সরকারের সব চেস্টার পরেও ত্রিপুরা জুড়ে চিকিৎসা সংকট বেড়েই চলেছে
প্রদীপ চক্রবর্তী
ত্রিপুরা বিধানসভার সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনে দুটি বিল অনুমোদিত হয়েছে আইনে রূপান্তরের জন্য। একটি বিল হল সরকারি সম্পত্তি রক্ষা সংক্রান্ত। বিলটি এখনো পড়ে দেখার সুযোগ হয়নি। তবে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কোন আন্দোলনের ফলে যদি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয় তবে যারা প্রত্যক্ষ ও ভারতীয় সংবিধানের ৬ষ্ঠ তফসিলের বিধান অনুসারে ১৯৭৯ সালে ত্রিপুরা উপজাতি অঞ্চল স্বশাসিত জেলা পরিষদ (টিটিএএডিসি) আইন ভারতীয় সংসদ দ্বারা পাস হয়। স্বশাসিত জেলা পরিষদ কাউন্সিল গঠনের মূল লক্ষ্য ছিল উপজাতি জনগণকে তাদের শাসন পরিচালনার ক্ষমতা প্রদান এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামগ্রিক উন্নতি সাধন করা যাতে তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য রক্ষা করা যায়। তবে এটি প্রকৃতপক্ষে ১৯৮২ সালের ১৫ই জানুয়ারীতে পুরোপুরি ভাবে ভোটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং নির্বাচিত সদস্যরা ১৯৮২ সালের ১৮ জানুয়ারীতে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে, এটি ভারতীয় সংবিধানের ৬ষ্ঠ তফসিলের অধীনে ৪৯ তম সংবিধান (সংশোধন) আইন, ১৯৮৪ দ্বারা আপগ্রেড করা হয়েছিল; ১৯৮৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে।
দেখা গেছে, এডিসি গঠনের পর ১৯৮২ সাল থকেই রাজ্য সামলানোর ভার যাদের হাতে থাকে অধিকাংশ সময়েই এডিসি-র শাসন ক্ষমতাও তাদের হাতেই ছিল। ২০০০ সালে শুধু একবার রাজ্যস্তরে শাসক বাম দলকে তীব্র সন্ত্রাসবাদী পরিস্থিতির মুখে আইপিএফটি-র কাছে পরাজয়কে মেনে নিতে হয়েছিল। এবারের এডিসি ভোটে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি, আইপিএফটি, জেডিইউ, নবগঠিত তিপ্রা মথা বকলমে টি এস পি ও আইএনপিটি জোট সমানে সমানে লড়াই – এর ময়দানে। রয়েছে ৩৫ জন নির্দল প্রার্থী। ইতিপূর্বে এডিসি-র কোন ভোটেই এতগুলি দল ও এতজন নির্দল প্রার্থী একসাথে লড়াইয়ের ময়দানে ছিলনা। ২৮টি-র মধ্যে ১৮টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা লড়াই-এ আছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিজেপি ও আইপিএফটি-র স্বদলীয় কোন্দল থেকেই জন্ম হয়েছে এতজন নির্দল প্রার্থীর। তাই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে ভোট কাটাকাটিতে এবার কি দুই হাজার সালের পুররাবৃত্তি ঘটবে? নাকি এডিসি ভোটে রাজ্যে যারা ক্ষমতায় থাকে, সেই শাসকদের জয়ের ধারাবাহিকতা এবারও বজায় থাকবে?
স্বশাসিত জেলা পরিষদের শাসন ক্ষমতা একনজরে (১৯৮২-২০১৫)
৯ আসনে এবার জয়-পরাজয়ের ফ্যাক্টর অনুপজাতি ভোটাররা !
ত্রিপুরা স্বশাসিত জিলা পরিষদ নির্বাচনে ২৮টি আসনের মধ্যে এবছর ৯টি আসনে অনুপজাতি ভোটারই জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হতে চলেছে। অর্থাৎ এই নয়টি নির্বাচন ক্ষেত্রে অনুপজাতি ভোটররা যে দলের পক্ষে যাবে, সে দলের প্রার্থীরই জয় নিশ্চিত। ওই নির্বাচনক্ষেত্র গুলি হলো, ১নং দামছড়া-জম্পুই (এসটি), ২নং মাছমারা, ৩নং দশদা-কাঞ্চনপুর, ৬নং মনু-ছৈলেংটা, ৮নং গঙ্গানগর-গন্ডাছড়া, ২২নং কাঁঠালিয়া-মির্জা-রাজাপুর, ২৪নং রাইমাভ্যালি, ২৫নং নতুনবাজার-মালবাসা, ২৮নং শিলাছড়ি-মনু বনকুল।
দামছড়া জম্পুই নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৫৩১৫। এর মধ্যে ১২ হাজারের উপরে ভোটার অনুপজাতি। মাছমারা নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩২,৬২০ জন। এরমধ্যে ২৬,৭২০ জনই অনুপজাতি ভোটার। দশদা-কাঞ্চনপুর নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ৩৩২৩২ জন। এরমধ্যে ১৪ হাজারের বেশী ভোটার অনুপজাতি। মনু-ছৈলেংটা নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটার হচ্ছেন ৩০,৮৬৭ জন। এরমধ্যে ১২ হাজারের উপরে ভোটার অনুপজাতি। কাঁঠালিয়া-মির্জা-রাজাপুর নির্বাচন ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি ভোটার। এই আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ৪১১৪৭। এরমধ্যে প্রায় ৮৫০০ ভোটার অনুপজাতি। রাইমাভ্যালি নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ২৭,৮৬৭ জন। এরমধ্যে প্রায় ৫ হাজার অনুপজাতি ভোটার। নুতনবাজার-মালবাসা নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটার ৩৮,৬২০ জন। এরমধ্যে প্রায় চার হাজার ভোটার অনুপজাতি। শিলাছড়ি-মনু বনকুল নির্বাচন ক্ষেত্রে ৩৭ হাজার ৩৮৮ ভোটার। এরমধ্যে আড়াই হাজারের উপরে অনুপজাতি ভোটার। গঙ্গানগর-গন্ডাছড়া নির্বাচন ক্ষেত্রে মোট ভোটার ২৪,৮৭২ জন। এরমধ্যে অনুপজাতি ভোটার রয়েছে ৩ হাজারের উপরে।
বহু আসনে তিপ্রা মথাও হতে পারে জয় পরাজয়ের বড় ফেক্টর!
পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী এডিসি ভোটে এবার নবগঠিত তিপ্রা দলও বহু আসনে হতে পারে জয় পরাজয়ের বড় ফেক্টর। তিপ্রা প্রধান প্রদ্যোত বিক্রম কিশোরের সুনামিতে এডিসি-র ভোটে এবার বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিজেপি ও তাদের জোট শরিক আইপিএফটি নির্বাচনে বহু আসনে সন্মুখ সমরে বিজেপি, আইপিএফটি ও এন এস পি টি বকলমে তিপ্রা। তিপ্রা পার্টির আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল হিসাবে কোন রেজিষ্ট্রেশন নেই। তাই তিপ্রা মথা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এন এস পি টি-র আনারস চিহ্নে লড়াই করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রদ্যোত কিশোর- এর তিপ্রা মথা বিজেপি-আইপিএফটি সহ সমস্ত অবাম ভোটে হানা দিয়েছে। এডিসি ভোট ঘোষণার আগে প্রদ্যোতের সঙ্গে জোটে থাকার ঘোষণা দিয়ে পরবর্তীতে সমর্থন তুলে নেন আইপিএফটি-র দুই সুপ্রিমো এনসি দেববর্মা ও মেবার কুমার জমাতিয়া। শেষ পর্যন্ত বড় শরিক বিজেপি-র সঙ্গে এডিসি নির্বাচনে 14:14 ও তিনটি আসনে বন্ধুত্বপূর্ন লড়াই-র আসন রফায় যায় বিজেপি। আর এতে যার পর নাই ক্ষুব্ধ হন তিপ্রা প্রধান প্রদ্যোত কিশোর। এর প্রেক্ষিতে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের শ্লোগান তোলে প্রদ্যোত নিজে টাকারজলা আসনে ভোট প্রার্থী হয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন আইপিএফটি-র দুই সুপ্রিমো এনসি দেববর্মা ও মেবার কুমার জমাতিয়াকে। বাদবাকি আসনগুলির পাঁচটি আইএনপিটি-কে এবং অন্য ২৩টি আসনে এন এস পি টি-র সিম্বলে লড়াই করছে তিপ্রা। তাই বলা হচ্ছে পাহাড় ভোটের অনেক হিসাব পাল্টে দিতে পারে পদ্ম-টাক্কল ও হাতুড়ি-কাঁচির বিপরীতে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবীদার প্রদ্যোত-এর ভোট চিহ্ন আনারস।
প্রচারে আইপিএফটি বলছে সেই তিপ্রাল্যান্ডের কথাই!
শাসকদল বিজেপি এডিসি নির্বাচনে উন্নয়নের কথা বললেও তাদের শরীক দল আইপিএফটি বলছে সেই তিপ্রা ল্যান্ডের কথাই! আইপিএফটি এখনো কোন লিখিত প্রতিশ্রুতি না দিলেও বিজেপি ইতিমধ্যেই ২৭ খানা প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের কথা বলে বিজেপি উপজাতি এলাকায় ভোট চাইছেন। কিন্তু আইপিএফটি-র এখনও প্রধান দাবী তিপ্রাল্যান্ড। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে তিপ্রা ল্যান্ডের দাবি ত্রিপুরার উপজাতিদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজন। এখানে বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন উঠেছে, অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হলে কেন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এই তিন বছরে দলের তরফে তিপ্রা ল্যান্ডের দাবি নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় আইপিএফটি দলের মন্ত্রী, এম এল এ-রা এতদিন একটি কথাও বলেননি ? কেন রাজ্য সরকারের শরিকদল হয়েও এডিসি-র উন্নয়ন প্রসঙ্গটি বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে কখনও জোড়ালো হয়নি? আইপিএফটি- বিরোধীরা এই প্রশ্নটি স্বাভাবিক ভাবেই ভোট প্রচারে তোলে ধরছেন। আর তাতে বহু জায়গাতেই খানিকটা ব্যাকফুটে বিজেপি-র শরীক দল আইপিএফটি।
ছোট সভা ও বাড়ী বাড়ী প্রচারই বামপ্রার্থীদের হাতিয়ার !
শাসক দলের বাইক বাহিনী দুষ্কৃতীদের হামলা হুজ্জুতির ভয়ে বাম প্রার্থীরা প্রকাশ্যে খুব বেশী বড়সড় সভা করছেন না এডিসি এলাকায়। তবে বামপন্থীদের এই মুহুর্তে এরাজ্যে প্রচারের বড় মুখ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী, জিতেন চৌধুরী ও সদ্য প্রাক্তন এডিসি-র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা বেশ কিছু জায়গায় বড় সভা করছেন। এছাড়া এডিসির অধিকাংশ আসনেই বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছেন বাম প্রার্থীরা। বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, মানুষের কথা শুনছেন এবং বিভিন্ন সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পরিশ্রুতি দিচ্ছেন। শীর্ষ বাম নেতৃত্ব নিজেরাও বাম প্রার্থীদের নিয়ে বাড়ী বাড়ী প্রচারে যাচ্ছেন। এবং গত তিন বছরে যে বিজেপি আইপিএফটি তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করেনি এটাও বলছেন। বিজেপি আই পি এফ টি ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বদলীয় কোন্দল লেগেই রয়েছে। বাম প্রার্থীরা প্রচারে গিয়ে আরও বলার চেষ্টা করছেন যে নিজেদের মধ্যে মারামারী করে কিভাবে উপজাতিদের উন্নয়ন হবে? সিপিএম- এর মতে, বিজেপি-আইপিএফটি আর অধুনা তিপ্রা মথা নেতারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে তিপ্রাল্যান্ড বা গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড- এর কথা বলছেন। আদতে যে উপজাতিদের সার্বিক উন্নয়ন সম্পর্কে এসব নেতারা ভাবেন না এসব কথাও বাম প্রার্থী ও নেতৃত্ব ভোট প্রচারে গিয়ে বেশী করে বলার চেষ্টা করছেন ।
এডিসি ভোটে এবার ৬ কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থীরা বড় ফেক্টর!
