ত্রিপুরার ঐতিহাসিক বন্যা ও ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা !
জয়ন্ত দেবনাথ
প্রায় প্রতিবছরই ত্রিপুরার বিভিন্ন অংশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়,শিলাবৃষ্টি, ভূমিক্ষয় এবং ভূমিধ্বস হয়ে থাকে। দেশের সবচেয়ে বেশী বন্যা ও ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল গুলোর মধ্যে ত্রিপুরা হল একটি। ভারতের ভুকম্প প্রবণ অঞ্চল- নকশার জোন ফাইভ এ ত্রিপুরা অবস্থিত। ছোট ও মাঝারি মাপের কয়েকটি বন্যা ও ভূমিকম্প ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় হয়ে গেছে। কিন্তু রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ঘটনাটি ঘটেছে চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৯ থেকে ২২। চলতি বন্যা জনিত এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূলে আঘাত হেনেছে। আলোচ্য প্রতিবেদনটিতে রাজ্যে চলতি বন্যাজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় সরকারী ও বেসরকারী স্তরে সাধারণ মানুষ ও সরকারী প্রশাসন কর্মকর্তাদের কৃত কর্তব্য, কোথায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জরুরী ভিত্তিতে পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে, কোথায় কোথায় পদক্ষেপ গ্রহনে বিলম্ব বা ভুল হয়েছে তার একটি সম্যক ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়, খরা বন্যা, ভূমিকম্প বা অন্যান্য যেকোন আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অতীত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে লেখা এবারের বন্যাজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আমাদের কি করতে হবে আলোচ্য প্রতিবেদনটিতে এই বিষয়টিও সংক্ষিপ্ত আকারে তোলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমরা সবাই জানি গত ১৯ আগস্ট থেকে লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে এখনো বন্যার জলে ভাসছে ত্রিপুরা। ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে একাধিক এলাকা। ১৯ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারী তথ্য অনুযায়ী লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে অসহায় হয়ে পড়ে ৫৫৮টি ত্রান শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। রাজ্যের আট জেলার কম করেও ১৭ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঊনকোটি, দক্ষিণ ত্রিপুরা, খোয়াই, ও গোমতী জেলা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কম করেও পনের হাজার কোটি ছাড়াবে বলে বলা হচ্ছে।
অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে আপদকালীন বা বিপর্যয় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বহু ক্ষেত্রেই পূর্ব প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার অভাবে সরকারী প্রশাসন যন্ত্র এবং বিপর্যয় প্রতিরোধ গোষ্ঠীর লোকজন সহ সাধারণ মানুষকে হিমসিম খেতে হয়। অথচ একটু আগাম সতর্কতা ও পরিকল্পনা নিয়ে রাখলেই বহুক্ষেত্রে প্রাকৃতিক বিপর্যয় পরবর্তী পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজটি অনেকটাই দ্রুততার সাথে করা যায়। রোগ মহামারী মোকাবেলাও সহজ হয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা গেছে সর্বোচ্চ সরকারী প্রশাসনের তরফে বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও সর্ব সাধারণের তরফে এই আগাম প্রস্তুতি এস ডি এম,বি ডি ও-দের তরফে এবারের বন্যার আগেও সেভাবে নেওয়া হয়নি। রাজধানীর সর্বোচ্চ প্রশাসন থেকে এডভাইজারি পাঠানো হলেও বহু ক্ষেত্রে বি ডি ও এবং এস ডি এম অফিস গুলি ক্ষেত্র পর্যায়ে কাজ শুরু করতে বিলম্ব করেছেন।
এবারের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার সময় আরও দেখা গেছে বহু ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও ত্রিপুরা ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির তরফে বিপদগ্রস্থদের সাহায্যের জন্য যে টেলিফোন নম্বর প্রদান করা হয়েছিল তা যথাযথ ভাবে কাজ করেনি। এমনটাও দেখা গেছে বড় ধরনের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, আমাদের সবার চোখের সামনে নদী নালার জল বাড়ছে, কিন্তু কাকে জানাবো বা কে কি ভাবে এই বন্যা পরিস্থিতিতে আমাদের সাহায্য করতে পারবেন সঠিক সময়ে এই সঠিক সরকারী তথ্য বা আধিকারিকবৃন্দের নাম / টেলিফোন নম্বর ইত্যাদি সাধারণ্যে প্রচার করা হয়নি। যখন প্রচার করা হয়েছে তাও ভুল টেলিফোন নম্বর প্রচার করা হয়েছে।
তাই আলোচ্য প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা যেকোন আপদ কালীন পরিস্থিতিতে কোথায় কিভাবে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, কোন জেলা বা মহকুমায় বিপর্যয় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোন সাহায্য বা সহায়তার জন্য কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে নাম, টেলিফোন নম্বর সহ তার বিস্তারিত উল্লেখ করে সরকারী ওয়েবসাইটে বা বেসরকারী ওয়েবসাইটে তার একটি তালিকা সব সময়ের জন্য যেন ভবিষ্যতের জন্য আপডেট রাখা হয় তার অনুরোধ রাখা হলো । বিপর্যয় মোকাবেলা সংক্রান্ত এই টেলিফোন ডাইরেক্টরীটি সংশ্লিষ্ট সকলের হাতের কাছে থাকলে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
রাজ্য সরকারের অনুরোধে, কেন্দ্রীয় সরকার গোমতি এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় আটকে পড়া লোকদের এয়ারলিফ্ট ও খাদ্য সামগ্রীকে অমরপুরে এয়ারড্রপ করার জন্য ভারতীয় বায়ু সেনার ৪টি এম আই ১৭ হেলিকপ্টার সরবরাহ করেছে।এন ডি আর এফ, এস ডি আর এফ-এর সাথে টি এস আর, বি এস এফ, আসাম রাইফেলস, সিভিল কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য।
এবারের ত্রিপুরা জুড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমি ধ্বসের একটি অন্যতম কারন হলো অতিরিক্ত ও রেকর্ড পরিমানে বৃষ্টি। জানাগেছে, এর আগে ১৯৯৩ সালের ২১শে অগাস্ট ত্রিপুরার দক্ষিন জেলায় একদিনে ২৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড ছিল। আর এবছর ২০শে আগস্ট একদিনে দক্ষিন জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৭৫.৮ মিলিমিটার। ঠিক ৩১ বছর পরে একদিনে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পুরো মাসের হিসাব যদি ধরা হয় তা হলে আমরা দেখতে পাব অগাস্ট মাসের ২১ দিনে ত্রিপুরায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল ২১৪ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৩৮.৭ মিলিমিটার, অর্থাৎ ১৫১% বেশি।
১৯৯৩ সালের পরে ২০০৪-এ দুটি পর্বে জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে এমন ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। তখন দুই মাসে গড়ে লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে ২,১০২.৮মিমি;বৃষ্টিপাত হয়েছিল। কিন্তু এবার তার থেকে বেশী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর পর ২০১৮ সালে একবার ত্রিপুরাতে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। ২০১৮ সালের মে মাসে, ঘণ্টায় ১৫০ কিমি বেগে প্রচণ্ড বাতাস এবং প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস হয়, ফসল জলের তলায় চলে যায় এবং বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ উপড়ে পড়ে। এর মোকাবেলার জন্য ত্রাণ কাজ যখন চলছিল, তখন জুন মাসে আবার রাজ্যে ভারী বৃষ্টির ফলে ব্যাপক বন্যা হয়েছিল। সেই বছর কোনো কোনো এলাকায় একদিনে ২৭০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। এবং ৫০,০০০ এরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে গিয়েছিল।রাজ্য জুড়ে ভূমিধসে, জাতীয় মহাসড়ক এবং সংযোগ সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার কোনো কোনো এলাকায় একদিনে ৩৫০-৩৭০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এবার গৃহহীন হয়েছে কম করেও ১ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। এবং রাজ্যের আট জেলার কম করেও ১৭ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন সেবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রান ও পুনর্বাসনে চুড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ ছিল। এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল গোটা প্রশাসনকে। কিন্তু এবারের বন্যা মোকাবেলায় রাজ্য সরকার বিলম্বে হলেও যতটা সম্ভব পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনী (এনডিআরএফ), ত্রিপুরার নিজস্ব দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী (এস ডি আর এফ) ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর), আসাম রাইফেলস এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) সহ সামরিক, আধা-সামরিক এবং বেসামরিক দলগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে পরিস্থিতির মোকাবেলার চেস্টা করে যাচ্ছে।
ত্রিপুরা ডিসেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (টিডিএমএ) জানিয়েছে, এই অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চাইলে কেন্দ্রীয় সরকার বায়ুসেনার ৪টি এম আই ১৭ হেলকপ্টার সহ এন ডি আর এফ- এর ১২০ জন প্রশিক্ষিত জওয়ানকে রাজ্যে পাঠিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ৪০ কোটি টাকার তহবিল পাঠিয়েছে।এর আগেও বিগত ১৯৮৬, ১৯৯৩, ১৯৯৯, ২০০৪ ও ২০১৮ সালে রাজ্যে ব্যাপক বন্যা হয়েছে যার ফলে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল।কিন্তু এবারের অভূতপূর্ব বৃষ্টিপাতের কারণে তীব্র বন্যার কবলে পড়েছে গোটা রাজ্য। বিশেষ করে গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনাকোটি এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা গুলি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কম করেও পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি হানি হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে।
ত্রিপুরা ডিসেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (টিডিএমএ) এর ২৪ আগস্টের একটি প্রেস বিবৃতি অনুসারে বন্যার কারনে ত্রিপুরাতে এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতি এর আগে কখনো দেখা যায়নি। টিডিএমএ-এর প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে রাজ্য জুড়ে ছয়টি নদীর জলস্তর ধলাই, খোয়াই, গোমতি, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা এবং ঊনকোটি জেলায় বিপদ চিহ্নের উপরে ছিল যা ২৪ আগস্ট থেকে কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
এবারের বন্যাজনিত বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা থেকে কিছু শিক্ষনীয় বিষয় ও করনীয়
১. জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপন নীতি এবং অন্যান্য রাজ্য সরকারের নীতি গুলোর সমাহারে রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা নীতির খসড়া পুনরায় প্রস্তুত করে তা সব ভাষায় প্রকাশ বা সরকারী ও বেসরকারি ওয়েবসাইট গুলোতে আপলোড বা জনসমক্ষে আনতে হবে।
২. সরকারী কর্মচারী, অংঙ্গনবাড়ী কর্মী, বিভিন্ন এস এইচ জি, শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৮টি জেলার সব গুলোতেই বা পুলিশ ট্রনিং ইন্সটিটিউট গুলোতে আপাতকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য লাগাতর প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। চাকরি প্রার্থী বেকারদের সরকারি চাকরী প্রদানের আবেদনের প্রাথমিক যোগ্যতা হিসাবে এই ট্রনিং গ্রহন বাধ্যতামুলক করা যেতে পারে।
৩. বিপর্যয় ঘটার পর রাজ্যের যেসব হাসপাতালে বিপর্যস্তদের পাঠানোর জন্য রেফারেল হাসপাতাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪.এন ডি আর এফ-এর পথেই রাজ্য সরকার রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলায় আরও কয়েকটি এস ডি আর এফ বাহিনী তৈরী করতে চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। প্রয়োজনে বাছাই করা কিছু বেকার যুবকদের নিয়ে এন ডি আর এফ -এর মত এস ডি আর এফ-এর আরও কয়েকটি নয়া বাহিনী গড়ে তোলতে হবে।
৫. রাজ্যের ৮টি জেলার জেলা আপাতকালীন পরিচালনা কেন্দ্র ( ডি ই ও সি)- গুলো আরও আধুনিকীকরণ ও তাতে নিজস্ব কর্মী দলে লোক সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। এবং সর্বক্ষনের জন্যে এগুলি চালু রাখতে হবে।
৬. রাজ্য সরকারের প্রতিটি দপ্তররের জন্য বিপর্যয় প্রস্তুতি এবং প্রশমণের উদ্দেশ্য গুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পৃথক বাজেটের সংস্থান করতে হবে।
৭. মহকুমা স্তরে স্বতঃপ্রণোদিত স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে একটা সক্ষম কর্মী দল তৈরী করে বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য তাদের সর্বদা প্রস্তুত রাখতে হবে। তাদের জন্য বিশেষ স্টাইপেন্ডের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. এস ডি এম, ডি এম, বি ডি ও অফিস, থানা, টি এস আর ক্যাম্প, হাসপাতাল ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন সরকারী অফিস পরিকাঠামো গুলি কোনভাবেই এমন জায়গায় স্থাপন করা যাবে না যেখানে অল্প বৃষ্টিতেই জলে ডুবে যায়। কেননা, এবারের বন্যায় দেখা গেছে বহু থানা, বিডিও অফিস , হাসপাতাল জলের তলায় চলে গেছে।
৯. এবারের দুর্যোগের সময় আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে যে পাড়ার আপদ মিত্রদের দেখা মেলেনি। বহু এলাকার মানুষ জানেননা যে তাদের এলাকার আপদ মিত্র বা দুর্যোগ মোকাবেলায় যুক্ত সরকারী লোকরা কারা। তাই আগে থেকেই এসব আপদ মিত্র/বন্ধুদের পাড়ার গুরুত্বপূর্ন সরকারী বেসরকারী অফিস, ক্লাব, পঞ্চায়েত, এ এম সি-র ওয়ার্ড অফিস, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা কলেজের অধক্ষ্যদের কাছে তাদের নাম টেলিফোন নম্বর দিয়ে রাখতে হবে।
আমার বিশ্বাস হয়তো ত্রিপুরার ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এই সব গুলি কাজই কাগজে পত্রে করে যাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু এতদিন ধরে তেমন কোন বড় রকমের সমস্যা হয়নি তাই তারাও হয়তো বুঝতে পারেনি নির্ধারিত কাজগুলি ক্ষেত্র পর্যায়ে হয়তো চালু নেই। তাই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে অতি অবশ্যই বন্যা বা যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এসব কাজগুলি আগে থেকেই করে রাখার অনুরোধ করে এই প্রতিবেদন শেষ করছি। (লেখক একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও ত্রিপুরাইনফো ডটকম-এর সম্পাদক)