দামাল ১৭য় ত্রিপুরাইনফো-ডটকম ক্যুইজ
নন্দিতা দত্ত
পেন্সিলের ওপর কেন লেখা থাকে এইচবি? বা ভারতবর্ষে ২০২২ সালে এখন অব্দি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত? ইন্টারনেট চালানোর সময় E,G,H,H+ কেন আসে? ইন্টারনেট সংক্রান্ত প্রশ্ন গুলো অনেকেই খুব সহজে উত্তর দিয়ে দেবেন কিন্তু যদি বলা হয় অরবিন্দ ঘোষ কে স্বাদেশিকতার ধর্ম গুরু কে বলেছিলেন? বা যদি বলি বর্তমানে রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশের সংখ্যা কত তাহলে কিন্তু আমাদের অনেকেরই বই পত্র ঘাটতে হবে। আজকাল অবশ্য ডিজিটাল বই পত্র অর্থাৎ ইন্টারনেটের মধ্য দিয়ে আমরা খুব তাড়াতাড়ি যে কোন প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাই।
ক্যুইজ বলতে যা বুঝি আর সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন উত্তর মানে জেনারেল নলেজ এই দুটোর মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি? আপাতদৃষ্টিতে পার্থক্য না থাকলেও সময়ের প্রেক্ষিতে সুক্ষ্ম একটা পার্থক্য আছে, তা হল সাধারণ জ্ঞান মানে আমার জানার বিষয় আর ক্যুইজ হলো জানার বিষয়টা নিয়ে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা। ক্যুইজ শব্দটি কিভাবে এল তা নিয়ে অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী স্কটল্যান্ড-এর রিচার্ড ডালি এবং তার বন্ধু বাজি ধরেছিলেন এমন একটি শব্দ বের করতে হবে যা শহরের মানুষের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। ডালি তার থিয়েটারের সহকর্মীদের একটি নতুন শব্দ লিখে দিয়ে বলেছিলেন শহরের সর্বত্র পোস্টারিং করে দিতে। এক রাতের মধ্যে এই নতুন শব্দটিকে দেখে মানুষের মধ্যে অদ্ভুত কৌতুহল জাগে এবং সেই শব্দটি ছিল quiz. এই কথাটি আমি প্রথম জেনেছিলাম ত্রিপুরাইনফো ডটকম-এর একটি ক্যুইজ অনুষ্ঠানে এসে । এমনি বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে প্রতিবছর রাজ্যজুড়ে যে ক্যুইজজ্বর দেখা যায়, তাতে আক্রান্ত হয় নানা বয়সের মানুষ। বছর ভর সবাই অপেক্ষায় থাকেন নভেম্বর মাসে ক্যুইজ কখন হবে? এতদিনে আমরা জেনে গেছি ত্রিপুরাইনফো ডটকম-এর এবছরের মেগা ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হবে ২৭ নভেম্বর রবীন্দ্র ভবনের এক নম্বর হল- এ অনুষ্ঠিত হবে এবছরের মেগা ক্যুইজ। থাকবে দুই শতাধিক পুরস্কার।
রাজ্যজুড়ে ছেলে মেয়েদের মধ্যে একটা প্রবল প্রতিযোগিতা এই ক্যুইজকে ঘিরে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা গুলোতে যারা বসেন নিজেদের তৈরি করেন তাদের একটা বাড়তি সুবিধা থাকে আলাদা করে ক্যুইজ প্রতিযোগিতার জন্য পড়াশোনা করে নিজেকে তৈরি করতে হয় না। এবং দেখা গেছে এই ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন সময়ে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের অনেকেই তার কর্মক্ষেত্র বা চাকরির বাছাই পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন। তার মানে এই নয় যে এর বিপরীতটি হয় না।
এই ক্যুইজ প্রতিযোগিতা কেন সব বয়সের মানুষকে আকর্ষণ করে? আমার ব্যক্তিগত মতামত একটা এত বড় প্ল্যাটফর্মে নিজের মেধাকে যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যায় এই মেগা ক্যুইজের অনুষ্ঠানে। অর্থাৎ যেকোন চাকরির জন্য যে নিজেকে তৈরি করছেন, তিনি কতটা তৈরি হলেন, নিজের পরীক্ষা নিজে নিতে পারছেন।
এছাড়া এতে বিনোদন খোঁজে পান অনেকেই।কিভাবে ?প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের সাথে ক্যারিয়ার, রাজনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি থেকে সমাজ, খেলা থেকে সিনেমা সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে নিজেকে তৈরি করার সময়ে তিনি এন্টারটেইণ্ড হন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তৈরি হলেও চলচ্চিত্র এবং খেলা নিয়ে বাড়তি আকর্ষণ থাকে যাদের, তারা এখান থেকেই বিনোদন পান, এই সময়ের বিশ্বকাপ খেলা দেখার মধ্য দিয়ে অনেকেই ক্যুইজের খেলাধুলা রাউন্ডের জন্য তৈরি হয়ে যাবেন। বা দোস্তজী সিনেমা দেখে জেনে গেছেন পরিচালক কে? কিভাবে বানালেন সিনেমাটা এবং সিনেমাটোগ্রাফার কে ছিলেন কি কি পুরস্কার পেল? এবং আপনি যদি দেখে থাকেন অনুভব করেছেন আর না দেখলে আপসোস হয়তো করছেন। এই অনুভব কোন বিজ্ঞাপন বা প্রচার মাধ্যম থেকে অনুভূত হয়না। দৃশ্যমাধ্যমে সম্পর্কের মায়া কি তা অনুভব করা যায়।এখন কেউ কেউ ভাবছেন ইনফো ডটকমের ক্যুইজের সাথে এর সম্পর্ক কোথায়? সমঝদার ও কে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়। হিন্দির এই বাক্যটার ব্যাখা করতে হবে না।
কারণ ত্রিপুরাইনফো ডটকমের এই মেগা আয়োজনে ছোটবেলাকে ফিরে দেখা যায়। মান অভিমান থাকে। প্রতিযোগিতা থাকে। আর সবচেয়ে বড় যে রাউন্ড অডিয়েন্স রাউন্ড সেটা বিরাট সারপ্রাইজ এনে দেবে আপনাকে। জীবনের প্রথম ক্যুইজের (অডিয়েন্স রাউন্ড) উত্তর দিয়ে পুরস্কার পেয়ে হয়তো আগামী বছরের ক্যুইজে সরাসরি প্রতিযোগী হবার সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলতেই পারেন-২৭ নভেম্বর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে।