মারনব্যাধি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার হচ্ছে দ্রুত, গোটা বিশ্ব এখন লকডাউনে, আপনিও ঘরে থাকুন
প্রদীপ চক্রবর্তী
বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করেই প্রায় গোটা বিশ্বের মানব সভ্যতাকে ডাইনোসরের মত গিলে খেতে শুরু করেছে ভয়ংকর মারনব্যাধি করোনা ভাইরাস। ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার হচ্ছে দ্রুত। গোটা বিশ্ব এখন বলা চলে লকডাউনে। সবাই ঘরে ঘরে বন্দি। সংক্রমণ বিস্তার রোধে বিকল্প কিছু নেই আপাতত চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের কাছে। গবেষনা তো চলছেই প্রায় সর্বত্রই।
কিন্তু প্রশ্ন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উৎস কোথায়? বা কোন দেশের কোন অঞ্চলে? তথ্য তল্লাসে দেখা গেছে এই মারন ব্যাধির ভাইরাস সংক্রমণের উৎস চীনের উহান প্রদেশে। বিবিসি তার তথ্য সন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছে উহান প্রদেশের পশুর মধ্যে থেকেই এই ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। এই বাজারটি অত্যন্ত নোংরা এবং অপরিষ্কার। সেখান থেকেই এর সূত্রপাত। আরো বলা হয়েছে ওয়াইল্ড এনিমেল থেকেই এর সূত্রপাত ও বিস্তার। গত ডিসেম্বরে এর সূত্রপাত হয় এবং মূহুর্তের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে।পরে তা অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। উহান প্রদেশের আশপাশের এলাকায় মারনব্যাধি বিস্তৃত হয়। প্রায় তিন হাজারের বেশি প্রান ছিনিয়ে নিয়েছে করোনা ভাইরাস।
কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চীন এমন ব্যবস্থা গ্রহন করেছে যার ফলে এর বিস্তার বেজিং বা সাংহাইয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
যে উহান প্রদেশে মারনব্যাধির বিস্তার সেই প্রদেশ এখন প্রায় স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। শনিবার প্রচুর লোকজন ফিরে এসেছে। রেল চলতে শুরু করেছে। আগামী ৭ই এপ্রিল থেকে বিমান চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে।খবর বিবিসির।
যদিও এই মারন ব্যাধির ভাইরাস সংক্রমণ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে বা পড়ছে। আমাদের দেশেও করোনা থাবা বসিয়েছে। গোটা ভারত লকডাউনে এখন। মৃত্যু ও হয়েছে কুড়ি জনের। সংক্রামিত হয়েছে অসংখ্য জন। সংক্রমণের বিস্তার রোধে যুদ্ধকালীন তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যে সরকার ও কাজ করছে সর্বাত্মক ভাবে।
এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে ১৯১৮ র স্পানিশ ফ্লু মহামারীর কথা। এই স্পানিশ ফ্লুতে ভারতে প্রায় আঠারো মিলিয়নের মৃত্যু হয়েছিল। সেই স্পানিশ ফ্লু কি ভাবে এসেছিল ভারতে?
তৎকালীন স্বাস্থ্য পরিদর্শক ছিলেন জে এস টারনার। তিনি উল্লেখ করেছেন যে স্পানিশ ফ্লু-র ভাইরাস "চোরের মত জাহাজের ডকে লুকিয়েছিল। ওই জাহাজটি একটি ডকে দাঁড়ানো ছিল। হঠাৎ করেই ফ্লু ভাইরাস রাতের অন্ধকারে এসে যায় মূল ভূখণ্ডে। শুরু হয় মহামারী। তখন তো প্রতিষেধকও ছিল না। মুম্বাই থেকে উপকূল রেখা ধরে দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।
স্পানিশ ফ্লু-ও ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী ভারতের প্রচুর প্রান ছিনিয়ে নিয়েছিল। তখন প্রতিষেধক ছিল না। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধেও কোন প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত নেই। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এখানেই। তবে ভাইরোলজিষ্টরা মনে করছেন বা তাদের বিশ্বাস কিছু দিনের মধ্যেই ভারত ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হবে। এ প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে ভারতে অন্তত ৮৫ জন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এতো আশার আলো।