নভেম্বরের আয়োজন ক্যুইজ্যে বিনোদন
অশেষ সেনগুপ্ত
জ্ঞানের মূল্যায়ন বা পরীক্ষা অর্থে 'ক্যুইজ' শব্দের আবির্ভাব ডাবলিন থিয়েটার হয়ে ভারতবর্ষে এসে পৌঁছায় ষাটের দশকে। যার আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে তিলোত্তমা শহর কলকাতায়। ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতার রূপ নিয়ে তা আকাশবাণী ও টেলিভিশনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। শুধুমাত্র কিছু প্রশ্ন সমন্বিত প্রতিযোগিতা হিসেবে নয়, বর্তমানে এটি হয়ে উঠেছে জানা-অজানা বহু প্রশ্নের ও কৌতূহলের উত্তর খোঁজার একটি আকর্ষনীয় মাধ্যম। তারুণ্যকে জ্ঞান অন্বেষনে উজ্জীবিত করার একটি অন্যতম পন্থা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগেও প্রকৃত মেধার সন্ধান এবং তাকে সর্বাঙ্গীন ভাবে বিকশিত করার ক্ষেত্রে কুইজ প্রতিযোগিতার ভূমিকা অপরিহার্য। বিজ্ঞান থেকে সাহিত্য, ইতিহাস থেকে সংস্কৃতি, বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট বা ভ্রমণ সবেতেই যেন আমরা অজানাকে জানতে চাই, নতুন কিছু শিখতে চাই। নিজেদের সাধারন জ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করার স্পৃহা থেকেই হয়তো ক্যুইজ এর প্রতি আমাদের আকর্ষন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উত্তরপূর্ব ভারতের এই ছোট্ট পার্বতী রাজ্য ত্রিপুরার বুকে প্রায় দুদশক ধরে মেগা ক্যুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে ত্রিপুরা ইনফো নিউজ ওয়েবসাইট। দুই-তৃতীয়াংশ আন্তর্জাতিক সীমানা বেষ্টিত রাজ্যে এই ধরনের নিরলস প্রয়াস সত্যিই প্রাণিত করে। প্রযুক্তিগত স্থূলতা বা দুর্বল ভৌগলিক অবস্থান,সব ধরনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে ত্রিপুরাকে বিস্তৃত ভাবে তুলে ধরেছে এই ওয়েবসাইট। তাদের সফল প্রচেষ্টার অন্যতম হলো এই মেগা ক্যুইজ। যারা এই ক্যুইজ এর সূচনা লগ্নে প্রতিযোগী ছিল আজ তারা হয়তো বিভিন্ন স্তরে উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করে কর্মজীবনে ব্যস্ত। কিংবা উচ্চশিক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়িয়ে। তবু দর্শক আসনে বসে মেগা ক্যুইজ এর সেই টান টান উত্তেজনা অনুভব করতে ছুটে আসেন অনেকেই। প্রতিযোগিতার এক একটি প্রশ্ন বানে যেন ফিরে আসে স্কুল জীবনের সেই প্রানবন্ত শিহরণ।
নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি মনস্ক করে তুলতে ইনফোর এই আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম। আর এখানেই হয়তো উদ্যোক্তাদের স্বার্থকতা। যার কারনে দীর্ঘ ১৯ বছর পরেও এই মেধার অন্বেষণ সাফল্যের সঙ্গে রাজধানীর বুকে এগিয়ে চলেছে।
ত্রিপুরা ইনফোর ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে এই মেগা ক্যুইজ আজ অন্য মাত্রা পেয়েছে। বর্তমানে নাগরিক সমাজের বিভিন্ন পেশার গুণীজনদের সান্নিধ্যে রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে যার ব্যাপ্তি সুবিস্তৃত হয়েছে রাজ্যের বাইরেও। প্রতিবছর হায়দ্রাবাদ থেকে কুইজ মাস্টার হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে আসছেন খ্যাতনামা ক্যুইজ মাস্টার ভরত জৈন আর সঙ্গে থাকছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য ও নন্দু পানিক্করের মতো রাজ্যের ক্যুইজ মাস্টাররা। এককথায় ত্রিপুরা ইনফো আয়োজিত মেগা ক্যুইজ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা এমনকী পাড়ার পুজোর অনুষ্ঠানেও ক্যুইজ এর গুরুতকে পৌঁছে দিতে পেরেছে।
এইবছর আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আগামী ১০ই নভেম্বর, রবিবার ঊনবিংশতম অল ত্রিপুরা ওপেন মেগা ক্যুইজ অনুষ্ঠিত হবে। ত্রিপুরা ইনফোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.tripurainfo.com এর মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত করতে হবে ৯ই নভেম্বর শনিবার সন্ধ্যে ৬টা এর মধ্যে।
মনন ও চিন্তনকে ঋদ্ধ করতে এই মেগা ক্যুইজ এর জুড়ি মেলা ভার। এই আয়োজনে কেউবা প্রতিযোগীর আসনে আবার কেউ দর্শক আসনে বসেই হয়ে উঠেন এর অংশীদার। আট থেকে আশি সবার কাছেই মেগা ক্যুইজ এখন বার্ষিক মেধা ও মননের আরেক উৎসব। এই আয়োজনে অংশগ্রহন করে নতুন প্রজন্ম যেমন উৎসাহিত হবে তেমনি বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরাও উপকৃত হবে বলে অভিমত শিক্ষা- অনুরাগী মহলের।