অধিকার সুরক্ষার নতুন ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে ত্রিপুরার মানবাধিকার কমিশন

জয়ন্ত দেবনাথ

মানবাধিকার হল প্রতিটি মানুষের জন্মগত ও সাংবিধানিক অধিকার। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, লিঙ্গ এবং রাষ্ট্র নির্বিশেষে মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার জন্য ভারতের সংবিধান নাগরিকদের এই মৌলিক অধিকার সুরক্ষার জন্য বদ্ধপরিকর। দেশ ও দুনিয়ার কোনও আইনেই মৌলিক অধিকার গুলিকে খণ্ডন করা যায় না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলার পর রাষ্ট্রনায়কগন রাষ্ট্রসংঘের সূচনা করে এবং ১৯৪৮ সনের ১০ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকার সনদ ঘোষণা করে। ওই সনদের মূল বিষয় গুলো ভারতের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের মধ্যেও সুরক্ষিত রয়েছে।

গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার বজায় রাখা ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকা ও অন্যদের সচেতন রাখা। মানুষ যতই তার অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হবেন গণতন্ত্রের ভিত্তি ততই সুরক্ষিত হবে। মানুষের জীবন ও জীবিকার মৌলিক অধিকার গুলো সুরক্ষিত না থাকলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকতে পারে না।

ভারতের পার্লামেন্ট ১৯৯৩ সালে “মানবাধিকার সুরক্ষা আইন" পাস করে এবং এতে বলা হয় যে প্রতিটি নাগরিকের জীবন, বাক্ স্বাধীনতা, সাম্যতা এবং আত্মমর্যাদা রক্ষার অধিকার থাকবে যাহা ভারতের সংবিধান কর্তৃকও স্বীকৃত। বিভিন্ন দেশের সাথে আন্তর্জাতিক চুক্তিতেও বলা আছে যে ভারতের আদালত দ্বারা বলবৎযোগ্য আইনের শাসনের সমস্ত শর্ত গুলি মানবাধিকার হিসাবে গণ্য হবে। উক্ত আইন অনুযায়ী “জাতীয় মানবাধিকার কমিশন" সারা দেশের মানবাধিকার লংঘনের বিষয় গুলি সম্পর্কে ব্যাবস্থা নিতে পারে। পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন ওই রাজ্যের মানবাধিকার লংঘনের বিষয় গুলো স্বাধীন ভাবে তদন্ত ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা দিতে পারবেন স্থানীয় সরকারকে।

ত্রিপুরা রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ২০১৫ সালে গঠিত হয় এবং ২০১৬ সাল থেকে কাজ শুরু করে। মানবাধিকার কমিশন রাজ্যে মানবাধিকার লংঘনের ক্ষেত্রে তদন্ত করে রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত নির্দেশিকা দেওয়ার জন্য ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রাপ্ত। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কল্যান জ্যোতি সেনগুপ্ত ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের প্রথম চেয়ারপার্সন হিসাবে নিযুক্ত হন। কিন্তু তার সময়কালে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের কাজকর্ম খুব একটা গতি আনতে পারেনি। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি (ত্রিপুরা হাইকোর্ট) স্বপন চন্দ্র দাস ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আছেন। তার সহযোগী অন্য দুই সদস্য হলেন প্রাক্তন আইপিএস বি কে রায় ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জাজ সুবীর চন্দ্র সাহা। মূলত স্বপন চন্দ্র দাস ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আসার পরেই ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশন ধীরে ধীরে মানবাধিকার বঞ্চিত মানুষের একটা ভরসার স্থল হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার মানুষের কাছে। কেননা, সাধারণ মানুষ যতনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে সরাসরি মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তার চেয়ে অনেক বেশী অভিযোগ মানবাধিকার কমিশন সরাসরি সোয়োমটো গ্রহণ করেছেন বিভিন্নভাবে। বিশেষত বিভিন্ন মিডিয়াতে উঠে আসা অভিযোগ গুলির ভিত্তিতে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশন নিজের থেকে অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ তদন্তের ভিত্তিতে মানুষকে ন্যায় পাইয়ে দিতে অভুতপূর্ব উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিশেষত রাজনৈতিক সংহীশতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় এফ আই আর না গ্রহণ করা বা তদন্তে গাফিলতির একাধিক ঘটনায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করে ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশন বঞ্চিত মানুষকে ন্যায় পাইয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন।

