ফিরে দেখা সে সব দিন
প্রদীপ চক্রবর্তী
মাঝখানে কবছর প্রায় অন্তরালে থেকে হঠা্ৎ করেই সংবাদ শিরোনামে এলেন তিনি।যিনি ছিলেন দীর্ঘ পাঁচ বছর শিক্ষামন্ত্রী। বলছি জোট আমলের শিক্ষামন্ত্রী অরুন করের কথা।বাড়ী খোয়াই র লালছড়া গ্রামে।বেলছড়া তে রয়েছে রাবার বাগান।
খোয়াই শ্রীনাথ বিদ্যানিকেতন র প্রধান শিক্ষক ছিলেন।তার ভয়ে বাঘে,গরুতে এক ঘাটে জল খেত। তিনি স্কুল গেলে মূহুর্তে ই সব চুপচাপ। মাঝেমধ্যে ডেকে নিতেন এক এক করে শিক্ষক কে।এরা বেরিয়ে আসতেন অনেকটাই ফ্যাকাশে করে। ছাত্র ডাক পড়ৃলেই চক্ষু কপালে উঠার উপক্রম।যা কিছু হয় সব ই শিক্ষা স্কুলের সার্থে। গুরুগম্ভীর কন্ঠস্বরে সবাইকে তটস্হ থাকতে হয়।
স্কুল জীবনে ঠিক তেমন ভাবে রাজনীতি করেননি। পরবর্তীতে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যদূপ্রসন্ন ভট্টাচার্য র সাথে যোগসূত্র। সেই উত্থান র শুরু, অর্থাৎ রাজনীতিতে পথচলা। সেই থেকে তার ছুটতে হয়, সোনাতলা,পহড়মূড়া, জাম্বুরা,গনকী ,সিঙ্গিছড়া,হাতকাটা,পদ্মবিল এ।দলীয় সভা হত তখন।গ্রামের লোকজন উনার মিটিং এ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।উনি সম্পদ, সম্পত্তি তে বলিয়ান হলেও এমন কোন ব্যবহার কারো সাথে করতে শুনিনি কোনদিন। হ্যাঁ,এটা ঠিক অরুন বাবু শুরু করলেন সকাল, দুপুর, সন্ধ্যায়,রাতে গ্রামে গ্রামে মিটিং।প্রবল জনজোয়ার উঠছে।অফিসিয়াল যাঁরা ছিলেন তাঁরা কিন্তু নানা ভাবে সাহায্য করে গেছেন।কি থানা, পুলিশ সবাই অরুন বাবুর কথা বলে।জোট মন্ত্রী সভায় সবাই উনাকে সন্মান করতেন,স্যর বলে সম্বোধন করতেন। ঝামেলা এড়িয়ে কাজকরা পছন্দ করতেন তিনি। চাকুরী বাছাই পর্বে কোটালী প্রথা পলিটিকস উনার কাছ করতে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করেছে।
আমাকে নিত্যদিন গাড়ী পাঠিয়ে নিয়ে যেতেন। বহু কথা বলেছেন,যে গুলি আবলা থাকা ভাল। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব অন্তত ৩/৪ বার মিটিয়ে দিয়েছি। একবার তো লাগে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন।আমি না থাকলে হয়তবা ইস্তফা দিতেন।দূএকজন তো চাইছিল অরুন বাবুর ইস্তফা। কিন্তু আমাকে সাংবাদিকতার ধারেবাটেসফল ভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।শিক্ষা দপ্তর প্রথম থেকেই ভালো ভাবে পরিচালনা করছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, মন্ত্রী অরুন কর।কাছে থেকে দেখেছি তাৎকালীন মন্ত্রী সভার দুএকজন আমাদের স্যার কে তাঁর প্রতি কাছে বাঁধা সৃষ্টি করেছে।
একদিন ভোর বেলায় আমার বাড়ীতে এসে হাজির। অবাক হয়ে দেখি বাড়ির বুঝতে পারছি সারা রাত ঘুমোতে পারেননি। এসকর্ট পাঠিয়ে মন্ত্রী সোফায় গা এলিয়ে দিয়েছেন।এমন আরো ৩/৪দিন হয়েছে।
একটা কথা বলতে বাধা নেই, অরুন বাবুর সরকারী কাজে, বিশেষ করে অফা্র তৈরির সময় যারা বাধা সষ্টি করেছে সে দুজন এখনো প্রভাবশালী এবং দুই বিপরীত মুখী শিবির।এ আছে।একজন সজ্জন, শিক্ষিত ব্যক্তিকে ,যার অর্থ র অভাব নেই,নেই বিত্ততার অভাব তাকে শেষের দিকে এরা কাজ ই করতে দেয়নি।
প্রশ্ন জাগতে ই পারে দূর্জনদের সাথে কে বাঁধবে ঘর।
সজ্বন,সৎ, নিপাট ও উচ্চ শিক্ষা য় শিক্ষিত অরুন করের মত রাজ্যের রাজনীতে আর হয়ত আসবেই না।অরুন অরুন জ্বালিয়ে গেছে,শিখা জ্বলবেই ,থামবে না।