।। বড়মুড়ার বুক চিরে ।।

অরিন্দম নাথ

আমি তখন এসপি এসবি ৷ সেদিন দুপুরে অফিসে বসে কাজ করছি ৷ ডিউটি অফিসার এসে বলল, ‘স্যার, একটি খারাপ খবর আছে ৷ অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার শৈলেন কুমার দাস কিছুক্ষণ আগে মারা গিয়েছেন ৷ সম্ভবত: আত্মহত্যা ৷’

দাস সাহেবের এক ভাই আমাদের পুলিশ দপ্তরেই কাজ করতেন ৷ আমি তাকেই ফোন করলাম ৷ সেও দাদার মৃত্যুর খবর কনফার্ম করল ৷ বলল, মৃতদেহ আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজের মর্গে আছে ৷ ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৷ কিছুদিন যাবত খুব অবসাদে ছিলেন ৷ আরো দু`এক জনকে ফোন করলাম ৷ যারা মৃত্যুর আগে স্যারের সান্নিধ্যে কাটিয়েছেন ৷ মৃত্যুর কারণ খোঁজার চেষ্টা করলাম ৷ একজন বললেন স্যার ইদানীং শরীরে ও মনে তাঁর বিশ বছর আগের রূপে ফিরে যাওয়ার বাসনা করতেন ৷ এই টানা-পোড়ন থেকেই অবসাদ এবং শেষে মৃত্যু ৷

১৯৯৯ সাল ৷ স্যার তখন অবিভক্ত দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জেলা শাসক ও সমাহর্তা ৷ আমি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৷ আমাকে খুব স্নেহ করতেন৷ একদিন আমায় তাঁর অফিসে ডাকালেন ৷ সময়টা বছরের মাঝামাঝি ৷ বললেন, ‘আমি উদয়পুর থেকে পিত্রা - নিত্যবাজার - নাগরাই হয়ে অম্পি পর্যন্ত বড়মুড়া পাহাড়ের বুক - চিরে একটি রাস্তা করার পরিকল্পনা দিয়েছি ৷ আগরতলা থেকে একটি প্রশাসনিক দল আসবে ৷ সবাই বলছে তুমি এই রাস্তা খুব ভালো চেনো ৷ তোমাকেও আমাদের সাথে চলতে হবে ৷ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে ৷’

আমি এক বাক্যে রাজি হলাম ৷ নির্দিষ্ট দিনে আগরতলা থেকে সকালেই অফিসারেরা এলেন ৷ চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, নেপাল সিনহা এবং দিবাকর চক্রবর্তী ৷ সবাই আইএএস অফিসার ৷ এক্ষণে অবসরপ্রাপ্ত ৷ সাথে অন্যান্য অধঃস্থন কর্মকর্তা ৷ চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায় ও নেপাল সিনহা স্যারকে জেলা শাসক ও সমাহর্তা হিসাবে পেয়েছি ৷ চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায় স্যারের বিশাল বপু ৷ বলা যায় দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে সমান হইবে টানা ৷ তবে স্যারের ইংরেজিও ছিল উল্লেখ করার মত ৷ নেপাল সিনহা স্যারের আবার শ্বাসের টান ছিল ৷ সাথে ইনহ্যালার রাখতেন ৷ দিবাকর চক্রবর্তী স্যার অপেক্ষাকৃত ফিট ৷ আর শৈলেন কুমার দাস-তো তখন বলতে গেলে যুবক ৷ স্যারের সবকিছুতেই উৎসাহ ৷ আমরা চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায় ও নেপাল সিনহা স্যারের জন্য আলাদা অ্যাটেন্ড্যান্ট রাখলাম ৷

আমাদের রাস্তা যাবে উদয়পুর থেকে পিত্রা - দেওয়ান বাজার – নিত্যবাজার – ডাকমুড়া - ছনখলা - তেলপেতদুং – তৈলসিং মলসমপাড়া – নাগরাই - ছেচুয়া হয়ে অমরপুর ৷ আমরা রাত্রিতে থাকব যতনবাড়ি ডাক বাংলোতে ৷ তখন ওই অঞ্চলে উগ্রপন্থীদের রমরমা ৷ তাই পুরোটা রাস্তার আশেপাশে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলাম ৷ পিত্রাতে আমাদের একটি পুলিশ ফাড়ি আছে ৷ তাছাড়া তখন ছিল সিআরপিএফ ক্যাম্প ৷ পিত্রার নাম পিত্রা নদী থেকে ৷ এই নদী বড়মুড়া থেকে উৎপত্তি হয়ে গোমতী নদীতে গিয়ে মিশেছে ৷ পিত্রাতে বাঙালিদের বাস ৷ একসময় উগ্রবাদীরা অতর্কিতে হানা দিয়ে পিত্রা থেকে লোক অপহরণ করে নিয়ে যেত ৷ কয়েকবার সেখানে উগ্রপন্থী হামলার পর দাঙ্গার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল ৷ দেওয়ান বাজার মোটামুটি সমতলে ৷ মূলত: উপজাতি জমাতিয়াদের বাস ৷ নিত্যবাজার, নাম থেকেই বুঝা যায় যেখানে প্রতিদিন বাজার বসে ৷ তখন নিত্যবাজার তার জৌলুস হারিয়েছিল ৷ কারণ অপহরণ হবার ভয়ে বাঙালি বিক্রেতারা সেই বাজরে যেত না ৷ এখন শুনেছি নিত্যবাজার তার হৃত-গৌরব ফিরে পেয়েছে ৷ এখন পাকা শেড হয়েছে ৷ নিত্যবাজার পর্যন্ত ইটের রাস্তা ছিল ৷ আমাদের কনভয় সেখানে গিয়ে থামে ৷

এরপর থেকে পাহাড়ে চড়ার শুরু ৷ প্রথমে ডাকমুড়া ৷ এই এলাকার প্রথম উঁচু পাহাড় ৷ আমরা বড়মুড়া পাহাড়কে পশ্চিম থেকে পূবে অতিক্রম করছিলাম ৷ আমাদের সাথে প্রচুর উৎসাহী গ্রামবাসী ৷ তাছাড়া আমাদের পুলিশের লোক ৷ তখন সকাল অনুমানিক দশটা ৷ রৌদ্রের প্রচণ্ড তেজ ৷ আমার মাথায় জাঙ্গল ক্যাপ ৷ সিভিল অফিসারদের মাথায় ছাতা ৷ কারো কারো মাথায় তোয়ালে ৷ আমরা বাউন্ড বাই বাউন্ড এগোচ্ছিলাম ৷ ডাকমুড়া পৌছাতেই প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজল ৷ এখান থেকে মলসমদের বসতির শুরু ৷ উত্তর দিকে বড়মুড়া পাহাড়ের উপরে বাম্পাই, তেমতাই, তৈবাকলাই মলসম প্রভৃতি গ্রাম ৷ দক্ষিণ দিকে নাজিলা ডুম্বুর এবং গোমতীর উত্তর পাড়ের গ্রামগুলি ৷

নাজিলায় একবার খুব মজার ঘটনা ঘটেছিল ৷ যা আমি আমার প্রথম বই ‘তরমুজ পাগলা ও অন্যান্য গল্প’-তে স্থান দিয়েছি ৷ এখানে সংশ্লিষ্ট অংশটুকু তুলে ধরলাম : আজ একটি ঘটনায় খুব মজা পেয়েছি ৷ বৈরী ধরতে কিল্লা থানার নাজিলা ডুম্বুর গ্রামে গিয়েছিলাম ৷ মলসম গ্রাম ৷ প্রভাতকুমার মলসম এক বৈরীর বাবা ৷ বৃদ্ধকে ছেলেদের নাম ও বয়স জিজ্ঞাসা করলাম ৷ তিন ছেলের নাম বললেন, যথাক্রমে রঞ্জিত, সঞ্জিত এবং বিক্রম ৷ বয়স প্রথমে বলতে পারলেন না ৷ আমাদেরকে ঘরে বসিয়ে বাইরে চলে গেলেন ৷ পাঁচ মিনিট কোনো দেখা নেই ৷ তারপর হঠাৎ কোথা থেকে এসে বললেন, ‘লেখো, বড়ডার বয়স তেইশ, মাইজলাডার একুশ আর ছোটডার ঊনিশ ৷’

আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কার কাছ থেকে বয়স জানলেন?’

পাশের টিলায় জুম-খেতের একটি খেজুর গাছ দেখিয়ে বললেন, ‘যে বছরে রঞ্জিতের জন্ম হয় সে বছরে প্রথম ওই গাছ থেকে রস নেই ৷ তারপর বছর বছর গাছ থেকে রস নিছি ৷ ছেলে একটা থেকে আরেকটা দুই বছরের ছোট বড় ৷ এতক্ষণ খেজুর গাছর গায়ে কয়টা কাটা আছে গুইন্যা আইছি ৷ মোট তেইশবার গাছ কাটা হইছে ৷’

ডাকমুড়ায় একটু বিশ্রাম করে আমরা এগিয়ে চলি ৷ এবার আমাদের গন্তব্য ছনখলা ৷ এখানে ছন ঘাস জন্মাত তাই এই গ্রাম ৷ যখন পৌঁছলাম তখন প্রায় বেলা একটা ৷ স্থানীয় একটি পঞ্চায়েত অফিস এবং লাগোয়া স্কুল আছে ৷ আমাদের সবাইকে গ্রামবাসীরা সম্বর্ধনা দিল ৷ প্রশাসনের তরফ থেকে গ্রামবাসীদের কিছু সাহায্য করা হলো ৷ এখানেই আমাদের খাবার ব্যবস্থা হয়েছিল ৷ প্রথমেই পরিবেশিত হলো লাঙ্গি ৷ মলসমদের নিজেদের ঘরে তৈরি ভাতের বিয়ার ৷ আমরা প্রত্যেকেই ছোট চায়ের কাপে এক কাপ করে নিলাম ৷ উপজাতিদের অতিথি সমাদরের এই রিতি ৷ না খেলে খারাপ পায় ৷ এর পরে আমি অনেক জায়গায় লাঙ্গি চেখে দেখেছি ৷ কিন্তু এতো পিউর কোথাও পাইনি ৷

ছনখলা থেকে দুপুর তিনটের পর আবার আমরা যাত্রা শুরু করি ৷ এবারে আমরা উদয়পুর ছেড়ে অমরপুরে প্রবেশ করি ৷ তৈলসিং মলসমপাড়া বড়মুড়া পাহাড়ের পূর্ব ঢালে ৷ এই গ্রামটির আরেকটি নাম শুনেছি ৷ তেলপেত দুং ৷ তেল শব্দের অর্থ কচ্ছপ ৷ পেত শব্দের অর্থ কামড় ৷ এখানে নিশ্চয় কচ্ছপ পাওয়া যেত ৷ আর কেউ নিশ্চয় কামড় খেয়েছিল ৷ প্রতিটি গ্রামেই আমাদের থামতে হয় ৷ লোকজন সম্বর্ধনা দেয় ৷ প্রশাসনিক শিবিরের ব্যবস্থা হয় ৷