এক্ষেত্রে মানবাধিকারের প্রাথমিক শর্তাবলী গুলি কি এ সম্পর্কে সমাজের অনেকেই অবগত নন। তাই আলোচ্য প্রতিবেদনটি সমাপ্ত করার আগে এখানে মানবাধিকারের প্রাথমিক শর্তগুলি কি এসম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে যে সকল অধিকার গুলিকে মানবাধিকার বলে গন্য করা হয়েছে যাকে বিশ্ব মানবাধিকার সনদ বলা হয়, স্বীকৃত মানবাধিকার গুলো অনেকটা নিম্নরূপঃ-

ধারা-১:- প্রতিটি মানুষই জন্ম থেকেই স্বাধীন এবং মর্যাদা ও স্বাভাবিক অধিকারের ক্ষেত্রে সমান। প্রত্যেকেই বিচারবুদ্ধি ও বিবেক সম্পন্ন ও একে অন্যের প্রতি সৌভ্রাতৃত্ব মূলক আচরন করবে।

ধারা-২:- জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনীতি বা অন্যান্য মতামত জাতীয় বা সামাজিক উৎপত্তি বা সম্পত্তি, জন্ম বা মর্যাদা নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ সনদে অর্ন্তভুক্ত অধিকার ও স্বাধীনতাগুলি ভোগ করার অধিকারী।

এছাড়াও যে দেশ বা ভূখন্ডে মানুষ বাস করে, তার রাজনৈতিক, সীমানাগত বা আন্তর্জাতিক মর্যাদা যাই হোক না কেন, তা স্বাধীন, ট্রাষ্ট, অস্বায়ত্ব শাসিত বা সার্বভৌমতার প্রশ্নে সীমিতই হোক না কেন, এ সকল প্রশ্নে কোন বৈষম্য করা চলবে না।

ধারা-৩:- প্রত্যেকের জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার অধিকার বজায় থাকবে।

ধারা-৪:- কোন মানুষই ক্রীতদাস বা দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে না, সমস্ত ধরনের দাস প্রথাই নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে।

ধারা-৫:- কোন মানুষকেই অত্যাচার বা নিগ্রহ করা চলবে না। নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অমর্যাদাকর আচরণ বা শাস্তি দেওয়া চলবে না ।

ধারা-৬:- যে কোন মানুষ যে কোন স্থানে আইনের চোখে মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি পাবে।

ধারা-৭:- আইনের চোখে প্রত্যেকে সমান হিসাবে স্বীকৃতি পাবে এবং বিনা বৈষম্যে আইনের শাসন দ্বারা রক্ষিত হবে। সনদ ভঙ্গকারী সমস্ত বৈষম্য বা সেই বৈষম্যের পক্ষে উস্কানীর বিরুদ্ধে প্রত্যেক আইনের রক্ষা কবচ ভোগ করবে। ধারা-৮ঃ- সংবিধান বা আইন কর্তৃক স্বীকৃত মৌলিক অধিকার কারো ভঙ্গ করা হলে যথোপযুক্ত জাতীয় বিচারালয়ে তার বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিকার লাভের সুযোগ সকলেই ভোগ করবে।

ধারা-৯:- খেয়াল খুশি মতো কোন ব্যক্তিকেই আটক, বন্দি বা নির্বাসিত করা যাবে না ।

ধারা-১০:- যে কারো অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারন বা তার বিরুদ্ধে আনীত অপরাধমূলক অভিযোগ বিচারের জন্য প্রত্যেকেই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালতে ন্যায় সঙ্গত ও প্রকাশ্য বিচারের সুযোগ পাবে।

ধারা-১১:- ক) দন্ডনীয় অপরাধের জন্য ধৃত যে কোন ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবে এবং আইন অনুসারে প্রকাশ্য বিচারে দোষী সাব্যস্থ না হওয়া পর্যন্ত নিরপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

খ) কোন ব্যক্তিকে কৃত অপরাধের জন্য অপরাধ করাকালীন সময়ে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা অপরাধী বলে বিবেচিত না হলে দোষী গণ্য করা যাবে না। কোন ব্যক্তিকে অপরাধ করাকালীন সময়ে নির্দিষ্ট শাস্তি ভিন্ন অন্য কোন সাজা দেওয়া যাবে না ।

ধারা-১২:- কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, গৃহগত বা কোন প্রকার যোগাযোগের ব্যাপারে যদৃচ্ছ হস্তক্ষেপ করা বা তার সম্মান ও মর্যাদায় আঘাত করা যাবে না। এইসবের বিরুদ্ধে প্রত্যেকেই আইনানুগ সহায়তা পাবে।

ধারা-১৩:- ক) প্রত্যেক ব্যক্তি তার দেশের সীমানার মধ্যে যাতায়াত ও বসবাসের স্বাধীনতা ভোগ করবে।

খ) প্রত্যেকেই নিজ দেশ সহ যে কোন দেশ ত্যাগ করার বা দেশে ফিরে আসার অধিকার পাবে।

ধারা-১৪:- ক) প্রত্যেকেরই অত্যাচারের বা নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য অন্য দেশে আশ্রয় চাইবার বা পাইবার অধিকার থাকবে। খ) একমাত্র অরাজনৈতিক অপরাধ বা রাষ্ট্রসংঘের উদ্দেশ্য ও নীতির বিরোধীতার ক্ষেত্রে এই অধিকার প্রযোজ্য হবে না।

ধারা-১৫:-ক) প্রত্যেকেই তার জাতীয়তা বজায় রাখার অধিকার পাবে। খ) কাউকে যথেচ্ছভাবে তার জাতীয়তা থেকে বা জাতীয়তা পরিবর্তনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

ধারা-১৬:-ক) যে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীই জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষ বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হতে বা পরিবার গঠন করতে পারবে এবং উভয়েই বৈবাহিক জীবনে এবং বৈবাহিক জীবন অবসানকালে সমান অধিকারী থাকবে।

খ) যে কোন নর-নারী উভয়ের সম্পূর্ণ সম্মতিক্রমেই বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হতে পারে।

গ)পরিবার হচ্ছে সমাজের মৌলিক এবং প্রাকৃতিকভাবে সঙ্গবদ্ধ ইউনিট, যা সমাজ বা রাষ্ট্রের দ্বারা সংরক্ষিত হওয়ার অধিকারী।

ধারা-১৭:-ক) প্রত্যেকেই একা বা ইচ্ছেমত সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সম্পত্তি অর্জনের অধিকারী।

খ) কাউকেই যথেচ্ছভাবে তার সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

ধারা-১৮:-প্রত্যেকেরই তার চেতনা, বিশ্বাস এবং ধর্ম বেছে নেওয়ার এবং একইভাবে পরিত্যাগ করারও স্বাধীনতা থাকবে। প্রত্যেকেরই একক বা মিলিতভাবে বা একান্তে বা খোলাখুলি ভাবে তার ধর্ম ও বিশ্বাস প্রচার করা, অভ্যাস করা, উপাসনা বা অনুভব করার স্বাধীনতা থাকবে।

ধারা-১৯:- সব মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনভাবে যে কোন মতবাদ গ্রহণ করার অধিকার থাকবে। যে কোন মাধ্যমের সাহায্যেই তার মতবাদ গ্রহণ বা জ্ঞাপন করতে পারবে। এ ব্যাপারে কোন রকমের হস্তক্ষেপ বা নিপীড়ন করা চলবে না ।

ধারা-২০:-ক) প্রত্যেকেই স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণভাবে একত্রে সমবেত হতে পারে বা সংগঠন স্থাপন করতে পারে। খ) কাউকে কোন সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাধ্য করা চলবে না।

ধারা - ২১:- ক) প্রত্যেকেই তার নিজের দেশের সরকারের প্রত্যক্ষভাবে বা স্বাধীনভাবে প্রতিনিধি পছন্দ করার মাধ্যমে অংশ গ্রহণ করতে পারে।

খ) প্রত্যেকেরই তার দেশের সামাজিক কাজ কর্মে স্বাধীন ও সমতাপূর্ণভাবে অংশ গ্রহন করার অধিকার থাকবে। গ) জনগণের ইচ্ছাই হচ্ছে সরকারী কর্তৃত্বের প্রাথমিক শর্ত, এই ইচ্ছা প্রকাশ নির্দিষ্ট সময় অন্তর এবং অবাধ ভোটের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে এবং এই ভোটদান পর্ব গোপন ও সমানাধিকারের মাধ্যমে সংগঠিত হতে হবে।

ধারা-২২:-ক) প্রত্যেকেই সমাজের একজন সদস্য হিসাবে তার নিজস্ব সামাজিক নিরাপত্তার অধিকারী। এই অধিকার সে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে রক্ষা করতে পারবে। সাংগঠনিক এবং রাষ্ট্রীয় আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারগুলিকে যেকোন ব্যক্তি বিশেষ তার নিজস্ব মর্যাদা এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে লাগাতে পারবে।

