সিধাই থানার নিস্পৃহতার বলি যুবতীর অগ্নি ঝলসানো মৃতদেহ, এ তো ১৯৯০-র পুনরাবৃত্তি
প্রদীপ চক্রবর্তী
এ তো ১৯৯০-র পুনরাবৃত্তি। ওই সময় যেমনটা হয়েছিল এখন ঠিক তেমনটাই হচ্ছে, একই কায়দা, কৌশল। এরা তো কাউকে পরোয়াই করেনা, না থানা, পুলিশকে।বলি করবেই বা কেন? এদের মুইল্লা দাদা, সিকি থেকে এক্কেবারে হাফ, ফুল তেনা, থুক্কু ফুল নেতা রয়েছে। দাদা আছে তো চিন্তা কি? যা খুশী কর, যাকে খুশি তাকে মার, দুহাতে কামাও, মিছিলে যাও। ব্যস হয়ে গেল।
এভাবেই চলছে গোটা রাজ্য। যাকে বলা হয় বিকাশ, প্রগতি রাজ্য। তরতর করে বিকাশ হচ্ছে, কখনো লাফিয়ে লাফিয়ে, তা লং বা হাই জাম্প হউক। না হলে কি সাত থেকে এক এ পৌঁছে, তাও আবার জোয়ার বইছে, ভাটার তো প্রশ্ন নেই। সব দিকেই জোয়ার। এই যে মেয়েটাকে আগুনে ঝলসিয়ে মারা হল, তা কোন সভ্যতা, বিকাশের পরিদায়ক? এটা কোথায় হয়েছে,কোন বিধানসভা নির্বাচনী ক্ষেত্র এলাকায়? এসব প্রশ্ন উঠবেই সঙ্গত কারণেই। জোট রাজত্বে (কংগ্রেস-যুব সমিতি) সুধীর রঞ্জন মজুমদার তখন মুখ্যমন্ত্রী। সবিতা দেবনাথ নামে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে বর্বর ভাবে ধর্ষণ করে গনরাজ চৌমুহনী এলাকায় হত্যা করা হয়েছিল। কারা এই ঘৃন্য ঘটনায় যুক্ত তা অনেকেই জানেন। আবার এক অংশ জেনেও না জানার ভান করে আছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল সদর উওরে যে ছাত্রীকে আদিম হিংস্র মানবিকতার মানসিকতা নিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হল, তার সাথে কি তাকে আটক করা হয়েছে সে একাই যুক্ত? এই বয়সের ছেলে এমন বর্বর ভাবে হত্যা করতে পারল? না এই কান্ডের সাথে রাঘব বোয়াল রয়েছে অন্তত স্হানীয়ভাবে? পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমান কিন্তু বলছে তদন্ত যদি দ্রুত হয়, এবং নিরপেক্ষ হয় তাহলে জালে উঠে আসতে পারে আরো কিছু স্হানীয় পূটি,বায়িম আর লাটি। টান দিলেই রুই কাতলা বেরিয়ে আসলেও আসতে পারে।
সিধাইর রাঙ্গাছড়ার হতভাগা নিহত যুবতীর বাড়ীর লোকজনের সাথে সিধাই থানার দূ্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জুড়ে দিয়ে সঙ্গত ভাবেই বলা যেতে পারে যদি ওইদিনই পুলিশ ময়দানে নামত তাহলে হয়ত এই হত্যাকাণ্ড নাও ঘটতে পারতো। কেননা মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ধরে পুলিশ পৌঁছে যেতে পারত ওই যুবতীর কাছে। উদ্ধার করতে পারত তাঁকে। তাঁকে অন্তত প্রানে বাঁচানো যেত। অপরাধীকে গারদে পুড়তে পারত। অভিযোগ সিধাই পুলিশ সে পথে হাটেনি, বরং গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে চলেছে। কেন এমনটা হল? কেন পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ নিয়ে ছুটে যেতে পারেনি? কি উওর দেবে সিদাই পুলিশ? এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হতে পারে আপাতত এর উওর। ওই যুবতীর প্রান তো আর ফিরে পাওয়া যাবেনা। একটি যুবতীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা যে কত যন্ত্রনা কাতর তা ভাবলে গা শিউরে উঠে।
"কর্মতৎপর " শিক্ষামন্ত্রী রতন বাবু তো সদর উত্তরাঞ্চল দেখভাল করে থাকেন। তিনি পুলিশের এই ধরনের ভূমিকা নিয়ে কি বলবেন বা ব্যবস্হা গ্রহন করবেন? তিনি তো আবার আইনমন্ত্রী ও বটে।
রাঙাছড়ার ঘটনা কি বিক্ষিপ্ত ? বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখার কোন অবকাশ নেই। এই ঘটনা কিন্তু সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে যদি বলা হয় তা কি ভূল বলা হবে?
(লেখক প্রবীন সাংবাদিক)