ইন্দিরা, কাস্ত্রোর চোখে মুজিব

প্রদীপ চক্রবর্তী

মঙ্গলবার। ১৭ই মার্চ। আজ থেকে শত বছর আগে জন্মেছিলেন তিনি। মধুমতি আর বাগবের বুকে শৈশবে সাঁতার কেটেছেন, আবার সাঁতার কেটেছেন মধূমতি নদীতে। তাঁর শৈশবের সাঁতার কাটা, উদোম গায়ে দে ছুট এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায় ছুটে যাওয়া ছিল তাঁর নিত্য দিনের রুটিন। কদাচিৎ দেরীও হত না তার। বলছিলাম অধুনা গোপালগঞ্জের কথা। সেখানেই রয়েছে টুঙ্গিপাড়া। সংক্ষেপে বলা হয়ে থাকে টুঙ্গি। টুঙ্গি নামেই বেশি পরিচিত। টুঙ্গিপাড়া মানেই শেখ মুজিব। মুজিব মানেই টুঙ্গিপাড়া। দুটিই যেন এক বা সমার্থক। বনেদী পরিবারের ছেলে শেখ মুজিব প্রথম দিকে রাজনীতির ধারে কাছেও যান নি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে, বয়স যখন আঠারো ছুঁই ছুঁই তখন ঝাঁপিয়ে পড়লেন রাজনীতির অঙ্গনে। সেই থেকে উত্থান শুরু। দীর্ঘ জীবনে তিনি বহুবার জেল খেটেছেন, আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সবার আগে। পিছিয়ে আসেনি কখনো। বাঙালির মুক্তির কথা তাঁর মূলমন্ত্র। স্বাধীন বাংলাদেশ তাঁর স্বপ্ন। সেই বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করল এক সাগর রক্তের বিনিময়ে। হাজারো লাখো মা বোন ইজ্জত সম্ভ্রম হারিয়েছেন এমনকি তাদের সম্ভোগের স্বাদ নিতে পিছপা হয়নি পাক সেনাদের বর্বর দল। তাদের দিনের পর দিন ঘরে আটকিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। সে কি অত্যাচার। ধর্ষণের পর নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা।

মুজিবের রমনার ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে বাংলার মানুষ তার কাছে তা ছিল তাঁরা ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছিলেন। হাতে ছিল তাদের বটি দা, খুন্তি। রমনার ডাকে যে যেভাবে পারে ঘর ছেড়ে লড়াই-এর ময়দানে। সে লড়াই স্বাধীনতার জন্য। বহু রক্ত ঝড়েছে। পদ্মা, মেঘনা, তিতাস নদীর বুক দিয়ে রক্তের স্রোত ভেসে গেছে। নদীর জল লালচে হয়ে গেছে।

অন্যদিকে বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক, কবি, শিল্পী সাহিত্যিকদের ঘর থেকে তুলে এনে নির্মমভাবে গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দেয়া হয়েছে। শিশু সন্তানকে নিয়ে মা, বোনরা ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এসে আশ্রয় নিয়েছে। এপার বাংলার লোকরা নিজেদের খাবার ভাগ করে বিপন্ন মা বোনদের খাইয়েছেন দিনের পর দিন। সেদিন তো ভোলা যায়না।

বাংলাদেশ র মুক্তির লড়াইয়ে অংশ নিয়ে বহু ভারতীয় সেনা প্রান হারিয়েছে।

এসব ইতিহাস অনেকেরই জানা।

কিন্তু মুজিব বর্ষে না বলা কিছু কথা না বললেই নয়, তাই ঝলক তুলে দেয়া হল।

১৯৭১ এ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতেই মাত্র চার বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ধানমন্ডির বাড়ীতে নির্দয়ভাবে হত্যা করা হল। প্রায় গোটা পরিবারকেই শেষ করে দেয়া হল। গত ১০০ বছরে বিশ্বের বহু রাষ্ট্র নায়ক, সরকার প্রধান, ও নেতাদের হত্যা করা হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে যে রকম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তার নজির নেই বলা চলে।

বঙ্গবন্ধুর অবদান বিশ্ববাসী জানেন, বিশ্ববাসী জানেন তাঁর অবদান। সেই বিশ্বের নেতারা বঙ্গবন্ধুকে কি ভাবে স্মরন করেছেন তাঁর কিছু অংশ তুলে প্রতিবেদন শেষ করা হচ্ছে।

ফিডেল কাস্ত্রো বলেছেন তিনি কখনো হিমালয় দেখেননি। তবে তিনি দেখেছেন শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁর ব্যক্তিত্ব , উদ্দীপনা সুউচ্চ হিমালয়ের মতো।

ইন্দিরা গান্ধী বললেন শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যতিক্রমী দেশাত্মবোধ এশিয়া ও আফ্রিকার মুক্তিকামীদের কাছে নিদর্শন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতে শেখ মুজিব গনতন্ত্রের আদর্শ, দীপশিখা। সর্বোপরি ভারতের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন।

প্রনব মুখার্জির মতে মুজিবর রহমান সর্বকালের সাহসী নেতা।

জন কেরি বলেছেন বঙ্গবন্ধু রং স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে চলেছেন তার সুযোগ্যা কন্যা।

ইয়াসের আরাফাত বলছেন মুজিব ছিলেন আপোষহীন সংগ্রামী, তাঁর ছিল উদার মন মানসিকতা।

ঘরের পাশের দেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ আগামীকাল। গোটা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধায় স্মরন করব।

তবে পদ্মা, মেঘনা, তিতাস যতদিন থাকবে প্রতিধ্বনিত হবে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। (প্রতিবেদক বর্ষীয়ান সাংবাদিক)


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
মন্তব্যের তারিখ (Posted On)মন্তব্যকারির নাম (Name)মন্তব্য (Comment)
19.03.2020AntonIt's very straightforward to find out any topic on web as compared to books, as I found this piece of writing at this web site. It’s appropriate time to make a few plans for the longer term and it is time to be happy. I have read this submit and if I may just I desire to suggest you few interesting issues or advice. Maybe you could write subsequent articles referring to this article. I wish to learn even more issues approximately it! I am sure this paragraph has touched all the internet visitors, its really really good post on building up new weblog. http://apple.com