এবার পূজায় সেই আনন্দ কই ?

দেবব্রত চৌধুরী

উৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে। তাও আবার শারদীয়। দূর্গাপূজা বলে কথা। কিছুদিন পরেই বাঙালি আনন্দে মেতে উঠবেন ১২ মাসে ১৩ পার্বণের অন্যতম উৎসব শারদোৎসবে। কিন্তু এবার পুজোর আনন্দে ভিলেন করোনা। এরপরেও সরকারি যাবতীয় নির্দেশিকা মেনে পুজোর আয়োজন করছেন ( কিছু সংগঠন বাদ দিলে) সমস্ত ক্লাব ও উদ্যোক্তারা।

মৃৎ শিল্পীদের একাংশের অভিমত এবছর অসম্ভব ক্ষতির সম্মুখীন হয় তাঁরা। তাঁদের অভিমত মূর্তি তৈরির অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়লেও মূর্তির দাম নিম্নমুখী। অন্যদিকে কোন ক্লাব ও সংগঠনই এবার সরকারি নির্দেশিকা মেনে বড় কাঠামোর প্রতিমা নিতে চাইছেন না। যেহেতু সরকারি নির্দেশিকায় বলে দেওয়া হয়েছে দশ ফুটের বেশি প্যান্ডেল নির্মাণ করা যাবে না। যার ফলে সব পুজো উদ্যোক্তাদের এবার চাহিদা এক কাঠামোর মাঝারি আকারের প্রতিমা।

শহর লাগোয়া লঙ্কামুড়ার বিশিষ্ট মৃৎশিল্পী প্রদীপ রুদ্রপালের স্ত্রী প্রতিমা রুদ্রপাল। উনি জানালেন কোভিডের কারণে অসম্ভব ক্ষতি হয়েছে তাদের। ১২ মাস প্রতিমা নির্মাণ করেই তারা দিনযাপন করেন। কিন্তু এবছর লাভের আশা নেই। তাঁদের আশা আগামী বছর ভালো পুজো হবে সেই আশাতেই একরাশ বুক বেঁধেছেন।

অন্যদিকে আগরতলা শহর থেকে খানিকটা দূরে বেলাবর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন বেলাবর গ্রামের সাতজন মৃৎশিল্পী দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত। তাদের একাংশের স্টুডিওতে দেখা গেছে বড় কাঠামোর মূর্তিগুলি এবছর কেউই অর্ডার নেয়নি। ফলে তাদের আগামী বছর মূর্তির কাঠামো গুলিকে বিক্রি করতে হবে। তাদের সকলের কাছেই দেখা গেছে এক কাঠামোর প্রতিমার চাহিদা বেশি। দীর্ঘ লকডাউনের ফলে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বেশ। তাঁরা চাইছেন সরকার তাঁদের কিছু অনুদান দিক। অন্যদিকে, বেলাবর গ্রামেই প্রায় ২০০ টিরও বেশি পরিবার লক্ষ্মী প্রতিমা নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত। তাদের অভিমত, এবছর দীর্ঘ লকডাউন ও করোনার কারণে লক্ষ্মী প্রতিমার চাহিদা কম। শিল্পীরা মূর্তি তৈরীর করছেন না। তাঁদের বক্তব্য এবার লক্ষীপূজায় বাজারে মূর্তির অকাল দেখা দিতে পারে। ফলে লক্ষী মূর্তির দাম অনেকটা বেশী হতে পারে। এখান থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা শহর, গ্রাম ও মফস্বলের বিভিন্ন বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি হয়। তারা চাইছেন সরকার পুজোর আগে রেগা ও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দিয়ে ভেঙে পড়া অর্থনীতির উন্নয়ন করুক।

তবে যত সংকটই থাকুক দূর্গাপূজা বলে কথা। পূজার আনন্দে গা ভাসিয়ে দিতেই হবে। বছরের মাত্র চার দিন। সবাই সবাইকে নিয়ে ছুটবে,পূজো দেখবে,হৈ হুল্লুড় করবে।

এই আনন্দের জন্যই রাজ্যবাসী নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে। আরক্ষা দপ্তর আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে।

সবার মনে মনে লেগেছে আনন্দের দোলা।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.