পাহাড় ভোটে এবার ২৮টি-র মধ্যে ১৮টি কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থীরা লড়াই-এর ময়দানে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬টি আসনে নির্দল প্রার্থীরা বড় ফেক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অন্যতম ৬টি কেন্দ্র হচ্ছে ১নং দামছড়া-জম্পুই, ৩নং দশদা-কাঞ্চনপুর, ১০ নং কুলাই-চাম্পাহাওর,
23 নং অম্পিনগর, ২৪নং রাইমাভ্যালী, ২৭নং পূর্ব মুহুরীপুর-ভুরাতলি। ফলে লড়াই এবার জমজমাটই শুধু নয়, হাড্ডাহাড্ডি হতে চলেছে একথা ডান বাম সব রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই বলছেন। তাছাড়া বাদবাকি অধিকাংশ আসনে চতুর্মুখী লড়াই হবে। ভোটাররাও তাই নানা শিবিরে বিভক্ত। তাই কার দখলে যাবে খুমুলুঙ, আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে অনুপজাতি ভোট যেদিকে ঝুকবে পাল্লাভারী হবে তাদেরই। তাই ব্যাপক ভোট ভাগাভাগির কারনে এবারও কি ২০০০ সালের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কিনা এই সংশয়ও অনেকে প্রকাশ করছেন!
১নং দামছড়া-জম্পুই আসনে বিজেপি প্রার্থী-র সমস্যা নির্দল প্রার্থী !
দামছড়া-জম্পুই আসনে অফিসিয়েলি বিজেপি সমর্থিত আইপিএফটি-র ভোট প্রার্থী জিরেন্দ্র রিয়াং। তার ভোট চিহ্ন টাক্কাল। কিন্তু বিজেপি-র স্থানীয় নেতারা তাকে সমর্থন না করে ‘নির্দল’ প্রার্থী ডাইক কুমার রিয়াং-কে সমর্থন করছেন। তার ভোট চিহ্ন ফুলকপি। অর্থাৎ দামছড়া-জম্পুই আসনে বিজেপি
আনফিসিয়েলি ফুলকপি চিহ্নে লড়াই-এ অবতীর্ণ হয়েছেন। এই কেন্দ্রে তিপ্রা মথা-র প্রার্থী ভবরঞ্জন রিয়াং। তার ভোট চিহ্ন আনারস। জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী চন্ডীরাম রিয়াং। তার ভোট চিহ্ন হাত এবং বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী রাজেন্দ্র রিয়াং। ভোট চিহ্ন কাস্তে-হাতুড়ি তারকা। অর্থাৎ লড়াই হচ্ছে পঞ্চমুখী।
দামছড়া-জম্পুই কেন্দ্রে যে শাসক জোট আড়াআড়ি দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এটা আজ ঐ আসনের সবাই জেনে গেছেন। অর্থাৎ এই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে রয়েছেন বিজেপি-র সিংহভাগ স্থানীয় নেতা-কর্মী। অপরদিকে জোটের অফিসিয়াল প্রার্থী হচ্ছেন আইপিএফটি-র জীরেন্দ্র রিয়াং।
বিজেপি-আইপিএফটি-র প্রার্থী জিরেন্দ্র রিয়াং- এর অভিযোগ বিজেপি-আইপিএফটি’র প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশকে অমান্য করে নির্দল প্রার্থী এখনো বিজেপি অফিস ব্যবহার করে প্রচার চালাচ্ছেন।
৩নং দশদা-কাঞ্চনপুর আসনেও নির্দল প্রার্থী বিজেপি-র চিন্তা বাড়িয়েছে!
স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে কাঞ্চনপুর মহকুমার ৩নং দশদা-কাঞ্চনপুর সংরক্ষিত কেন্দ্রে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ছয়জনের মধ্যে প্রাক্তন এমডিসি ললিত দেবনাথ এবছরও সিপিএম দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শাসক বিজেপি দলের হয়ে রয়েছেন বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজিত প্রার্থী শৈলেন্দ্র নাথ। আইপিএফটি দল জোটে থাকার কারনে এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। এই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মহকুমার সাতনালা এলাকার বাসিন্দা রামচন্দ্র নাথ। রামচন্দ্র নাথ ও বিজেপি দলের প্রার্থী শৈলেন্দ্র নাথ ২০১৮ সাল নাগাদ দু’জনেই রাজ্যে পরিবর্তনের জন্য বিজেপি দলের হয়ে একসাথে রাজনীতির ময়দানে ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে যেতে জেলা পরিষদ নির্বাচনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এখানে মুল লড়াই সিপিএম দল ও বিজেপি দলের মধ্যেই হবে। উভয় দলের পক্ষ থেকে প্রতিদিন মিছিল ও সভা হচ্ছে। মহকুমার প্রতিটি হাটবাজারে উপস্থিত থেকে দুই দলের প্রার্থীরা ভোট চাইছেন। কোথাও উঠান সভা ও পথসভাও করা হচ্ছে। তবে নির্দল প্রার্থী রামচন্দ্র নাথ প্রকাশ্যে কোন মিছিল ও মিটিং শুরু করেননি। তিনি নীরবে প্রচার শুরু করেছেন। তবে তার নীরব প্রচার ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে বাঙালি অংশের ভোটারদের মধ্যে। তিনি কাঞ্চনপুর মহকুমাকে বিধানসভার যে কোন সাধারন আসনের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন। মহকুমার বাঙালি অংশের ভোটারদের মধ্যে এই দাবি বেশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এছাড়া এই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেস দলের পক্ষে জ্যোতিব্রত দেব। তিপ্রা দলের পক্ষে হেমন্ত চাকমা ও জেডিইউ-এর পক্ষে হেমালি রিয়াং।
২৪নং রাইমাভ্যালীতেও নির্দল প্রার্থীই বিজেপি-র বড় সমস্যা !
