বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২৩ : ‘এক জীবন, এক লিভার’
ডঃ অমিতাভ রায়, পেট ও লিভার বিশেষজ্ঞ
বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়ে প্রতি বছর ২৮শে জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয়। এই সচেতনতামূলক অভিযানের উপযোগিতা কতিপয় উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান দেখলে ই বোঝা যায় । বিশ্বব্যাপী প্রতি ৩০ সেকেন্ডে কেউ হেপাটাইটিস বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা থেকে মারা যায়। তাই, রোগ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এই সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ছোট্ট রাজ্যে ভাইরাস সংক্রমনের মাত্রা অন্য রাজ্যের তুলনায় অধিক । তাই সচেতনতা মূলতঃ জনজাতি গোষ্ঠীর জনতার জন্য গূরত্তপূর্ণ , "কাইসা ল্যাংমা
কাইসা লিভার" স্লোগানটি এই পরিস্থিতিতে উপযুক্ত। বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২৩-এ পরিচালিত প্রচারাভিযান এবং ক্রিয়াকলাপগুলি এই রোগ এবং এর সাথে সম্পর্কিত দিকগুলি সম্পর্কে ব্যক্তিদের শিক্ষিত করার উদ্দেশ্যে সংচালিত হয় ।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে, হেপাটাইটিস এবং এর প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অসংখ্য স্বাস্থ্য প্রচারাভিযান ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছরের মত ই এবার ইউনিটির উদ্যোগে " ওয়াক ফর লিভার " এ ১০০ জন নাগরিক শহর পরিক্রমা করেন । রেলীর ফেষ্টুনের সংলাপে তা বার বার পরিলক্ষিত হয়েছে "বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে ইউনিটির অঙ্গিকার,
হেপাটাইটিস মুক্ত থাকুক সবার পরিবার।"
হেপাটাইটিস বিষয়ে অভিজ্ঞদের অভিমত, সচেতনতাই হল সুস্থ থাকার একমাত্র পথ।" ও ককবরকে "হেপাটাইটিস টিকা নাদী, বেমার নি সিমি হাচল তংদী।" ইত্যাদি।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২৩ এর থিম ভাইরাল হেপাটাইটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয় এবং এ বছরের থিম ‘এক জীবন, এক লিভার’। প্রতি বছর, এই দিনটি বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিসের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে একটি নির্দিষ্ট থিমের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী হেপাটাইটিস সংক্রমিত রোগীদের মাত্র শতকরা ৫-১০ জন ব্যক্তি এই রোগের চিকিৎসায় অন্তরভুক্ত হন, মূলতঃ অজ্ঞানতার কারনে । বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন প্রচারাভিযান, সেমিনার এবং বক্তৃতা সংগঠিত হয়, সারা বিশ্ব থেকে লোকেদের অংশগ্রহণের জন্য এবং রোগ সম্পর্কে আরও জানতে আমন্ত্রণ জানায়।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২৩ এর তাৎপর্য বিশ্বজুড়ে হেপাটাইটিসকে শিঁকড় থেকে নির্মূল করার জন্য অনেক কাজ করা হয়েছে। এই সকল অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হেপাটাইটিস রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জনগণকে উৎসাহিত করা। বিশ্ব সংস্হা গুলো ধাপে ধাপে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যেমন; হেপাটাইটিসের ধরন এবং তাদের সংক্রমণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং হেপাটাইটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করা।
হেপাটাইটিস বি এর বিরুদ্ধে টিকা প্রদানের অভিযানকে উন্নত করা। ত্রিপুরা হেপাটাইটিস ফাওন্ডেশান এই সম্পর্কে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য কাজ করছে ।
প্রাথমিকভাবে ১৯ মে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালন করা হয়, ২০১০ সালে ২৮শে জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে স্থানান্তরিত হয় বারুক স্যামুয়েল ব্লুমবার্গের জন্মদিনকে স্মরণ করার উদ্যেশ্যে । তিনি ছিলেন আমেরিকান চিকিৎসক যিনি ১৯৬০ এর দশকে হেপাটাইটিস বি আবিষ্কার করেছিলেন। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী ডঃ বারুচ ব্লুমবার্গ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আবিষ্কার করেছিলেন (ভাইরাসটির শনাক্ত করার পরীক্ষা) এবং ভ্যাকসিন তৈরি করেছিলেন।
২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নির্মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসার প্রাদূর্ভাব হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবধান।