ত্রিপুরার সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা আজ বিপন্ন
পুরুষোত্তম রায় বর্মন
তিস্তা শিতলাবাদ জেলে। অপরাধ ন্যায়ের জন্য লড়াইয়ে নির্যাতিতদের পাশে থাকা। ক্ষমতার বিরুদ্ধে, ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, প্রশ্ন তোলার সাহসিকতা ও 'উদ্ধত্যের' জন্য। অপরাধ মেরুদন্ড বিক্রি না করা। শিরদাঁড়া টানটান রাখা। মহম্মদ জুবের জেলে। অপরাধ মিথ্যাকে ছিন্নভিন্ন করে সত্যকে দিনের আলোর সামনে আনা। তাপস কুমার দাস জিবি হাসপাতালের চার তলায় অর্থপেডিক বিভাগে শয্যাশায়ী। মাথায় ব্যান্ডেজ। দুহাত ভেঙ্গে গেছে। দুহাতে ব্যান্ডেজ। ৬৪ বছর বয়সী সাংবাদিক, স্যান্দন পত্রিকায় কাজ করেন। নিউজ ডেস্কে। হাসপাতালের শয্যা বর্তমান ঠিকানা। পত্রিকা অফিস থেকে তিন জুলাই রবিবার রাতে বাড়িতে ফেরার পথে সার্কিট হাউসের সামনে দুর্বৃত্তদের আক্রমণের মুখে পড়েন। পরিকল্পনা করে ছক মাফিক আক্রমণ। অপরাধ, স্যান্দন পত্রিকা সরকারের বিরুদ্ধে খবর এখন চাপা দেয় না। সামনে টেনে আনে। তাই স্যান্দন পত্রিকার সাংবাদিকের মাথা ও হাড়গোড় ভেঙ্গে দাও। সারা রাস্তা জুড়ে সিসিটিভি। সার্কিট হাউস ভি আই পি দের অরণ্য। তারপরও দুর্বৃত্তদের সুলুক সন্ধান পুলিশ খুঁজে পায় না। এখন অব্দি কোন গ্রেপ্তার নেই। তাপস বাবুকে দেখতে আমি আর কৌশিক পাচ জুলাই জি বি হাসপাতালে যাই। তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনি। তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছি। তাকে জানিয়েছি তার পাশে আমরা রয়েছি। তাপস বাবুর মনোবল এখনো শক্ত। উনি জানিয়েছেন কলমের লড়াই চলবে। সারা দেশে এবং রাজ্যে গণতন্ত্রহীনতার এক ভয়ংকর সময়ে আমরা আছি। গণতন্ত্র চরমভাবে আক্রান্ত। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা আজ বিপন্ন। ত্রিপুরাতে সাংবাদিকদের উপর আক্রমণের ঘটনা ক্রমবর্ধমান। একদিকে প্রশাসনকে ব্যবহার করে সংবাদ মাধ্যমের উপর বিভিন্ন রকম চাপ সৃষ্টি করা, কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা, মিথ্যা মামলা ও সাজানো মামলায় সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার। অন্যদিকে দুর্বৃত্ত বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ ও প্রশাসন নিশ্চুপ নীরব দর্শক। আমরা টিএইচ আর ওর পক্ষ থেকে তাপস কুমার দাসের উপর আক্রমণকারী দুর্বৃত্তদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে সাজা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি । সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের উপর আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক প্রতিবাদ তুঙ্গে তুলতে হবে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্রহীনতার অবসানের জন্য।