ধারা-২৩:-ক) প্রত্যেকেরই কাজের অধিকার এবং স্বাধীনভাবে নিয়োজিত হওয়ার এবং কাজ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা ও বেকারত্ব বিরোধী ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে রক্ষা পাওয়ার অধিকার থাকবে।

খ) প্রত্যেকেই সমকাজের জন্য সমবেতনের অধিকারী। এতে কোন বৈষম্য চলবে না।

গ) প্রত্যেক কর্মীই ন্যায় সঙ্গত এবং উপযুক্ত মজুরী পাওয়ার অধিকারী যাতে সে তার নিজের এবং পরিবারের সামাজিক অস্তিত্ব, মানবিক মর্যাদা রক্ষা করতে পারে। এই অধিকারের জন্য যে কোন ব্যক্তি যেকোন সামাজিক রক্ষাকবচ ব্যবহার করতে পারে।

ঘ) প্রত্যেকেই ন্যায়সঙ্গত অধিকার রক্ষার্থে কোন শ্রমিক সংগঠন গঠন করতে পারে বা সংগঠনে অংশ গ্রহণ করতে পারে।

ধারা-২৪:- যে কোন ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ছুটি বা বিশ্রাম নিতে পারে, অথবা অসুস্থ হয়ে পড়লে মজুরী সহ ছুটি পেতে পারে।

ধারা-২৫:- ক) প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্য ও সুষ্ঠ জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সামাজিক সাহায্য পাওয়ার অধিকারী এবং বেকারত্ব, অসুস্থতা, প্রতিবন্ধিত্ব, বৈধব্য এবং বার্ধক্যজনিত অবস্থায় সামাজিক সুরক্ষা পাবে, যদি ঐ অবস্থা তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।

মানবাধিকারের ক্ষেত্রে কর্মরত এন জি ও (NGO) গুলি মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য কমিশন গুলিকে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু কোনো এন জি ও মানবাধিকার কমিশন নয়, বা তারা রাজ্য সরকারকে কোনও ধরণের নির্দেশ দিতে পারেনা, তবে কোথাও কোন রকম মানবাধিকার লংঘন হলে তা সরকারী প্রশাসন কিংবা মানবাধিকার কমিশনের নজরে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সিনিয়র আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন-এর নেতৃত্বে ত্রিপুরা হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশান রাজ্যের মানুশের মানবাধিকার রক্ষায় খুব ভাল কাজ করছে। প্রসঙ্গত, একটা বিষয় সবার জেনে রাখা দরকার যে, কোথাও কোন ব্যক্তিগত বিরোধ জনিত ঘটনা বা দুর্ঘটনা মানবাধিকার কমিশনের আওতাধীন হতে পারে না।

সারা পৃথিবীতে ১০ই ডিসেম্বর প্রতি বৎসর মানবাধিকার সুরক্ষা দিবস হিসাবে মানা হয় এবং এর উদ্দেশ্য হল মানুষকে সর্বতোভাবে সচেতন করা যাতে কোথাও সরকারী কর্মী দ্বারা মানবাধিকার লংঘিত হলে তার যথাযথ তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এই অনুযায়ী ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩, রবিবার বেলা ২টার সময় রবীন্দ্র ভবন হল নং -২ এ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছে।ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের তরফে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ত্রিপুরা রাজ্য মানবাধিকার কমিশন গঠনের পর গত ৩০ নভেম্বর পর্য্যন্ত রাজ্যে ৩৯০ টা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে জমা পড়ে। অবশ্য এর মধ্যে ৩৬৮ টা অভিযোগ ইতিমধ্যেই কমিশন নিস্পত্তি করেছে এবং এ পৰ্য্যন্ত ৮৪,৪৪,২০০.০০ টাকা ক্ষতিপূরণ (compensation) দেওয়ার সুপারিশ করেছে। ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী প্রায় সবক্ষেত্রেই তাদের সুপারিশ গুলো রাজ্য সরকার কার্য্যকর করেছে। আর মূলত রাজ্য সরকারের এই সহযোগী মনোভাবের কারনেই ত্রিপুরা মানবাধিকার কমিশন মানুষের জীবন মানের অধিকার সুরক্ষায় ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের আদালতের বাইরে একটি অন্যতম প্রধান ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে। (লেখক একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও ত্রিপুরাইনফো ডট কম এর সম্পাদক)


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
মন্তব্যের তারিখ (Posted On)মন্তব্যকারির নাম (Name)মন্তব্য (Comment)
09.12.2023Sumitra Dasঅনেক ধন্যবাদ আপনাকে স্যার, অনেক অজানা তথ্য তুলে ধরার জন্য