মলসম পাড়া পেরিয়ে নাগরাই ৷ এবার উৎরাই ৷ যখন পৌছাই তখন সূর্য ডুবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে ৷ পথে ছনগাং পড়ে ৷ বেশ প্রশস্থ পাহাড়ি নদী ৷ পায়ে হেটেই আমরা অতিক্রম করি ৷ গোমতী নদীতে গিয়েই মিশেছে ৷ নাগরাই কথার অর্থ অতিথি ৷ জমাতিয়া গ্রাম ৷ নাগরাই থেকে ছেচুয়া অপেক্ষাকৃত সমতলভূমি ৷ ছেচুয়া শব্দের অর্থ যেখান থেকে চড়াই শুরু হয় ৷ নাগরাই থেকে ছেচুয়া পাঁচ-ছ কিলোমিটার পথ ৷ মাঝামাঝি পৌছতেই আমাদের গাড়ির সাথে দেখা হয় ৷ গাড়িগুলি উদয়পুর - অমরপুর মূল সড়ক ধরে ঘুরে এসে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ৷

সেই সফরের সুফল ৷ এখন পিচ-ঢালা রাস্তা হয়েছে ৷ ছেচুয়া থেকে নাগরাই হয়ে কিংবা তেতৈবাড়ি থেকে নাগরাই হয়ে নিত্যবাজার উদয়পুর যাওয়া যায় ৷ সেদিন রাত্রিতে আমরা যতনবাড়ি ডাক-বাংলোয় ছিলাম ৷ বড় অফিসারদের সাথে একদিনের সহচর্য অনেক দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছিল ৷

এখানে আরেকজনের কথা বলব ৷ অশ্বত্থামা জমাতিয়ার বাড়ি ছিল উদয়পুরের মহারানীতে । গামারিয়ার গ্রামে । তিনি এখন নেই । তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় উদয়পুরে ৷ আমার সেকেন্ড ইনিংসের সময় । আম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৷ তিনি তখন সরকারী প্রচার দপ্তর বা আইসিএটি-র কর্মী । উদয়পুর ছনবন এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন । বিভিন্ন সরকারী প্রোগ্রামে দেখা ৷ একদিন পুরানো পুলিশ রেকর্ড ঘাটছিলাম ৷ তাঁর নাম পেলাম ৷ একসময় নকশাল ছিলেন ৷ নকশালরা তাঁদের আদর্শ থেকে পারতপক্ষে বিচ্যুত হয় না ৷ মনুষ্যত্বের বিচারে আমার কাছে তাঁরা দলবদলুদের চেয়ে এগিয়ে ৷ তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব আমি উপভোগ করি ৷ উপজাতিদের সম্পর্কে, বিশেষকরে জমাতিয়াদের সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারি ৷ তিনি বরাবর বৈরীদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন ৷ জমাতিয়া হদা অক্রাকে উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উজ্জীবিত করেন ৷ পরবর্তীতে নিজেও জমাতিয়াদের দুইজন হদা অক্রার মধ্যে একজন হিসেবে নির্বাচিত হন ৷ অপরজন ছিলেন বিক্রম বাহাদুর জমাতিয়া ৷ হদা অক্রা এগিয়ে আসাতে দক্ষিণ জেলার জমাতিয়া অধ্যুষিত এলাকায়, বিশেষকরে কিল্লাতে আমরা সাফল্য পেতে শুরু করি ৷ পরপর বেশকিছু সাফল্য আসে ৷ ২০০০ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমার এসকর্টের ছেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষে রাইয়াবাড়িতে বৈরী হাফলং জমাতিয়া মারা যায় ৷ ১৯৯৯ সালের শেষ দিকে গুলিরাইবাড়ি এবং কিল্লাতে বিএসএফ নিয়োজিত হয় ৷ তারা বৈরী বিরোধী অভিযানে খুবই পারদর্শিতার সঙ্গে অংশ নিত ৷ একটি বড় দল নিয়ে অভিযানে যেত ৷ ছোট একটি দলকে অ্যাম্বুশে বসিয়ে চলে আসত ৷ সাধারণত লোকজন দেখত সকালবেলা বিএসএফ বেরিয়ে আসছে ৷ এমনি একটি দলের সঙ্গে মৈথুলুংবাড়িতে এনএলএটি বৈরী দলের সংঘর্ষ হয় ৷ ২০০০ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে ৷ দুইজন উগ্রবাদী মারা যায় ৷ মধুসূদন মলসম ৷ আর কালা দেববর্মা ৷ দুইটি একে রাইফেল উদ্ধার ৷ কালা দেববর্মা ছিল জেল পলাতক আসামী ৷ ২০০০ সালের ৮ই নভেম্বর চালিতাবাড়িতে চাঁদা সংগ্রহে এসে একজন বৈরী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যায় ৷ একটি কার্বাইন উদ্ধার হয় ৷ ডিএআর নিয়ে তৎকালীন কিল্লা থানার ওসি গোপাল ব্রহ্ম এই সাফল্য এনে দিয়েছিলেন ৷

বৈরীরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে ৷ ২০০০ সালের জুলাই মাসে চব্বিশজন জমাতিয়া ময়াল সর্দারকে অপহরণ করে ৷ উত্তর বড়মুড়া এলাকার জঙ্গলে আত্মগোপন করে ৷ জমাতিয়া হদা দক্ষিণ জেলার জমাতিয়া সম্প্রদায়ের বৈরীদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে ৷ পাশাপাশি পুলিশও ব্যাপক অভিযান চালায় ৷ তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিন অপহৃতদের অক্ষত মুক্তি দেয় ৷ এরপর ব্যাপকহারে জমাতিয়া সম্প্রদায়ের বৈরীরা আত্মসমর্পণ করে ৷ দীর্ঘদিন বৈরী কার্যকলাপ কিল্লা এলাকায় বন্ধ থাকে ৷ তবে তাদের রাজনৈতিক মদতদাতারা বসে থাকে না ৷ ২ রা সেপ্টেম্বর ২০০১ তারিখে উগ্রপন্থীরা কিল্লা থানা এলাকায় পর পর তিনটি ঘটনা করে ৷ এরমধ্যে নোয়াবাদিতে আমাদের পুলিশের এএসআই যামিনী জমাতিয়ার মা-বাবাকে খুন করে ৷ তাঁরা রাজনৈতিকভাবে বামপন্থী ছিলেন ৷ অপর দুটি ঘটনায় চারজন আত্মসমর্পণকারী বৈরী খুন হয় ৷ আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় করি ৷ তেরজন আটক হয় ৷ এরমধ্যে কয়েকজন সরকারি কর্মচারী ছিলেন ৷ একটি রাজনৈতিক দলের তরফে প্ররোচনা আসে ৷ আমরা মাথা নত করি না ৷ প্রায় তিনমাস ধৃত লোকেরা জেলে আটক ছিল ৷ এরপর আর বৈরী ঘটনার সাক্ষী আমি কিল্লাতে হইনি ৷

মৈথুলুং বাড়িতে বিএসএফের সাফল্যের পর বিএসএফ এবং পুলিশের বড় অফিসারেরা আসেন ৷ সবাই খুশি ৷ এরমধ্যে দুটো জটলা হয় ৷ একটি বিএসএফ অফিসারদের ৷ অন্যটি আমাদের পুলিশ অফিসারদের ৷ আমাদের যিনি সবচাইতে সিনিয়র ছিলেন তিনি বলেন, “এবার মজা হবে! সাপের লেজে পা দিয়েছে!”

কথাটি শুনে আমি মনে মনে ব্যথিত হই ৷ এরপর থেকে দেখতে পাই প্রতি সপ্তাহে মেসেজ আসছে বিএসএফকে সতর্ক করার জন্য ৷ উগ্রবাদীরা তাদের উপর বদলা নেওয়ার চেষ্টা করছে ৷ ভাবটা যেন বিএসএফের আগে কোন ফোর্স বৈরীদের বিরুদ্ধে সাফল্য এনে দিতে পারেনি ৷ আরো অবাক হলাম, যখন দেখলাম বিএসএফ কে কিল্লা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল ৷ সেখানে সিআরপিএফ বসানো হল ৷ ইতিমধ্যে অবশ্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল ৷


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.