ধলাই জেলার লংতরাইভ্যালি মহকুমার ২৪নং রাইমাভ্যালি এডিসি আসনেও বিজেপি’র অফিসিয়াল প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্দল হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন বিকাশ চাকমা। তিনি বিজেপি-র ধলাই জেলার সহ সভাপতি ছিলেন। স্থানীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী রাইমাভ্যালি কেন্দ্রে প্রার্থী পদের দাবিদার ছিলেন বিকাশ চাকমা। কিন্তু দল তাকে প্রার্থী করেনি। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিকাশ চাকমা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হলেও তিনি অবস্থানে অনড় থাকেন। শেষে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ এনে তাকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। দলীয় এই সিদ্ধান্তের ফলে আগুনে ঘৃত্যহুতির মতো ঘটনা ঘটেছে। বিকাশ চাকমা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে ভোটকেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে কোমর বেঁধে প্রচারে নেমেছেন। তিনি নিজেকে প্রকৃত বিজেপি প্রার্থী দাবি করে ভোট প্রার্থনা করে চলেছেন। ধলাই জেলার বিজেপি-র প্রাক্তন সহ সভাপতি বিকাশ চাকমার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তিও কম নয়। তার অনুগামীরাও প্রচারে শামিল হয়েছেন। তাতে রীতিমতো বিপাকে পড়ে গেছেন বিজেপির অফিসিয়াল প্রার্থী পতিরাম ত্রিপুরা। এককথায় বলতে গেলে ধলাই জেলার গণ্ডাছড়ার ২৪ নং রাইমাভ্যালি কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী বিজেপির জন্য বড় ধরনের ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২৭নং মুহুরীপুর-ভুরাতলী আসনেও বিজেপি-আইপিইএফটি বিবাদ!
রাজ্যের এডিসি নির্বাচনে বিজেপি ও আইপিএফটি দলের মধ্যে রাজ্য নেতৃত্বরা মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা ও দিল্লীর নির্দেশে জোট গঠন করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করলেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে উঠে আসছে স্বদলীয় বিরোধও শরিকি বিবাদের চিত্র। তার থেকে ব্যতিক্রমী নয় এডিসি-র ২৭নং পূর্ব মহুরিপুর ভূরাতলী কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্র থেকে বিজেপি-আইপিএফটি জোটের পক্ষ থেকে আইপিএফটি দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন যুব আইপিএফটি এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভপতি ধনঞ্জয় ত্রিপুরা। আর এই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী রকি ভিক্টর ত্রিপুরা ৪০ সাব্রুম মণ্ডল, ৩৯ মনু মণ্ডল ও ৩৭ ঋষ্যমুখ মণ্ডলের নেতৃত্বদের কাজে লাগিয়ে নির্দল হিসাবে প্রার্থী হয়েছেন। দক্ষিণ জেলার ২৭ নং পূর্ব মুহুরিপুর ভূরাতলী কেন্দ্রের বিজেপি আইপিএফটি জোটের প্রার্থী ধনঞ্জয় ত্রিপুরাকে হারিয়ে দিয়ে দক্ষিণ জেলাকে আইপিএফটি শূন্য করার পণ করেছেন বিজেপি-র এই লবির নেতারা। বিজেপি আইপিএফটি জোটের প্রার্থী ধনঞ্জয় ত্রিপুরাকে দক্ষিণ জেলা বিজেপি সভাপতি শংকর রায় নিজেও সাহায্য করেছেননা। ধনঞ্জয়ের অভিযোগ শ্রী রায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল ফোন কল রিসিভ করছেন না। ধনঞ্জয় ত্রিপুরা এব্যাপারে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মার কাছেও অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। আর শরিকি জোটের বিবাদকে কেন্দ্র করে গত ১৮ই মার্চ ৩৯ মনু মণ্ডলের অন্তর্গত সিন্ধুকপাথর এডিসি ভিলেজের নাথ পাড়াতে নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে যাওয়া বিজেপি কর্মীদের সাথে আইপিএফটি দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে খণ্ড যুদ্ধ বাঁধে যাতে বেশ কয়েকজন আহতও হন। এছাড়াও ১৯ মার্চ ঋষ্যমুখ বিধানসভা কেন্দ্রের মনিরাম বাড়িতে দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং তিনটি বাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পাল্টাপাল্টি এই হামলা সন্ত্রাসে আহত হন বেশ কয়েকজন।
২৭নং পূর্ব মুহুরীপুর-ভুরাতলি আসনে চলা এই অস্থির পরিস্থিতির প্রভাব ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে পার্শ্ববর্তী ২৮নং শিলাছড়ি মনুবনকুল আসনেও। এই কেন্দ্রে শাসক জোটের প্রার্থী হলেন বিজেপি’র। ভোট ঘনিয়ে আসতেই এই কেন্দ্রেও তৈরি হয়েছে স্বদলীয় জটিলতা। নির্বাচনের আগে বিজেপি’র বহু পুরোনো কর্মীও দলের সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছেন। তার উপর ২৭নং কেন্দ্রে অটো মার্কা নির্দল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছে আইপিএফটি। অনেক বিজেপি কর্মীরা আইপিএফটি বিরোধী। সেই সূত্র ধরে ২৮নং আসনেও যদি আইপিএফটি সেই খেলা খেলে তাহলে এই কেন্দ্রেও পাল্টে যেতে পারে সব হিসাব। আর এর ফলে এই দুই আসনেই শাসক দলের পক্ষে ফলাফলে কোন অঘটন ঘটে গেলে অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবেনা বলে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।
বিক্ষুব্ধ বিধায়কের দরবারে আইপিএফটি-র মন্ত্রী!
১০ নং কুলাই-চাম্পাহাওর কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী ব্রজেন্দ্র দেববর্মা। বিক্ষুব্ধ বিজেপির ভোট ব্রজেন্দ্র অর্থাৎ ফুটবল প্রতীক চিহ্নে যেতে পারে বলে স্থানীয় মানুষের অনেকের অভিমত। কারন এডিসি নির্বাচনে বিজেপি-আইপিএফটি-র সাথে জোটের পর স্থানীয় কিছু বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই-এ নামান ব্রজেন্দ্রকে। পরে প্রদেশ কমিটি দল বিরোধী কার্যকলাপের জন্য বেশ ক’জন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাকে এখানে বহিষ্কার করেছে। পক্ষান্তরে, আইপিএফটির সাথে জোটের বিষয়টি বিধায়ক পরিমল দেববর্মা তথা বিজেপির ধলাই জেলার সভাপতিও প্রথমে মানতে নারাজ ছিলেন। পরিমলবাবুর মান ভাঙতে রাজ্য প্ৰভারী বিনোদ সোনকর, প্রদেশ সভাপতি ডা. মানিক সাহা, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব চপার নিয়ে মহারানিস্থিত পরিমলের বাড়িতে এসেছিলেন। চল্লিশ মিনিট বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফিরে যেতে হয়েছিল তিনজনকে। পরিমলবাবুর বক্তব্য ছিল তিনি আইপিএফটির হয়ে প্রচার করতে পারবেন না। কারণ তিনি ভালো করে জানেন এই কেন্দ্রে আইপিএফটির কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু অবশেষে এক হোক্কায় জল খেলেন পরিমল দেববর্মা আর মেবার কুমার জমাতিয়া। শেষ পর্যন্ত পরিমলবাবুর বাস ভবনে হাজির হন বনমন্ত্রী মেবার জমাতিয়া সহ দলের একাধিক নেতা। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। রাজধানী থেকে একাধিক ফোনে বার্তালাপ হয়। সবশেষে পনেরো জনের একটি নির্বাচনী প্রচার কমিটি গঠন করা হয়। আর এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় জেলা সভাপতি পরিমল দেববর্মাকে। তবে এবার দেখার মন্ত্রী বিধায়কের এই জুটি দলের জন্য কতটুকু সঞ্জীবনী এনে দিতে পারে।
বনমন্ত্রীর স্ত্রী বনাম তিপ্রা মথার প্রার্থী সাংবাদিক কমল কলই-র লড়াই জমে উঠেছে!
ককবরকবাসী সাংবাদিক কমল কলই এবার নির্বাচনে তিপ্রা মথার হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তেলিয়ামুড়া মহারানী কেন্দ্র থেকে। তার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আইপিএফটি দলের প্রার্থী গীতা দেববর্মা। তিনি আবার বনমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়ার স্ত্রী। সুতরাং বহিরাগত এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে শহরের আয়েস ছেড়ে পাহাড় দাপিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। পাহাড়ের লোকজন এই দুই প্রার্থীকে খুব বেশী চেনেন না। ফলে এই নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান কি হবে বা কতটুকু হবে তা ছাড়তে হবে সময়ের হাতেই। কমল কলইকে নিয়ে প্রচারে বের হচ্ছেন খোদ তিপ্রা প্রধান প্রদ্যোত বিক্রম কিশোর দেববর্মা। কমল আবার পাতালকন্যার ঘনিষ্ট। তিপ্রা মনোনীত প্রার্থী কমল কলই কখনো শিলং কখনো সাংবাদিক হয়ে বেশিরভাগ সময় আগরতলাতে থাকেন। একইরকম ভাবে বনমন্ত্রীর স্ত্রীও আগরতলাতেই থাকেন। তাই পাহাড়ি অঞ্চলের জনগনের বেদনা দুঃখ এই দুই প্রার্থী কতটুকু বুঝবেন এই প্রশ্ন তোলেছেন স্থানীয় ও বিরোধীদলের প্রার্থীরা। স্থানীয় ও বহিরাগত প্রার্থী ইস্যুতে বেশ জমে উঠেছে এই কেন্দ্রের ভোট প্রচার।
নজরকাড়া আসন করমছড়া!
ত্রিপুরা স্বশাসিত জেলা পরিষদের চার নং আসনটি করমছড়া বিধানসভা, পাবিয়াছড়া, বিধানসভা, পেচারথল বিধানসভা, পানিসাগর বিধানসভা, যুবরাজনগর বিধানসভা এবং চন্ডীপুর বিধানসভা নিয়ে গঠিত। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার হলো ৩৮৯৯৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৯৭০৫ জন। মহিলা ভোটার ১৯২৮৯ জন এবং ১ জন তৃতীয় লিঙ্গ ভোটার। এই কেন্দ্রে মোট পোলিং স্টেশন হলো ৫০টি। এই কেন্দ্রে মোট পাঁচজন প্রার্থী লড়াই করছেন। শাসক বিজেপি দলের প্রার্থী বিমলকান্তি চাকমা, বামফ্রন্টের প্রার্থী শান্তিমণি চাকমা, কংগ্রেস দলের প্রার্থী ড্যানিয়েল রিয়াং, আইএনপিটি দলের প্রার্থী প্রাক্তন টি এন ভি নেতা বিজয় রাংখল এবং নির্দল প্রার্থী জগৎজ্যোতি চাকমা এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করছেন। করমছড়া কেন্দ্রের জন্য পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও মূল লড়াই হচ্ছে, শাসক বিজেপি এবং আইএনপিটি এবং বামফ্রন্ট প্রার্থীর মধ্যে।
তবে এই কেন্দ্রে কংগ্রেস দলও বেশ ভালো ভোট টানতে পারবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। করমছড়া আসনে চাকমা সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছে প্রায় ত্রিশ শতাংশ, দেববর্মা, ত্রিপুরী, রিয়াং সম্প্রদায় হালাম সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছে চল্লিশ শতাংশ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ভোটার প্রায় ২০ শতাংশ। এই কেন্দ্রে রাজনৈতিক দলগুলি ছোট ছোট সভা, জনসংযোগের মাধ্যমে ভোট প্রচার করছে । শাসক বিজেপি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের নিরিখে ভোট প্রচার করছে বিজেপি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সরকারের ব্যর্থতাকে সামনে রেখে প্রচার করছে। তবে শাসক দলের সংস্কারপন্থীদের একটা অংশ ঘরে বসে রয়েছে।
এডিসি ভোট ২০২১- একনজরে ভোটার চিত্র