করেও করোনাকে আটকে দেওয়া যেত। যদি কেন্দ্রীয় সরকার শিথিলতা পরিহার করে পরিস্থিতির ডাকে সময়োপযোগী সাড়া দিতেন । যদি জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক উড়ানে দেশে আশা বিমান যাত্রীদের আইসোলেশন রাখার ব্যবস্থা করা হতো। আন্তর্জাতিক উড়ান যদি ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয়/ তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাতিল করা হতো। করোনা ভাইরাস ভারতবর্ষে এসেছে বিদেশ থেকে আসা বিমান যাত্রীদের মাধ্যমে। দুই লক্ষের মত বিমানযাত্রী জানুয়ারি থেকে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ অব্দি এ দেশে এসেছেন। এদেরকে ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে রাখলে পরে কিন্তু আজকে ২১ দিনের লকডাউনের দুঃসহ যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে যেতে হতো না । জানুয়ারি মাসেই World Health Organisation করোনা জনিত পরিস্থিতিকে আপৎকালীন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরী পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছিন । জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, এমনকি মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ অব্দি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া হয়নি ।

আচমকা ঘুম ভেঙ্গে লকডাউন শক। লকডাউন কার্যকর করার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ নিদারুণ অসুবিধা সত্ত্বেও সহযোগিতা করছেন প্রশাসনের সাথে। কিন্তু প্রশাসন বিশেষত পুলিশ সাধারণ মানুষের সাথে হিংস্র ও অমানবিক আচরণ করছে। ব্রিটিশ আমলে পরাধীন দেশবাসীর সাথে পুলিশ ও মিলিটারির নির্মম, নির্দয় ও অমানবিক আচরণের দুঃসহ অভিজ্ঞতা আজ স্বাধীন দেশে প্রান্তে প্রান্তে রাজপথে পুনরায় আবির্ভূত হয়েছে।

পুলিশের মানবিক আইনি ভূমিকার এদিক ঐদিকের কিছু ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তে কিন্তু পুলিশের সার্বিক নির্দয়তা ও হিংস্রতা ধামাচাপা পড়ে না।

ঘরবন্দি কর্মহীন অন্নহীন কোটি কোটি দেশবাসীর পাশে সরকার নেই। যদিও মানুষের জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলোর ব্যবস্থা করা সরকারের সাংবিধানিক নৈতিক দায়িত্ব । স্বাভাবিক সময়ে এবং অবশ্যই অস্বাভাবিক সময়ে । অনুগ্রহ করা নয়, দয়া বা করুনা নয়। মানুষের জীবনের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণ করা রাষ্ট্রের অবশ্যপালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য । কেননা আমাদের দেশের অধিকাংশ নাগরিক সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে। এর জন্য নাগরিকরা দায়ী নয়। দায়ী আমাদের দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা, সম্পদের চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ, দেশজুড়ে অসাম্য ও বৈষম্যের ভয়াবহ প্রাবল্য। যখন রাষ্ট্র তার ব্যর্থতা আড়ালে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে মহামারীকে রোখার জন্য লকডাউন ছাড়া অন্য কোন রাস্তা দেখে না তখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব ঘরবন্দি প্রতিটি মানুষের অন্ন বস্ত্র ও স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা।

এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার গুলো সীমাহীন ব্যর্থতার বেআব্রু প্রদর্শনী খুলে রেখেছে দেশজুড়ে। রাষ্ট্র যখন ব্যর্থ , শুধুমাত্র ঘোষণায় অলিম্পিক মেডেল জয়ী, বাস্তবে ফাঁকা কলসির ঠন ঠন আওয়াজ, তখন দেশজুড়ে সাধারন মানুষরা এগিয়ে এসেছেন সহ নাগরিকদের সাহায্যে। পরিস্থিতির ফায়দা নেওয়ার জন্য একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ মওকা বুঝে কোপ মারছেন। তারাই সব নয়। তাদের সংখ্যা নগন্য। এসব ক্লীব কীটদের বিপরীতে রয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ যারা যেখানে যেভাবে সম্ভব পাশে দাঁড়াচ্ছেন অসহায়দের পাশে , প্রসারিত করছেন সাহায্যের লম্বা হাত । যে হাতে আছে আশ্বাসের বলিষ্ঠতা। বরাভয়। এরাই নায়ক । দেশের বিভিন্ন শহরে আছে অভিজাতদের Gated Colony গুলি, যেখানে অভিজাতরা থাকেন চারদিকের গরিবদের স্পর্শ ও ছোঁয়া থেকে শত দূরে প্রাচীর ঘেরা নিরাপত্তা বলয়ে, সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ শুধুমাত্র অভিজাতদের দৈনন্দিন কায়িক শ্রমের যোগান ছাড়া। করোনা হামলার মুখে Gated Colony গুলিতে একেবারে ডাবল তালা পড়ে গেছে। No entry । প্রাচীরের বাইরে কি হলো , কারা খেতে না পেয়ে মরল আর কারা করোনায় মরল তাতে কিছু যায় আসে না । আমরা ভালো থাকলেই হল। বাকিরা চুলায় যাক । স্বার্থমগ্নতার পূর্তি গন্ধময় জীবনে অভিজাতরা নিমজ্জিত । ব্যতিক্রম আছে । মুশকিল হল, ব্যতিক্রম নিয়মকে প্রমাণ করে।

এর বিপরীতে দরিদ্র ভারত, গরীব ভারত, পার্থিব সম্পদে দীন কিন্তু অন্তরের ঔদার্যৈ , সিংহ হৃদয়ের বিশালতায় অফুরান ভারত নিজের বিপদ ভুলে এসে দাঁড়িয়েছে অপর প্রতিবেশীর পাশে। সব সংকীর্ণতা, সব বিভেদ ভুলে, মানবতার ডাকে। মনুষ্যত্বের সৌরভে তাদের রিক্ত জীবনের সব মলিনতা, শারীরিক শ্রমজাত গায়ের কূটু গন্ধ চাপা পড়ে গেছে । ছাত্রযুবরা প্রবীনদের পাশে, অসুস্থদের পাশে, নিরন্নদের পাশে ছুটে এসেছে সাহায্যের ডালি নিয়ে। বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রগুলিতে এ ধরনের অসংখ্য খবর প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। খবরগুলি পড়লে আনন্দে চোখে জল এসে পড়ে অজান্তে।

আমাদের কয়েকটি অভিজ্ঞতার উল্লেখ করছি। একজন রিক্সা শ্রমিকের জীবন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছিলাম করেছিলাম ফেসবুক পোস্টে। অনেকেই ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন ।এর মধ্যে একজনের কথা উল্লেখ না করে পারছি না । তিনি একজন শিক্ষক, আজ থেকে চাকুরি নেই। ঘরে ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী । এসব উল্লেখ করে ঐ মহান মানুষটি লিখেছেন, আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন ঐ প্রবীণ রিকশাচালকের যাবতীয় দায়িত্ব যেকোনো ভাবে পালন করবই । এই সুযোগটা আমাকে করে দিন। নিজের অনিশ্চয়তাকে তুড়ি মেরে আরেকজনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার ঐকান্তিক অঙ্গীকার। এর জন্যই মানুষ জীবশ্রেষ্ঠ । অমৃত পুত্র । আমি ঐ শিক্ষক মশায়ের মন্তব্য পাঠ করে শ্রদ্ধায় নীরব হয়ে যাই । এই নীরবতা শতসহস্ত্র জলপ্রপাতের কলধ্বনিকে হারিয়ে মানব বন্দনায় মুখর হয়ে ওঠে।

আমরা দুর্গত মানুষদের সাহায্য Citizens Collective Against COVID-19 গড়েছি। অনেকে স্বেচ্ছায় অর্থ সাহায্য করেছেন । এমনকি যারা নিজেরাই আর্থিকভাবে টলোমলো অবস্থায় আছেন তারা সাধ্যের বাইরে গিয়ে সাহায্য পাঠাচ্ছেন। এসব অসাধারণ দানের উপর ভরসা করেই সাহস সঞ্চয় করে আমরা ত্রাণে নেমেছি । গতকাল ও আজ আমি, মৃন্ময়, কৌশিক লেইক চৌমুহনী বাজারে যাই। কুড়ি বস্তা চাল কিনলাম প্রাথমিকভাবে দুজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে । এক চাল ব্যবসায়ী মজুদ থাকা সত্বেও একসাথে ১০ বস্তা দিতে রাজী হচ্ছিল না। যখন বললাম, কেন দেবেন না , আমরা তো মজুতদারী করতে নিচ্ছি না, উচিত দামেই দিতে হবে। তারপর কথা না বাড়িয়ে ১০ বস্তা চাল দেয় । আলু কিনতে যাই মানিকের কাছে। মানিক ৩০-৩৫ বছরের যুবক। আমাকে কাকা বলে ডাকে মানিক। হাসিমুখে আড়তদার থেকে যে মূল্যে কিনেছিল সেই মূল্যে আমাদেরকে পাঁচ বস্তা আলু দিল । আমি কৌশিককে বলছিলাম, সোয়াবিন কেনার জন্য। কৌশিক জানাল, ২৫ হাজার টাকা আলু চালে লেগে গেছে। টাকা আনতে হবে বাড়ি থেকে। মানিক আমাদের কথা শুনে ক্যাশ বাক্স থেকে কুড়ি হাজার টাকার বান্ডিল জোর করে হাতে দিয়ে দিল। এখন কাজে লাগান , পরে দেখা যাবে। আমাদের মানিক তো সত্যিই এক রত্ন।

ব্যাঙ্গালোরে ত্রিপুরার আদ্রিজা মা, ভাই ও বোনদের নিয়ে আটকে পড়েছেন। এখন অনেকেই পড়েছেন। আদ্রিজারা বড় অসহায় বোধ করছে। যোগাযোগ করেছে মৃন্ময়ের সাথে। মৃন্ময়কে জানাল, চাকুরী থেকে করোনার কারণে মালিক ছাঁটাই করেছে । হাতে অর্থ নেই। কি করবে সবাইকে নিয়ে ভেবে অকূল। মৃন্ময় চক্রবর্তী দূরভাষে যোগাযোগ করলো, ব্যাঙ্গালুরুর বাসিন্দা আইনজীবী ও সমাজকর্মী ক্লিফটনের সাথে। রাত্রি আটটায় ক্লিফটনের সব জানলেন, শুনলেন, অদ্রিজাদের ঠিকানা সংগ্রহ করলেন । দুঘণ্টার মধ্যে ৪০ কিলোমিটার বাইকে অতিক্রম করে রাত্রি দশটায় পৌঁছে যান অদ্রিজাদের ঠিকানায়। হাতে তুলে দিলেন নগদ দুই হাজার টাকা ও খাদ্য সামগ্রী । বললেন একদম চিন্তা করবেন না। আমরা আছি। রাত্রি সাড়ে দশটায় একথা মৃন্ময়কে জানিয়ে অদ্রিজা কৃতজ্ঞতায় ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ত্রিপুরার কিছু লোক আগ্রার কাছে হোটেলে আটকে পড়েছে। অর্থ নেই। হোটেল মালিক হোটেল ছাড়তে বলছে। তাদের একজন আমাদের আইনজীবী রঘুনাথ মুখার্জিকে বিপদের কথা জানায় । রঘুনাথ আগ্রায় বসবাসরত তার এক আত্মীয়কে টেলিফোনে জানায় সবকিছু । আত্মীয় রাত্রিতেই হোটেলে পৌঁছে বিপন্ন মানুষদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। আমার জানা কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করলাম । ঐ ধরনের হাজার হাজার ঘটনা লকডাউনের অমাবস্যার মধ্যে রুপোলি মুক্তার মনিহার বুনছে দেশজুড়ে।

এবার সান্ধ্যনীড়ের এর কথা বলি। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সম্পাদক গৌতম রায় বর্মন যাবতীয় যা যা ব্যবস্থা করণীয় তা অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাহায্যে অনেকটাই করে উঠতে পেরেছিলেন । তারপরেও যেভাবে মানুষ সান্ধ্যনীড়ের প্রবীন ও নবীনদের খোঁজখবর নিয়েছেন, তাদের জন্য উৎকণ্ঠা ব্যক্ত করেছেন তাতে আমরা সত্যিই আপ্লুত। চাল, ডাল, বিস্কুট ইত্যাদি কিনে পাঠিয়ে দিয়েছে । আজ সকালে এক ভদ্রলোক ফোন করলেন। সান্ধ্যনীড়ের আবাসিকরা কেমন আছেন । তিনি বললেন আমি ১০০ কিলো চাল , আটা , আলু ইত্যাদি দিতে চাই । তাকে জানালাম চাল আছে । তিনি উত্তরে বললেন, আমি দিতে চাই। আমরা বললাম আপনার অনুমতি নিয়ে নিচ্ছি। সান্ধ্যনীড়ের আশেপাশে অনেক দুঃস্থ মানুষ আছেন। তাদের সুখ-দুঃখে আমরা জড়িয়ে থাকি । আপনি যদি অনুমতি দেন , আপনার দেওয়া সাহায্য থেকে ওইসব মানুষদের কিছুটা দিতে চাই। তিনি এককথায় রাজি। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে কথামতো যাবতীয় কিছু পাঠিয়ে দিলেন।

সান্ধ্যনীড়ে কর্মকর্তাদের যাওয়া-আসার সমস্যা হচ্ছিল। খুব ভোরে উঠে যেতে হত। জেলা জর্জ ও জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সচিব সব্যসাচী দত্ত পুরকায়স্থকে একথা জানাতেই তিনি ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে চারটি movement pass এর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

বিপদ মানুষকে চিনতে সাহায্য করে । পরিস্থিতি মানুষের মহিমাকে তুলে ধরে। আপাত কঠোর মানুষের গভীরে লুকিয়ে রাখা অত্যন্ত সংবেদনশীল মন প্রকাশ পায় সবাইকে অবাক করে। যে বন্ধুকে জানতাম কৃপণ বলে সেই বন্ধু ফোন করে বলে তোদের ত্রাণ তহবিলে টাকা ১৫,০০০ টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। প্রয়োজন হলে বলবি, আমার জমানো টাকাগুলো আছে কি করতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অকুতোভয় সাংবাদিক ত্রাণ তহবিলে ২০,০০০ টাকা পাঠিয়ে জানায়, আমার কষ্টের ভার লাঘব করলাম।

সকালে মঞ্জু ফোন করলো । প্রথমে দাদাকে কিছু শাসন। সাবধানে চলাফেরা করার জন্য। তারপর বলল আমরা চেক দিতে চাই। আমি জানালাম চেকে নয়, money transfer কর। তখন পরমার্থ বলল দাদা একজনকে পাঠিয়ে দাও। কৌশিক চলে গেল। ওরা দুজনে ১০,০০০/- টাকা দিয়ে বলল পরে আরো দেব।

গান্ধীগ্রাম এলাকার রেশন শপ ডিলাররা স্বঃত প্রণোদিত হয়ে নিজেরা চাঁদা তুলে ১০ বস্তা চাল, আটা , চিনি সান্ধ্যনীড়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন । তাদের বক্তব্য ৬০/ ৭০ জন আবাসিকের জন্য চাল তো প্রয়োজন। এততো মজুত রাখা যায়না। তাই আমরা পাঠালাম । এক বালক তার জন্মদিনে খরচ না করে বাবাকে বলেছে, সান্ধ্যনীড়ের জন্য খরচ কর। বাবা তাই সান্ধ্যনীড়ের জন্য পাঁচ বস্তা চাল-ডাল কিনে পাঠিয়েছেন।

