সরকারী পরিসংখ্যানে বেকার কমলেও কোভিডকালে ত্রিপুরায় কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে

প্রদীপ চক্রবর্তী

করোনা মহামারী জনিত কারনে দেশ বিদেশে প্রচুর কর্মরত লোকজন কাজ হারিয়েছে। চাকুরীচুত হয়েছে। বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ হারানোরা বাড়ীতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। বাড়ী এসে এরা কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। নামমাত্র মজুরীতে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া বিকল্প তাদের কাছে নেই। আমাদের এখানেও একই চিত্র। আমাদের রাজ্যের বহু যুবক যুবতী যারা অন্যান্য রাজ্যে কর্মরত ছিল তাঁরাও রাজ্যে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এরা এখন বেকার। কাজ পাচ্ছেন না। যদিও রাজ্য সরকার কাগজে পত্রে এদের জন্য একটি স্কিম ঘোষনা করে রেখেছেন। কিন্তু স্কিমের সুবিধা তারা কিভাবে কোথায় থেকে পাবেন তারা জানেননা। তাই তারা এদিকে ওদিকে কাজের সন্ধানে ঘুরছেন। কিন্তু কে দেবে কাজ?

এই পরিস্থিতিতে কর্মহীনতার নাজুক চিত্র একে দিয়েছে সিএম আই এ। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সি,এম আই,এম) তাদের আগস্ট মাসের রিপোর্টে বলেছে পূ্র্বোওর ভারতে ত্রিপুরা বেকারত্ব বা কর্মহীনতার শীর্ষে। সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরা দ্বিতীয়। এবং প্রথমেই রয়েছে হরিয়ানা। হরিয়ানায় বেকারত্বের হার ৩৩.৫ শতাংশ।

সিএম আই এ বলছে হরিয়ানায় যেখানে ৩৩.৫ সেখানে ত্রিপুরার হার ২৭.৯ শতাংশ। এই চিত্র অত্যন্ত নাজুক ও উদ্বেগজনক।

ত্রিপুরা অত্যন্ত ছোট রাজ্য এবং জনসংখ্যা মাত্র ৪১ লাখের কাছাকাছি। সেখানে ত্রিপুরার কর্মহীনতার হার ২৭.৯ শতাংশ মানেই যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আগামীদিনে এই হার খুবই দ্রুত গতিতে উর্ধমুখী হতে পারে অন্তত ব্যবস্হাপনা শাস্ত্র সেই কথাই বলে।

জাতীয় ক্ষেত্রে হরিয়ানার পর ত্রিপুরা হলেও পূ্বোত্তর রাজ্যে শীর্ষ স্হান দখল করে আছে পান্ডব বর্জিত এই রাজ্য। কিন্তু রাজ্য সরকার বরাবরই বলে চলেছে যে এখানে প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে। আগে সাড়ে সাত লাখ বেকার ছিল, এখন তা দুই লাখের কম। সরকারের দাবী, সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রে মানুষ আয়ের উৎস খোঁজে পেয়েছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেকার বাড়ছে।

এ রাজ্যেও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই আউটসোর্সিং হচ্ছে। আউটসোর্সিং এ যুক্ত বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানীর মধ্যে বেকারদের নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের বেতন-ভাতা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ২/৩ মাস পর পর বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। আবার যখন তখন ছাঁটাই করে দেওয়া হচ্ছে।

এরাজ্যে আউটসোর্সিং এর প্রবনতা উর্ধমুখী‌। সম্প্রতি বিদ্যুৎ নিগমের বেশ কয়েকটি ডিভিশন বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

সিএম আই ই তাদের আগষ্টের রিপোর্টে বলেছে যে অন্ধ্রপ্রদেশ ৭% শতাংশ,আসাম ৫.৫%, বিহার ১৩.৪%,ছত্তিশগড় ৫.৫%,দিল্লী ১৩.৭%,‌ গোয়া ১৬.২% গুজরাট ১.৯%, হরিয়ানা ৩৩.৫%‌ ,হিমাচল ১৫.৮%, জম্বু ও কাশ্মীর ১১.১্‌ ঝাড়খন্ড ৯.৮%, কর্নাটক ০.৫্‌ কেরালা ১১.৫%, মধ্যপ্রদেশ ৪.৭্‌ মহারাষ্ট্র ৬.২% ,মেঘালয় ৩.৭্‌ ওড়িশ্যা ১.৪%, পডুচেরী ৫্‌ পান্জাব ১১%, রাজস্হান ১৭.৫%,‌ সিকিম ১২.৫%, তামিলনাডু ২.৬%, তেলেঙানা ৫.৮%, ত্রিপুরা ২৭.৯%,উ‌ওরপ্রদেশ ৫.৮%, উওরাখন্ড ১৪.৩%,‌ পশ্চিমবঙ্গ ১৪.৯% বেকার। বেকারত্ব/কর্মহীনতার এই নাজুক চিত্র আগামী দিনের জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.