মুখ্যমন্ত্রীও স্বীকার করলেন করোনার প্রকোপ সবচেয়ে ভয়ংকর আগরতলা পুরনিগম এলাকায়
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৯, : তথ্য যে, পরিসংখ্যান ব্যবস্হাপনার ভিত্তিতে রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলতে বাধ্য হয়েছেন বা স্বীকার করেছেন মহামারী করোনার প্রকোপ সবচেয়ে ভয়ংকর আগরতলা পুরনিগম এলাকায়। তিনি জানিয়েছেন কোন কোন ওয়ার্ডে কতজন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী সেইসাথে আহ্বান জানিয়েছেন করোনা সংক্রমন রোধ ব্যবস্হাপনা যেন সবাই যথাযথ ভাবে মেনে চলে অন্যথা এই মারন ব্যাধির ছোবল থেকে রক্ষার উদ্যোগ নেন।
গত কদিন ধরে বলা হচ্ছে রাজধানীতে যে পরিস্থিতি তা উদ্বেগজনক। এখানে বাজারহাট পথঘাট দোকানপাটে কোন নিয়ন্ত্রন নেই। যে যার ভাবে ছুটছে, বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে, যানবাহনে গাদাগাদি অবস্থা। কোন ধরনের তদারকী নেই। প্রশাসন যেন জগন্নাথ। এরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। এদের এই উদাসীনতা, নির্লিপ্ততা অনিয়ম/ বেনিয়মকে পরোক্ষে বাড়িয়ে তুলছে।
অশনী সংকেতের কথা কিন্তু নানাভাবে নানা ফোরামে বলা হয়েছে বা হচ্ছে কিন্তু তারপরও সবাই ডুব মেড়ে বসে আছে। আর সামাজিক দুরত্ব, মাক্স ব্যবহার কিংবা সেনিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া তো এমন কোন মহাভারত নয় বা ব্যয়সাধ্য্ নয় । তবু কেন এমন উদাসীনতা? এতো হারিকিরির অবস্থা।
বাড়ী বাড়ী সমীক্ষা করানো হয়েছে বলে দাবী। কিন্তু এই ধরনের সমীক্ষা কতটুকু রোগ সনাক্ত করনের পক্ষে ফলপ্রসূ হয়েছে? এই প্রশ্ন তো এখন সর্বত্র আলোচিত।
আগরতলা পুর নিগম এলাকায় করোনার বিস্তার সবচেয়ে বেশী হয়েছে বা হয়ে চলেছে বাজার এলাকা থেকে। প্রথমদিকে সরকার বাজার গুলি স্হানান্তর করেছিল। চালু হয়েছিল ভেন্ডারিং প্রথা। কিন্তু কদিন বাদেই সব বুদবুদ। এখন আবার বাজারহাট সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষিত হয়েছে। যদি কার্যকর হয় তাহলে করোনা সংক্রমণর বিস্তৃতি কিছুটা রোধ হতে পারে।
আগরতলা পুর নিগম এলাকার যে চিত্র একে দেওয়া হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে্ যেখানে সংক্রমনের হার ৩.৮৬% সেখানে পুর নিগমের নয়টি এলাকায় ২১ %। এ চিত্র বিপজ্জনক। পুর নিগমের ৪ নং ওয়ার্ডে ৯২ জন, ৫ নং ওয়ার্ডে ১২২, ৬ নং ওয়ার্ডে ৫২ জন, ১২ নং ওয়ার্ডে ৯৪ জন, ২০ নং এ ৯৯, ২৬ এ ৯৩, ৩২ এ ৩২ জন, ৪০ নং ওয়ার্ডে ১০০ জন এবং ৪৬ নং ওয়ার্ডে ৬৯ জন।
স্বাস্হ্য দপ্তরের এক পদস্হ আধিকারিক, যিনি কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন তিনি বলছেন যদি কোন এলাকায় দশজন পজিটিভ হয় তাহলে তা উদ্বেগজনক এবং বিপজ্জনক। তার মতে বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে তো রাজধানী গোষ্ঠী সংক্রমন শুরু হয়ে যেতে পারে। এই গোষ্ঠী সংক্রমণ ভয়াবহ ও বিপজ্জনক।
রাজধানীতে অসংখ্য করোনা আক্রান্ত রয়েছেন যারা হোম কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন। সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী কেয়ার গিভার দেওয়ার কথা। নেই, আছে শুধুই কাগজে কলমে। আইজিএম, এজিএমসি, ভগৎসিং, হাপানিয়া ডেডিকেটেড কোভিড কেয়ার সেন্টারের পরিস্থিতি উর্দ্ধশ্বাস এনে দেওয়ার পক্ষে বিপজ্জনক সহায়ক। পর্যবেক্ষক মহল বলছেন আগরতলা পুর নিগম এলাকার করোনা জনিত পরিস্থিতি যে দিকে এগিয়ে চলছে তা আগামীদিনের জন্য অশনী সংকেত।