রাজনৈতিক সমাবেশ ও করোনা মহামারী
প্রদীপ চক্রবর্তী
গোটা বিশ্বে যখন ৩০০ টিরও বেশি দেশ একযোগে মারাত্মক ভাইরাস মোকাবেলায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তখন ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থানে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নীতি নির্দেশিকা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যাবতীয় নির্দেশাবলী অমান্য করে বাম, ডান, রাম দলের নেতৃত্ব বিভিন্ন যোগদান জনসভা, মিছিল, আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে পোস্ট অফিস চৌমুহনীর সামনে কংগ্রেসের কৃষক সম্মেলন, ৯ ই অক্টোবর সাত দফা দাবিকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশার ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে মিছিল, কৃষকদের স্বার্থে তৈরি কৃষি বিল এর সমর্থনে গন্ডাছড়ায় ধন্যবাদ মিছিল সমাবেশ, এবং অন্যদিকে চলছে এডিসি নির্বাচনকে সামনে রেখে পাহাড়ে বিভিন্ন যোগদান পর্ব। অর্থাৎ প্রতিনিয়ত প্রতিদিন ত্রিপুরায় রাজনৈতিক কোনো না কোনো কর্মসূচি চলছে এবং এর একটিতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। যার দরুন গা ছাড়া দিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। রাজনৈতিক দলগুলির এই ধরনের দায়সারা মনোভাব চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৪ মার্চ প্রথম লকডাউন এর ঘোষণা দিয়েছিলেন কিন্তু দেখা যাচ্ছে আনলক এর পঞ্চম পর্যায়েও ত্রিপুরার মানুষ মাস্কই পরিধান করছে না। দেশ মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ত্রিপুরায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩১২ এ পৌঁছালো। যদিও এখন অনেকটাই মৃত্যুর রাশ কমেছে। প্রশাসন মাস্ক পরিধানের উপর জোর দিয়ে ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর মাস্ক এনফোর্সমেন্ট ডে পালনের উপর জোর দিচ্ছে এবং পরবর্তী সময় অক্টোবর মাসের প্রতি শনিবার মাস্ক এনফোর্সমেন্ট ডে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে কিছুদিন পেরোলেই দুর্গাপুজো হবে অন্যান্য বছরের চেয়ে আয়োজনে ছোট যার দরুন কেনাকাটার বাজারে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির দায়- দায়িত্বহীনতা এবং জনসাধারণের একাংশের দায়িত্বহীনতা এক চরম অশনি সংকেত বলে মনে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এভাবে চলতে থাকলে ত্রিপুরা নভেম্বর-ডিসেম্বর এ উত্তরপূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থানে চলে আসতে পারে।
আশঙ্কা তো আশঙ্কাই। তবে গোটা দেশেই করোনা আরো ভয়াবহ রূপে আসতে পারে । ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে করোনা নুতন আকারে ঝাঁপিয়ে পড়তে শুরু করেছে।
এই সব আশঙ্কা মাথায় রেখেই সরকার যেমন পদক্ষেপ নিচ্ছে ঠিক জনসাধারণ কেও অধিকতর সচেতন হতে হবে। অন্যথায় সম্ভাব্য ভয়াবহ বিপদ থেকে নিস্তার পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
এরাজ্যে কোভিড চিকিৎসায় প্রথমদিকে অব্যবস্হা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অর্থাৎ স্বাভাবিক হয়। যে কারনে মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে।