রাতের শহর আগরতলা!
প্রদীপ চক্রবর্তী
এই শহর নাম তার আগরতলা। তিলোওমা হয় নি এখনো। তবে হবে হয়ত বা নিকট ভবিষ্যতে। ভাঙ্গাচোরা চলছে, নালা বড় হচ্ছে, বেআইনী দোকানপাট ভাঙ্গা হচ্ছে। চলছে ড্রজার, জেসেপি আরো কতনা কিছু। গোটা শহর জুড়ে লাগানো হচ্ছে ঢাউস ঢাউস ক্যামেরা, নাম নাকি সিসি ক্যামেরা। আছে স্পিকার সিষ্টেম। আরো কত কিছু। টুং টাং, ঘুর ঘুর শব্দ এদিক, ওদিক। ভিন দেশীদের কথাবার্তা। ওরা কাজ করে। আর! বলবো পরে।
রাতের শহর দেখতে আগে বেরিয়ে পড়তাম। কিন্তু ইদানিং আর বেরুনো হয়নি। কিন্তু আজ বেড়িয়ে পড়লাম।
তখন ৩.৩০ হবে। কুয়াশা আস্তরন বিছিয়ে রেখেছে। দুহাত দূরের কিছু দেখাই যাচ্ছিল না। মঠ চৌমুহনীর মোড়ে তিন/চারটি অটো দাড়ানো। রেল ষ্টেশনের যাএীুর অপেক্ষায়। ঘুটঘুটে অন্ধকার। দেখাই যাচ্ছিল না। স্ট্রীট লাইট অনেক ক্ষেত্রে প্রায় বোবাই হয়ে আছে। হাটতে হাটতে মটরষ্টান্ড।
গোটা এলাকায় নিকষ কালো অন্ধকার। অটো আছে বেশ কটি। তাও রামঠাকুর সংঘ মুখী। ওগুলো যাবে ষ্টেশন, মানে রেল ষ্টেশন।গাড়ির তো দেখাই নেই। থাকবেই বা কেন? এত রাতে কে যাবে? মাঝেমধ্যে দু একটি অটো হুটহাট করে দ্রুত বেড়িয়ে যাচ্ছে। যাএী আছে দু তিন জন করে। রেল ষ্টেশনের ওদিকে যাবে। যাএী যারা ওরা।
হাটতে হাটতে কামান চৌমুহনী,সূর্য চৌমুহনী, পোষ্ট অফিস চৌমুহনী। কিন্তু রাস্তায় আলো প্রায় নেই। যেখানে আছে সেখানেও টিমটিম করে জ্বলছে। অন্ধকার গ্রাস করে আছে। ছোটবড় হোটেলগুলির সামনেও অটো। এক দুজন আবাসিক বেরুচ্ছে।
পশ্চিম থানার প্রাঙ্গণ ও শুনশান। তখন ভোর প্রায় চারটে হবে। শুনশান তো ঽবেই।রাতভর তল্লাসী, পেট্রোলিং, অপস-র ধকল কি কম! বিশ্রাম তো দরকার। চোখ যে বুঝে আসছে। ওরাই তো আমাদের বন্ধু। আমাদের রক্ষা কর্তা।
শুধু থানা কেন, যেদিকে গেছি উদ্দিধারী কমই নজরে পড়েছে। তবে বাইক পেট্রোল আছে। চলছে ওগুলিও। আবার মোড়ে দাঁড়িয়ে ঝুপটি মেরে।এই বাইকগুলো কিছু দিন আগেই দেয়া হয়েছে, ঘটা করে।
পোষ্ট অফিস চৌমুহনী থেকে প্যা রাডাইস। ওরে বাবা অন্ধকার আর অন্ধকার। ভয় গ্রাস করছে যেন। ভয়ে সিটকে উঠছি। মোবাইলের আলোই ভরসা। যদিও মৃত্যু ভয় আজকাল আমায় তাড়া করে না। হাটছি আর ভাবছি সড়ক বাতির এই হাল কেন?
এবার সোজা বটতলা অভিমুখে। না, কারো দেখা পেলাম না। কিছুবাদেই এক দুজন আসতে শুরু হল। স্বপ্নের ফ্লাইওভার আলো আধারীতে দেখে এবার ফেরার পালা। হাটতে হাটতে ফিরে আসছি, ভাবছি আমার স্বপ্নের আগরতলা কবে তিলোওমা হবে! আমরা যে সমৃদ্ধ এিপুরাই চাই। কেননা সবকা সাথ সবকা বিকাশই এখন মূল শ্লোগান।
তবে যে কথাটা বলিনি; সড়কের বিভিন্ন স্থানের ধারে কম্বল মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকাদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সর্ব হারাদের এই সংখ্যাটা বাড়ছেই বাড়ছে।
এই আমাদের আগরতলার হালফিল হালহকিকত।
তবে মোটরষ্টান্ড, বটতলা এলাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামের লোকজনের ভীড় বাড়ছেই। ওরা রিকশা চালায়। গ্রামে নাকি কাজ নেই। হ্যাঁ, কাজতো নেই'ই। থাকলে এদের ভীড় বাড়ত না। ভবিষ্যৎ ই সব কথা বলবে।