দুই বোন বিদেশ যাত্রার জন্য গচ্ছিত টাকার বড় অংশ দিতে রাজি বলে জানায় । আমরা জানিয়েছি এখন দেবে না। যাহাতে এসেছে তা খরচ করি তারপর তোমাদের জানাব। আজ সকালে Citizens Collective Against COVID-19 এর উদ্যোগে ত্রাণ বিলির কাজ শুরু হয়েছে। ১২০ জনের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মাথাপিছু ৫ কিলো চাল, দু কিলো আলু, ৭৫০ গ্রাম মসুর ডাল/ সয়াবিন ইত্যাদি। ত্রাণ বন্টনের কাজে যোগ দিতে পুলিশের সাথে রাস্তায় গোল্লাছুট খেলে ছুটে এসেছে বিক্রম ও রাকেশরা। ত্রাণ বন্টনে উৎসাহে হাত লাগিয়েছেন অনেকেই। এ আরেক সংক্রামক রোগ। ভালো কাজ দেখলে অনেকেই সংক্রমিত হয়ে পড়েন। নেমে পড়েন কাছে। সকাল থেকে মৃন্ময়কে খুঁচিয়ে সান্ধ্যনীড়ের সম্পাদক গৌতম আলুর বস্তা চালের বস্তা খুলে প্যাকেট তৈরিতে সবচাইতে বেশি উৎসাহী। ধৃতির উৎসাহ দেখার মত। স্টাইপেন্ডের টাকা তুলে দিল কৌশিকের হাতে ত্রাণ তহবিলের জন্য। একইভাবে গৌতম মৃন্ময়য়ের হাতে তুলে দিল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্বেগজনক খবর আসছে। অনেক জায়গাতেই অনাহার-অর্ধাহারের বিকট হাসি। কৌশিক দাস জানালো তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনই ত্রাণের ব্যবস্থা করা জরুরি। খোয়াইয়ের আসিস মুখার্জির কাছ থেকেও একই রকম উদ্বেগজনক খবর। আগরতলা থেকে সব জায়গায় পৌঁছা সম্ভব নয়। তাই স্থানীয়ভাবেই ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশাসনের দরজায় কড়া নাড়তে হবে, জোরে নাড়তে হবে। আমাদের সামনে কঠিন পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় আমাদের সবাইকে পাস করতে হবে । তার জন্য সবার কাছে একান্ত আবেদন সাহায্যের হাত প্রসারিত করুন। সবার সাহায্যে আমাদের এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই দুর্যোগকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের অসাধারণ ভূমিকায় দারুণভাবে উৎসাহিত হই আমি। আমি কেন আমরা সবাই। উৎসাহের আবেগে বয়স কমে যায় কুড়ি বছর। আর প্রচারের আলোতে ধাকা তথাকথিত দের বিরুদ্ধে ক্ষোভটা ২০ বছরের যুবকের দুর্বিনীত স্পর্ধায় যেন ফেটে পড়তে চায়। তখন নিজেকে বলি ধীরে, ধীরে। কাউন্ট ডাউন শুরু করি রাগটা প্রশমিত করতে। ভিতরের হিসেবি মন এবার বলতে শুরু করে এদের উপেক্ষা কর, সাধারণ মানুষের কাছে যাও। নতুন করে পাঠ নাও ধৈর্যের ও মানবতার।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
মন্তব্যের তারিখ (Posted On)মন্তব্যকারির নাম (Name)মন্তব্য (Comment)
01.04.2020Pradip ChakrabortyBeautiful write-up.it s touchy.Very good inititive for the welfare of under previlage and response is also unimaginable. Thanking you. Pradip Chakraborty 9366121201