আকাশের চাঁদ সেনিটাইজার, ত্রিপুরার হাসপাতালগুলিও ধুঁকছে
প্রদীপ চক্রবর্তী
বিশ্বজুড়ে তান্ডব চলছে। রন ব্যাধি করোনার। ভাইরাস সংক্রমণ হচ্ছে বল্গাহীন ভাবে। সংক্রমণ হচ্ছে দ্রুত। সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। সংক্রমণ রোধে ব্যতিব্যস্ত জনসাধারণ। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা পন্থার দাওয়াই দেয়া হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে বড় দাওয়াই সেনিটাইজার। কিন্তু সেনিটাইজার এখন ধরা ছোঁয়ার বাইরেই। প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এর ভীষন সংকট ছিল। কলকাতার মিডিয়া সংকট, কালোবাজারীর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়ে চড়ে বসে মমতা। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হয়।থানা, আউটপোষ্ট, পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হল সেনিটাইজার, মাক্স। ব্যাস, জনসাধারণ হাফ ছেড়ে বাঁচলেন।পুলিশের কাছ থেকেই শুরু হল সেনিটাইজার সংগ্রহ। প্রায় সবাই পাচ্ছেন সংক্রমণ রোধের সেনিটাইজার। ওখানে কালোবাজারী বন্ধ। ওষুধ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। ওরা এখন বসে বসে মাছি তাড়াচ্ছেন। মজুতকরা সেনিটাইজার যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ওরা দোকানের সামনে বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে বলছেন এখানে সেনিটাইজার পাওয়া যায়, নায্যমূল্যে। একেই বোধহয় বলে ঠ্যালার নাম বাবাজী।
কিন্ত পান্ডব বর্জিত রাজ্যে সেনিটাইজার এখন আকাশের চাঁদ। রাজধানীর ঔষুধের দোকানীদের একটাই বক্তব্য নেই নেই। ছিল শেষ হয়ে গেছে। আসলে ওদের কাছে আছে ঠিকই তবে দ্বিগুণ পয়সা ফেললে আপনার হাতে গুঁজে দেবে। মঠ চৌমুহনী থেকে বটতলা পর্যন্ত পরপর দুদিন মেডিক্যাল শপ এ ডু মেরে অনেকের মত এই প্রতিবেদকও হতাশ, ক্লান্ত। সেই মঠ চৌমুহনী থেকে বটতলা হেঁটে হেঁটে দোকানে দোকানে ডু মারা সে কি কম কথা। তারপরও পাওয়া যায়নি। তো এখন কি করা? বাংলা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ছাড়াতো সাধারন মানুষের কাছে বিকল্প কিছু নেই।
সেনিটাইজার সহ করোনা ভাইরাস মোকাবিলার অন্যান্য সরঞ্জাম নাকি হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত নেই। রাজ্য সরকারের উচিত জনগনের স্বার্থে এগিয়ে আসা।থানা, পুলিশের মাধ্যমে সেনিটাইজার নায্যমূল্যে সাধারণের কাছে তুলে দেয়া। এতে যেমন রোগের সংক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষ বেঁচে যাবেন তেমনি রাজ্যেরও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। বিপ্লববাবু বড় গলায় বলতে পারবেন করোনা মুক্ত ত্রিপুরা। কিন্তু এখন তেমনটা বলতে পারবেন না। কেননা তিনি হাসপাতাল গুলিতেই সেনিটাইজারই সরবরাহ করতে পারছে না, জনগন প্রতিকারের উপকরন দিনভর চক্কর কেটেও পাচ্ছেন না। তাই স্বভাবতই সংক্রমণ এর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। রাজধানীই যেখানে সেনিটাইজারবিহীন অবস্থা সেখানে ব্লক, জেলা, রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের পরিস্থিতি তো সহজেই অনুমেয়।
আরো অবাক করার ঘটনা অনলাইনে ও সেনিটাইজারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকটা বিমানসংস্হাগুলির মতো। এরা যদিও ঝোপ বুঝে কোপ মারায় দক্ষ। তাদের অর্থ মোক্ষনের বিরূদ্ধে অসহায় সরকারও অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার। এরা যেন এদের কাছে অসহায়। কি অদ্ভুত অবস্থা।
সেনিটাইজার সংকটের এই সময়ে অপরিহার্য। কেননা করোনা সংক্রমণ রোধে এটিই একমাত্র ব্যবস্হা। এক্ষেত্রে কেন সরকার নীরব হয়ে থাকবে?