ড্রাগসের স্বর্গ রাজ্য ত্রিপুরা ? - দ্বিতীয় পর্ব
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রশ্ন হচ্ছে ড্রাগস বানিজ্যের এত রমরমা কিভাবে হয়েছে বা হচ্ছে, যেখানে প্রায় সর্বত্র থানা পুলিশ রয়েছে, রয়েছে টিএসআর, সিআরপিএফ, রয়েছে এদের দিন রাতের টহলদারি,বা নজরদারি?তদোপরি রয়েছে প্রশাসন, তাদের ব্লক ভিত্তিক অফিস,এক দঙ্গল অফিসারের দল,আর শাসক দলের গ্রাম থেকে শহরের তথাকথিত মনসবদার, হোমড়া চোমড়া কর্ম কর্তারা।পাড়া থেকে গ্রাম ,পঞ্চায়েত থেকে ব্লক অফিসে বাহারী গাড়ীতে চলেন এইসব মাফলার জড়ানো কর্মকর্তারা। এদের ঘুরঘুর করতে দেখা যায় আউটপোষ্ট,থানা,সিআই, এসডিপিও,এসপি অফিসের মাঝে ও সামনে।তবে কেন ড্রাগস বানিজ্যের এত রমরমা? এদের তো সামাজিক দায়বদ্ধতা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে সরকারের ভাবমূর্তি ধরে রাখা।
না,এরা যেমন এসবের ধারেকাছে নেই তেমনি নেই তথ্য সরবরাহ করা পুলিশের কাছে। অভূতপূর্ব সব ব্যাপার স্যাপার এদের/ওদের।
যে মুখ্য প্রশ্ন টা এবং তা সঙ্গত সেটা হল কিভাবে ড্রাগস বানিজ্যের এত রমরমা হয়েছে? যেখানে থানা পুলিশ রয়েছে রাজ্যের প্রায় সর্বত্র এবং সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। বরং যদি বলা হয় পুলিশের সংখ্যা কিন্তু গিজগিজ করা। তাহলে কিভাবে ড্রাগস থাবা বসাচ্ছে রাজ্য জুড়ে? হ্যাঁ,এটাও ঘটনা যা ধরা পড়ছে বা আটক হচ্ছে তা কিন্তু পুলিশ যেমন করছে তেমনি করছে বিএসএফ।তবে বিএসএফের তৎপরতা বা সাফল্য কিন্তু রাজ্য পুলিশ থেকে অনেক গুন বেশি। অন্তত পারিপার্শ্বিক তথ্য সেরকমই বলছে।
লাখো টাকার কথা হলো রাজ্য পুলিশের গোপন তথ্য সরবরাহকারী সংস্থার কর্মকর্তারা যাঁরা আছেন তাঁরা যদি তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে অধিকতর তৎপর হয়ে উঠতে পারত ,তাহলে হয়তো বা এই সর্বনাশা বানিজ্যের এত রমরমা হয়ে উঠতে পারতো না বলে তথ্যাভিক্ষ মহলের অভিমত। যথার্থ অভিমত এদের। কেননা রাজ্য পুলিশের রয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ(এসবি),ডিআইবি,ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এদের লোকবল রাজ্যের প্রায় প্রতিটি থানায় রয়েছে। এদের শুধু একটাই কাজ,তাহলো থানা কিংবা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন খবরাখবর পৌঁছে দেয়া। নিয়ম অনুযায়ী কিন্তু এরা সোর্স মানি পেয়ে থাকেন প্রতিমাসে।তা ব্যয় করেই এরা নানা খবরাখবর সংগ্রহ করে থাকে।হলফ করেই বলা যেতে পারে এরা সম্ভবত এদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পাঁচ ভাগ ও পালন করছেন না।যদি এদের খবর সরবরাহের তৎপরতা চল্লিশ শতাংশ ও থাকত তাহলে ড্রাগস বানিজ্যের এত রমরমা হত না।হাত বাড়ালেই সহজলভ্য হত না ইয়াবা, হেরোইন এবং অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য।
একটি সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর হল স্পেশালে ব্রান্চ, ক্রাইম ব্রান্চ ও ডিআইবি।এই সব শাখা যেমন অগ্রিম তথ্য সরবরাহ করে বিপর্যয় রোধ করতে পারে ঠিক তেমনি অপরাধ গোড়াতেই চুরমার করে দিতে পারে। কিন্তু এ রাজ্যে তা হচ্ছে না।যদি হত তাহলে তরুণ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নেশা মুক্ত রাজ্য গঠনের শ্লোগান এতদিনে বাস্তবায়িত হতে পারত। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন বা শ্লোগান বাস্তবায়িত হতে পারছে না সম্ভবত গোয়েন্দা পুলিশের হযবরল অবস্থা জনিত কারণে। গোয়েন্দা পুলিশের তথাকথিত " কর্মতৎপরতা" র দায় ভোগ করতে হচ্ছে রাজ্যের একাংশ তরুণ প্রজন্ম কে।
(পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশে পাচার)