জাতীয় পতাকা : আমাদের ভালোবাসা, শপথ ও স্বপ্ন; ভন্ড তপস্বীদের বরাবরের চক্ষুশূল
পুরুষোত্তম রায় বর্মন
স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ক্ষমতাসীন হওয়ার সুবাদে আজাদী কা অমৃত মহোৎসব কর্মসূচি নিয়েছে। এই প্রসঙ্গে ভূতের মুখে রাম নাম এই লোক প্রবাদটি স্বাভাবিকভাবেই দেশবাসীর মনে এসেছে। হর ঘর তিরঙ্গা বলে যারা চিৎকার করছেন তারা কোনদিন তিরঙ্গার প্রতি যথাযোগ্য শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেনি। তাদের ভালোবাসা আবেগ জড়িয়ে নেই জাতীয় পতাকার সাথে। তারা জানেনা ১০০ বছরের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস। তারা জানেনা কিভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের দিনগুলোতে জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে হাজার হাজার দেশবাসী অসীম সাহস, বীরত্ব ও আত্মত্যাগের মহাকাব্য রচনা করেছিলেন। লক্ষ লক্ষ নরনারী জীবন ও জীবিকার ঝুঁকি নিয়ে , বুকের রক্তে রাজপথ ভিজিয়ে ,ফাঁসির দড়ির গলায় চুমু দিয়ে , পিঠে চাবুকের দগদগে ক্ষ্মত নিয়ে, কালাপানি পেরিয়ে সেলুলার জেলে ঘানি টেনে টেনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন জাতীয় পতাকার গৌরব ও মহিমাকে।
১৯১১ সনে জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে দাদাভাই নৌরজি প্রথমবারের মতো স্বরাজ পতাকা উত্তোলন করেন। এই স্বরাজ পতাকাই পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান তিরঙ্গা ঝান্ডা বা জাতীয় পতাকা। ২২ শে জুলাই, ১৯৪৭ , গণপরিষদে জহরলাল নেহেরু নিন্মোক্ত প্রস্তাবটি পেশ করেন,
"Resolved that the National Flag of India shall be horizantal tricolor of deep saffron ( Kesari), white and dark green in equal proportion. In the center of white band, there shall be a wheel in Navy Blue to represent the Charkha. The design of the wheel shall be that of the wheel (charkha), which appears on the abacuse of the Sarnath Lion capital of Asoka. ...... The diameter of the wheel shall approximate the width of the white band and the ratio of the width to the length of the flag shall ordinarily be 2 : 3.'
জহরলাল নেহেরুর পেশ করা প্রস্তাব নিয়ে গণপরিষদে গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছিল। সরোজিনী নাইডু আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছিলেন;
"under this flag there is no prints and there is no prince and there is no peasant. There is no rich, there is no poor. There is no privilege, there is only duty : sacrifice. Whether we be Hindus or Muslims, Christian, Sikhs Or Zorostrians and others, our Mother India has one undivided heart and one indivisible spirit. Men and women of reborn india, rise and salute this flag. I bid you, rise and salute the flag.
সরোজিনী নাইডু স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল ভাবাদর্শ তুলে ধরেছিলেন এবং নব ভারতের নবরূপে জেগে উঠার চিত্রকল্প রূপে জাতীয় পতাকাকে দেখেছিলেন। ভারত জাতীয় পতাকা তুলছে সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে, সব বিদ্বেষ ও বিভাজনকে তুচ্ছ করে তা তুলে ধরেছেন তার প্রাণবন্ত আলোচনায় । জাতীয় পতাকা জাতির আসা-আকাঙ্ক্ষা। শপথ স্বপ্নের প্রতিক। সরোজিনী নাইডুর বক্তৃতা শেষ হতেই গণপরিষদ তুমুল করতালিতে অভিনন্দন জানিয়েছিল ।
সৈয়দ মোহাম্মদ সাদাউল্লাহ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছিলেন, " In my opinion the flag symbolizes the evolution of our aspiratiton, the fullfilmennt of struggle. Ultimate results of all our sacrifices.
তাঁর মতে পতাকার সাদা অংশ শুদ্ধতার প্রতীক এবং ব্যক্তি জীবনে ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শুদ্ধতা অর্জন আমাদের ধ্রুব লক্ষ। অশোকের ধর্মচক্র রাষ্ট্রের দায়িত্ব নির্দেশ করে। শাসকের লালসার জন্য শাসন নয়। সবার স্বস্তি, শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনই শাসনকর্তাদের মূল লক্ষ্য হবে। পতাকার সবুজ রং নিয়ে তৎকালীন সময়ের সাম্প্রদায়িক শক্তির উজর আপত্তি ও গোঁসা ছিল। শেঠ গোবিন্দ দাস, গণপরিষদের অন্যতম সদস্য , সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোক্ষম জবাব দিয়েছিলেন এই বলে , " আমি আপনাদের ১৮৫৭ সনের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের কথা স্মরণ করাতে চাই। ওই সময় আমাদের পতাকার রং ছিল সবুজ এবং ওই পতাকা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। ওই সময় ওটা শুধুমাত্র মুসলিমদের রং বা হিন্দুদের রং ছিল না। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের পতাকা ছিল এটা, প্রত্যেকের রং ছিল সবুজ"।
এস রাধাকৃষ্ণান অত্যন্ত প্রণিধান যোগ্য কথা বলেছিলেন " The flag links up the past with the present. It is the legacy bequeathed to us by the architect of our library. Those who fought under this flag are mainly responsible for the arrival of this great day of independence for india. "
আলোচনার পর গণপরিষদ পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর পেশ করা প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের জাতীয় পতাকাকে শুধুমাত্র একদিন স্যালুট করলেই আমাদের দায়িত্ব শুরু বা শেষ হয় না। তিন দিন ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা তুললেই সব দায়িত্বের পরিসমাপ্তি হয় না। জাতীয় পতাকার আদর্শ, ভাবনা ও ঐতিহ্যকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে না পারলে এবং কর্মে অনুশীলন না করলে যা হয় তা হচ্ছে জাতীয় পতাকার অপমান। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি প্রচার সর্বস্ব নাটকীয়তায় ঢেকে ফেলতে চাইছে জাতীয় পতাকার আদর্শ ও ভাবনার প্রতি তাদের বিদ্বেষ। সংবিধানের ৫১(ক) ধারায় সংবিধান , জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের প্রতি নাগরিকদের শ্রদ্ধার উপর যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনি একইভাবে বলা হয়েছে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের আদর্শকে অনুসরণ ও অনুধাবন করাও প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সংবিধান একটি জীবন্ত দলিল। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের লক্ষ্য, আশা , প্রত্যয়, শপথ ও অঙ্গীকার, সংবিধানকে জন্ম দিয়েছে। যারা জাতীয় আন্দোলনে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের মুখে আর যাই হোক দেশপ্রেমের কথা আমরা শুনতে প্রস্তুত নই।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ১৯২৫ সন থেকেই তিরঙ্গা ঝান্ডাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে মানতে অস্বীকার করে আসছে। এর কারণ কি? ভারতীয় জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের যেকোনো প্রতিককেই আরএসএস বরদাস্ত করতে পারে না। কারণ, আরএসএস এর কাছে ভারতীয় বলতে শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যা গুরুরাই। ১৯২৯ সনে কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে প্রস্তাব গ্রহণ করে প্রতিবছর 26 শে জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য আহবান রাখা হয় জাতির কাছে। একইভাবে দেশবাসীর কাছে বলিষ্ঠ আহ্বান জানানো হয় , দেশের প্রতিটি নগরে প্রান্তরে , গ্রামে গ্রামে, জনপদে , ঘরে ঘরে তিরঙ্গা ঝান্ডা উত্তোলন করে জাতীয় পতাকাকে স্যালুট করার জন্য। ২১ শে জানুয়ারি, ১৯৩০, আরএসএসের তৎকালীন সুপ্রিমো কে বি হেডগেওয়ার সার্কুলার জারি করে নির্দেশ দেন, ২৬ শে জানুয়ারি আরএসএস এর প্রতিটি শাখায় গেরুয়া ঝান্ডা বা saffron flag উত্তোলন করতে হবে। সমগ্র জাতি যেখানে তিরঙ্গা ঝান্ডা উত্তোলন করে ২৬ শে জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে স্বপ্নে ও শপথে বিভোর তখন আর এস এস জাতির সম্মিলিত ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিটি শাখায় তিরঙ্গা ঝান্ডার বদলে গেরুয়া ঝান্ডা তুলতে নির্দেশ দেয়। এম এস গোল ওয়ালকার আরএসএসের একজন স্বীকৃত তাত্ত্বিক। ১৪ ই জুলাই ১৯৪৬ সনে নাগপুরে আরএসএসের প্রধান কার্যালয়ে তিনি বলেছিলেন, "it was the saffron flag which in totality represented bharatiya (indian culture). We firmly believe that in the end the whole nation will bow before the saffron flag. "
১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭, দেশ স্বাধীন । ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য গঙ্গা যমুনা গোদাবরী বিপাসার জলে ডুবে গেছে চিরতরে। লালকেল্লায় তিরঙ্গা ঝান্ডা তুললেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জহরলাল নেহেরু। মধ্য রাত্রিতে সমস্ত পৃথিবী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। শতাব্দীর পর শতাব্দীর নিদ্রা থেকে ভারত জেগে উঠছে। সারাদেশে আসমুদ্র হিমাচলে ঘরে ঘরে তিরঙ্গা ঝান্ডা। দেশ বিভাগের যন্ত্রনা ভুলে, দ্বিখন্ডিত স্বাধীনতার ব্যথা বুকে নিয়েও দেশবাসী জাতীয় পতাকা তুলছে ঘরে ঘরে। স্মরণ করছে লক্ষ শহীদের রক্ত স্রোতকে। অভিনন্দন জানাচ্ছে মহান দেশপ্রেমিক বীরদের যাদের আত্মত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে আকাশে মাথা তুলেছে জাতীয় পতাকা। ঘোষণা দিয়েছে স্বাধীন ভারতবর্ষের আত্মপ্রকাশের। তখন আর ১৪ ই জানুয়ারি ১৯৪৭, আরএসএস এর মুখপত্র অর্গানাইজারের সম্পাদকীয় প্রবন্ধে জাতীয় পতাকার মর্যাদাকে খাটো করে লেখা হলো, "The people who have come to power by the kick of the fate may give in our hands the tricolor. But it will never be respected and owned by hindus. The word three in itself an evil and a flag having three colors will certainly produce a very bad psychological effect and injurious to a country. "
এই রাগ, বিদ্বেষ ও অমর্যাদার প্রকাশ নতুন নয়। যেদিন গণপরিষদ তিরঙ্গা ঝান্ডাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে গ্রহণ করলো তারপরেই ১৭ ই জুলাই, ১৯৪৭ আরএসএস এর মুখপত্র অর্গানাইজারে Nations flag শীর্ষক সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল, "we do not at all agree that the flag should be acceptable to all parties and communities in India. This is sheer non sense. The flag represents the nation and there is only one nation in hindustan,. . .the hindu nation. We can not possibly chose a flag with a view to satisfy the desires and wishes of all the communities. We can not order the choice of a flag as we order a tailer to make a shirt or coat for us. "
এই সম্পাদকীয়তেই স্পষ্ট কেন ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা না পছন্দ আরএসএসের। জাতীয় পতাকার তিনটি রং তিনটি মহৎ আদর্শ : স্বাধীনতা , সমতা ও ভাতৃত্ববোধের প্রতীক। Bunch of Thought এ Golwalkar প্রশ্ন তুলেছেন, কেন আমাদের নেতারা দেশের জন্য ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা বাছল। তার প্রশ্ন, why did they do so. It is just a case of drifting and imitating. Ours is an ancient and great nation with a glorious past. Had we no national emblem at all this thousands of years? Undoubtedly we had. Then why this utter void. This utter vaccum in our mind.
