সৌমিত্র চট্টোপাধায়ের মৃত্যু সংবাদে আমি শোকাহত, উনার আর আসা হবে না, কথাও হবে না
স্বপন কুমার শুর
তখন ১৯৯৫। আগরতলা পুরানো টার্মিনাল ভবনের ভিআইপি রুম ২ এ এক ভদ্রলোক বসে আছেন।একা একা।আর কেউ নেই। দুপুরের মাঝামাঝি। কলকাতার বিমান ধরার জন্য অপেক্ষা করছেন।আমার কাছে খবর পৌঁছে গেল ভিআইপি র। দেরী না করে সোজা ঢুকে গেলাম সেখানে। পরিচয় দিয়ে শুরু হল কথা।এল ত্রিপুরার নাটক,সংষ্কৃতি,থিয়েটারের প্রসঙ্গ। উপজাতিয় লোক সংস্কৃতি সহ রাজন্য যুগের প্রসঙ্গ।আরো অনেক অনেক কিছু।ত্রিপুরার সংস্কৃতি নিয়ে প্রচন্ড আগ্রহ।উনি বলছেন,আমি শুনছি।আমি যতটুকু পারি বলছি,তিনি গোগ্রাসে শুনছেন।এই করতে করতে প্রায় ৪০ মিনিট।
যাঁর সাথে কথা বলছিলাম,তিনি আর আসবেন না।আর কথাও হবে না কোনদিন।
সেদিন টার্মিনালের ভিআইপি রুম ২ যিনি বসেছিলেন তিনি আর কেউ নন,তিনি বাংলা চলচিত্র জগতের কিংবদন্তী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
আজ তার মৃত্যু সংবাদ শুনে মনে পড়ে গেল সেদিনের কথা। 1995 সালের মাঝামাঝি সময়ে দুপুরের দিকে সৌমিত্র চট্টোপাধায় আগরতলা বিমান বন্দরে আগের পুরানো টার্মিনাল ভবনের ভেতর VIP -- দুই নম্বর লাউঞ্জে একা বসে আছেন কলকাতা গামী বিমানে যাওয়ার অপেক্ষায় । তখন আমি বিমান বন্দরে সাংবাদিকতার কাজে উপস্থিত । (প্রতি দিনই তখন আমি বিমানবন্দরে যেতাম ।) VIP লাউঞ্জে ঢুকে আমি উনার কাছে গিয়ে বসি। পরিচয় দিয়ে উনার সঙ্গে একান্ত ভাবে ত্রিশ মিনিটের মতো নানা বিষয়ে কথা বলি । এক সঙ্গে বসে দু' জনে চা- বিস্কুট ও খাই । উনি এখানে ত্রিপুরার থিয়েটার-- সংস্কৃতি এই সব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন । সে দিন আবার উনার বিমান উড়ান কিছু টা বিলম্ব ও হয়েছিল । তাই সৌমিত্র চট্টোপাধায়ের মৃত্যু সংবাদে আমি শোকাহত ।
উনার আর আসা হবে না।কথাও হবে না।
শোকস্তব্দ আমি ও ত্রিপুরা।