অরাজকতার বাংলাদেশে নতুন খেলা শুরু হয়ে গেছে!

জয়ন্ত দেবনাথ

ভারতে যেমন মহাত্মা গান্ধী, বাঙ্গালীর রবি ঠাকুর, বাংলাদেশেও তেমনি বঙ্গবন্ধু প্রতিটি মানুষের খুবই পছন্দের। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে টানা ষোল বছর ধরে দেশ চালাতে গিয়ে তার কন্যা শেখ হাসিনা বেশ কিছু ভুল ত্রুটি করেছেন। কিন্তু তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বাংলাদেশের কিছু কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররা যেভাবে বঙ্গবন্ধু-এর মূর্তি ভেঙ্গেছে এবং পাশাপাশি রাস্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে তা অনভিপ্রেত অভূতপূর্ব ও এককথায় নজীর বিহীন। এতে বহিঃ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের বদনাম হয়েছে। আন্দোলন শেষে জয়ী হয়ে দেশজুড়ে এমন অরাজকতা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও চায়নি। ছাত্র ছাত্রীরা দলবেঁধে যখন রাস্ট্রের সম্পদ রক্ষায় রাতজেগে পাহাড়া দিচ্ছেন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমন ও হিন্দু মন্দির রক্ষা করতে ব্যস্ত তখন কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররা হিন্দুদের উপর একের পর এক আক্রমন ও লুটপাটসহ হত্যালীলা চালিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু মন্দির সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ঘরে পৈশাচিক আক্রমনের পরিনতি যে ভয়াবহ হতে পারে গত কদিন ধরে শুভবুদ্ধির মানুষের ব্যপক প্রতিবাদ ও আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিং থেকেই স্পষ্ট। শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থা থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর তিন দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা যে ভাবে ফের গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট সহ ঢাকা শহরের রাজপথের দখল নিয়েছেন তা এককথায় অভূতপূর্ব।

ছাত্র আন্দোলনকে ভর করে কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররা যে বাঁকা পথে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে এটা ছাত্র নেতারাও বুঝতে পেরেছেন। তাই তারা ডেমেজ কন্ট্রোল করতে লুঠপাট হওয়া রাস্ট্রীয় সম্পদ ও থানা থেকে লুটপাট করা অস্ত্র ফেরতের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ঢাকা- এর রাজপথে ঝাড়ু দেওয়া, ট্রাফিক কন্ট্রোল, পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজে নামানো হয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের।

কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসরদের অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপ এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ বিদেশি প্রতিটি রাস্ট্র নিন্দা করেছেন। ভারত ও বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়াও এসব সংবাদ ভালো ভাবেই প্রচার করছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী দিনের নির্বাচনে কট্টরপন্থীদের জয় যে ততটা সহজ হবে না এটা যত দিন যাবে দেখবেন ততই স্পষ্ট হবে। কেননা, বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থার অনেক কিছু মেনে নেননি ঠিক আছে। কিন্তু আওয়ামীলীগের বিপক্ষ বা নিরপেক্ষ কোনো মানুষই রবি ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধুকে অশ্রদ্ধা করেননা, আজ যারা উনাদের মূর্তি ভেঙ্গেছে এবং এদের নিয়ে হাসি তামাশা করছেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখবেন এদের বিরুদ্ধেও একই ভাবে দ্রুত পথে নামবেন। সেই খেলা শুরু হয়ে গেছে।

কেননা, কিছুদিনের মধ্যেই আমরা দেখতে পাব কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসরদের সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরোধ বেঁধেছে।

ছাত্র আন্দোলন মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়েছিল। প্রথমে একদল ছাত্র চাকরিতে কোটা পদ্ধতি- এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছিল। তখন কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররা কোনভাবেই এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল না। যখনই কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররা বুঝতে পারল যে এবার শেখ হাসিনা বিপদে পড়ে গেছেন, তখনই এঁরা ঘুরপথে ছাত্র আন্দোলনে ঢুকে যায়। মূলত ২০১৮ সালের আগে বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধাদের পরিবারের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০% পর্যন্ত সংরক্ষণ ছিল। এছাড়াও মহিলাদের জন্য ১০% সংরক্ষণ, জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য ৫% এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১% আসন সংরক্ষিত আছে। ২০১৮ সালে সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের সদস্যদের চাকরি কোটা কমিয়ে ৫% করে দেয়। কিন্তু ২০২৪ সালের জুনে, বাংলাদেশের হাইকোর্ট রায় দেয় যে কোটা বিলুপ্তির ২০১৮ সালের সার্কুলারটি বেআইনি ছিল, আগের ব্যবস্থাটি পুনঃস্থাপন করতে রায় দেয় সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ প্রত্যাহার করে মুক্তিযুদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি কোটা আগের ৩০% এর বদলে ৫% বহাল করেন। শেখ হাসিনার সরকারো তা মেনে নেন। কিন্তু কোটা আন্দোলন চলাকালে যেসব জায়গায় ছাত্র ছাত্রীরা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলন জারী থাকে। জারী থাকে শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশী দমনপীড়নও। প্রচুর ছাত্র যুবকদের প্রান যায়। যার ফলশ্রুতিতে শ্লোগান উঠে শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই।

শেখ হাসিনার পতনের অন্যান্য কারণ

একটানা সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করার পর শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হলো গত ৫ আগস্ট ২০২৪। বিদায়কালে তাকে বাংলাদেশে ‘একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাত্রী’ হিসেবে অপবাদ দেয়া হয়েছে। ছাত্র ও গণ–আন্দোলনের মুখে তাঁর পতনের পেছনে দেশে দুর্নীতি বৃদ্ধি, নিজের ও দলের নেতাকর্মীদের সৈরাচারী মনোভাব, নিজের অহংকার ও অতি আত্মবিশ্বাস—এসব বিষয়কে অন্যতম কারণ হিসেবে বর্ননা করেছে সেদেশের মিডিয়া। শেখ হাসিনার সময়কালে একসময় পৃথিবীর সবচেয়ে দরীদ্রতম দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতি হয়েছে এটা সেই দেশের সিংহভাগ মানুষ স্বীকার করেন।

সেদেশের মিডিয়ার একটি বৃহৎ অংশ এটাও মনে করেন যে শেখ হাসিনার সরকার তাদের তৃতীয় টার্মে বিভিন্ন কূটকৌশল করে ক্ষমতায় আসলেও গত বেশ কয়েক বছর ধরেই সম্পূর্ণ ভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। গত দুটি নির্বাচনের ফলাফল দেশের শুভবুদ্ধির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মেনে নেননি। যার পরিণতিতে অবশেষে ছাত্র যুবকদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত গণ–আন্দোলনে রূপ নেয়। এবং দেশ জুড়ে গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়।

৫ আগস্ট পদত্যাগের আগে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগও তাঁকে দেওয়া হয়নি। ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দিয়ে সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে দুপুরের আগে দেশ ছাড়তে নির্দেশ দেন। এই অবস্থায় বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগ করেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে শেখ হাসিনা একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন। তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা সঙ্গে ছিলেন। এখনো তিনি বিদেশের কোথাও রাজনৈতিক আশ্রয় পাননি। তাই ভারতেই আছেন।

প্রথমাবস্থায় মূলত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করে। ৩৬ দিন ধরে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে শেখ হাসিনা শুরু থেকেই দমন করতে পুলিশের আশ্রয় নেয়। তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হওয়ার পরও শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে শক্ত অবস্থানের কথা বলা হচ্ছিল। এমনকি আন্দোলনের এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে মাঠে নামিয়ে পেছন থেকে পুলিশের সহায়তায় বিরুদ্ধ গোষ্ঠির ছাত্র ছাত্রীদের দমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে সারা দেশে সংঘাত–সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জনের বেশি ছাত্র যুবকের প্রাণহানি ঘটে।

হঠাৎ করে কেন এমন পরিস্থিতি হলো? বাংলাদেশ এর অধিকাংশ মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন, সেই পর্যায়ে গত ১৪ জুলাই ২০২৪ শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি ‘রাজাকার’ শব্দও ব্যবহার করেছিলেন।পাশাপাশি তিনি সেনাবাহিনীর শাসন নিয়েও কটু মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন সেনাবাহিনীর শাসন কেমন হয় তার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তাই তিনি দেশে সেনাবাহিনীর শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে না আনতে বলেছিলেন। এতে সেনাবাহিনীর একাংশ কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসর অফিসাররা আগুনে আরও ঘি ঢালেন। বাংলাদেশ এর একাধিক প্রবীণ সাংবাদিকের মতে এসব মন্তব্যে শেখ হাসিনার একগুঁয়েমি ও অহংকারের বিষয়টিই প্রকাশ পেয়েছিল। এরপর শিক্ষার্থীরা আরও ফুঁসে ওঠেন, আন্দোলন আরও জোড়ালো হতে থাকে। সেই আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করায় গত ১৭ জুলাই ২০২৪ থেকে পক্ষকালের মধ্যে সারা দেশে দুই শত–এর বেশি লোকের প্রাণহানি ঘটে। এরপর সেনাবাহিনী নামিয়ে কারফিউ দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। তখনই শিক্ষার্থীরা সরকার পতনের ডাক দেয়। এবং আন্দোলন আরও তেজী করেন। সুযোগ বুঝে কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসররাও এই আন্দোলনে শরীক হয়ে পড়েন। দেশের সব ছাত্র যুবকরা ৫ আগস্ট 'ঢাকা চলো'- এর আহ্বান জানানো হয়। বিপুলসংখ্যক ছাত্র যৌবনের ঢল নামে ঢাকার রাজপথে। জনতার এই ঢেউ অস্ত্র ও শক্তি দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা হলে প্রচুর প্রাণহানির সম্ভাবনার মুখে দেশের সেনাবাহিনী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি প্রথমে পদত্যাগে রাজি ছিলেন না। শেষে বিদেশে বসবাসরত তার ছেলে সজীব জয়কে সেনাবাহিনীর তরফে গোটা পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলা হলে তার হস্তক্ষেপে শেখ হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন। এবং একঘন্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ কার্গো বিমানে ভারতে চলে আসেন।

বাংলাদেশ এর চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ থেকে শিক্ষনীয় বিষয় হল:

১. অহংকার পতনের কারণ এই ধ্রুব সত্যটি পুনঃ প্রতিষ্টিত হল।

২. অহংকার, একনায়কতন্ত্র একটা সময়ে মানুষকে একা করে দেয়।

৩. একই ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে শাসন ক্ষমতায় থাকলে অহংকার, একনায়কতন্ত্র কায়েম হতে বাধ্য

৪. দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে খেপিয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা মুস্কিল।

৫. মিডিয়াকে ছলে বলে কৌশলে দমিয়ে রাখার চেষ্টা গনতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক

৬. ছাত্র যুবকদের আন্দোলনকে কিছু সময়ের জন্য বলপূর্বক দাবিয়ে রাখা গেলেও খুব বেশী দিন ধরে তা দমিয়ে রাখা অসম্ভব

৭. ছলে বলে কৌশলে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় একবার দুই বারের বেশী টিকে থাকা কঠিন।

কিন্তু বাংলাদেশে আসল খেলা শুরু হবে এখন। কেননা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যাকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে বসিয়েছেন তিনি আর কেউ নন, একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মহম্মদ ইউনূস। তাকে বাংলাদেশে 'পুওয়র পিউপিলস ব্যাঙ্কার'- এর জনক বলা হয়।দেশের স্বার্থে তিনি যে যেকোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নেবেন তা বলাই বাহুল্য। তিনি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পছন্দের কাজ গুলো যে আগে করবেন এটাও ইতিমধ্যেই পরিস্কার করে দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসরদের হামলা সন্ত্রাস ও বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহলের চাপে এধরনের নিন্দা আগামী দিনেও তাঁকে করতে হবে। তাছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা চাইছেন পুলিশ, নির্বাচন কমিশনের কাজ কর্ম সহ বিচার বিভাগে আমূল পরিবর্তন করে দেশে একটি গনতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোটের মাধ্যমে স্থিতিশীল রাজনৈতিক দলের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।



কিন্তু পক্ষান্তরে বিএনপি ও জামাত শিবিরের নেতারা ভাষণ দিয়ে বলছেন আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশে সাধারণ নির্বাচন হোক। অর্থাৎ দ্রুত নির্বাচন ইস্যুতে কট্টর মৌলবাদী শক্তির দোসরদের সাথে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরোধ এক কথায় অনিবার্য। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা দেখতে পাব এই ইস্যূতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এই ফাঁকে আওয়ামী লীগের নেতারা পথ খোঁজে নেবেন কিভাবে তাদের পূর্বের ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে নতুন করে মাঠে নামা যায়। যদিও ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের গোপালগঞ্জ ও ঢাকা এর নেতৃত্ব রাজপথে নেমে গেছে। বরিশাল, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম থেকেও একই খবর এসেছে। তাই বাংলাদেশের মানুষ যে নিকট ভবিষ্যতে বেশ কিছুদিন অশান্তির মধ্যেই কাটাবেন এটা বলাই বাহুল্য।

নতুন খেলা হিসাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সামনে রেখে আজ থেকেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলির প্রধানদের পদত্যাগ চাওয়া। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে। দাবী তোলা হয়েছে পুলিশ প্রধান ও বিজিবি প্রধানকে পদত্যাগ করতে হবে। দুই তিন দিনের মধ্যে দেখবেন দাবি তোলা হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কলেজের অধ্যক্ষদের পদত্যাগ করতে হবে। যা শেষ পর্যন্ত হয়তো অঞ্চল বেঁধে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, কমিটি, কমিশন হয়ে বাজার কমিটির সভাপতি সদস্যদের পদত্যাগের মাধ্যমে শেষ হবে। যার ফলশ্রুতিতে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পরবর্তীতে অশান্তির ধারাবাহিকতা পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে।

(লেখক একজন সাংবাদিক ও ত্রিপুরা ইনফো ডটকম এর সম্পাদক)


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.