গোলওয়ালকার তার উপরোক্ত বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা? নতুন করে জাতীয় পতাকার প্রশ্ন কেন উঠলো । গোলওয়ালকার এর মতে হাজার বছর ধরে আমাদের নিজস্ব পতাকা ছিল। এর অর্থ স্বাধীনতা সংগ্রামকে অস্বীকার করা। উপনিবেশ বিরোধী জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের মধ্যেই জাতি হিসেবে ভারতবর্ষের গড়ে উঠাকে অস্বীকার করা। পরাধীনতার নাগপাশ থেকে জাতীয় মুক্তি এবং জাতীয় মুক্তি অর্জনের প্রতীক হিসেবে জাতীয় পতাকা , তাকেই অস্বীকার করা।
দামোদর বিনায়ক সাভারকার কিছুদিনের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামী, সেলুলার জেলে দ্বীপান্তর, তারপর পাঁচ পাঁচটি মুচলেকা দিয়ে ব্রিটিশ রাজের প্রতি সীমাহীন আনুগত্য জানিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে , অনুতপ্ত হয়ে জেল থেকে মুক্তি অর্জন করেন। যাইহোক সে অন্য প্রসঙ্গ। সাভারকার ২২ শে সেপ্টেম্বর, ১৯৪১ এ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে কি বলেছিলেন তা আমরা একটু দেখে নেব।
" So far as the flag question is concerned, the hindus know no flag, representing hindudom as a whole, then the kundalini kripanankit mahashava flag with the OM & Swastik, the most ancient symbols of the hindu race and policy coming down from age to age and honoured throughout Hindustan. Therefore any place of function where the pen hindu flag is not honoured should be boycotted by the hindu sangathanist ( members of the hindu mahasabha) at any rate..... The charka flag in particular may very well represent a khadi bhandar, but the charka can never symbolize and represent the spirit of the proud and ancient nation like Hindus. "
এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট সাভারকার জাতীয় পতাকাকে গ্রহণ করেননি। সাভারকারের কাছে ওম ও স্বস্তিক চিহ্নযুক্ত পতাকাই একমাত্র পতাকা। শুধু তাই নয় জাতীয় পতাকা বয়কট করা উচিত বলে সাভারকার স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন। স্বস্তিক চিহ্ন আর এস এস ও সাভারকারের কাছে বড় প্রিয় । হিটলারের কাছেও স্বস্তিক চিহ্ন বড়প্রিয় ছিল। নাজিদের পতাকায় স্বস্তিক চিহ্ন থাকতো। স্বস্তিক চিহ্ন পতাকা নিয়েই নাজিরা পৃথিবীর বুকে চিরস্থায়ী অন্ধকার কায়েম করতে আগ্রাসী হয়েছিল। স্বস্তিক চিহ্ন পতাকা নিয়ে ইহুদী নিধন। ইহুদী বিদ্বেষ। গ্যাস চেম্বার , কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্প। হিটলারের কাছে জার্মান জাতি প্রকল্পে ইহুদিরা নেই । অন্যরা নেই। ইহুদিরা 'অপর' ও 'বিশ্বাসঘাতক'। অবশ্যই দেশদ্রোহী। আর্য রক্তের শুদ্ধতা রক্ষায় ইউরোপ জুড়ে পিচাশ নৃত্য।
জাতীয় পতাকা জাতীয় আন্দোলনের সাফল্যের প্রতীক। জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের মশাল। আরএসএস জাতীয় আন্দোলনে কোনদিন অংশগ্রহণ করেনি। বরং জাতীয় আন্দোলন থেকে দূরে সরে থেকেছে। অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি বিরোধিতা করেছে। আর এস এস এর কাছে ব্রিটিশ উপনিবেশ শাসন মূল শত্রু নয়। তাদের কাছে দেশ বলতে শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যাগুরুরা। অন্যরা শুধুমাত্র "অপর ও প্রতিপক্ষ"। তাই ব্রিটিশরা আরএসএস এর কাছে শত্রু নয় বরং মিত্র। তাই আরএসএস জাতীয় পতাকাকে গ্রহণ করেনি কোনদিন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ জাতীয় পতাকার ভাবাদর্শের চরম বিরোধী আর এস এস। জাতীয় পতাকার সাথে আমাদের আবেগ, স্বপ্ন, ভালবাসা, প্রেম জড়িয়ে আছে। কারণ এ তো আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্ত ও হাড় দিয়ে তৈরি হয়েছে। তাদের অস্থিমজ্জায় তৈরি হয়েছে জাতীয় পতাকা। জাতীয় পতাকা এক উচ্চতম মানবিক সামাজিক জীবনের প্রতি আমাদের অভিলাষকে সদর্পে ঘোষণা করে। এই পতাকা বহিবার শক্তি আমাদের অর্জন করতে হবে। এই পতাকাকে বুক আগলে রক্ষা করতে হবে। কারণ আমাদের অনেক দূর যেতে হবে । স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বপ্ন ও শপথকে বাস্তবায়িত করার জন্য। একই সাথে যারা জাতীয় পতাকার আদর্শে বিশ্বাস করে না, জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে যাদের কোন যোগদান নেই, যারা ভারত বর্ষের অন্তরাত্মাকে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত করছে, তাদের সামনে তর্জনী তুলে আমাদের বলতে হবে জাতীয় পতাকা বহন করার অধিকার তোমাদের নেই। পতাকার শুদ্ধতা , পবিত্রতা ও সম্ভ্রম রক্ষার দায়িত্ব আমাদের।