প্রদীপ চক্রবর্তী
সর্ষের মধ্যেই ভূত, এই ভূত তাড়াবে কে?
সরষেতেই ভূত?আর ভূত সর্ষেতে ভর করলে ভূত কখনো তাড়ানো যাবেই না।এমনটাই হয়েছে পরিস্থিতি।অন্যথায় ১২ টি থানা, ওপি ও নাকাবন্দি থাকার পরও কিভাবে ফেনসিডিল ও অন্যান্য নেশা সামগ্রী বোঝাই দু দুটি ট্রাক বহিরাজ্য থেকে আগরতলায় আসতে পারল? এবং শুধু তাই নয় এই দুই ট্রাক দিব্যি চন্দ্রপুর আইএসবিটি-তে বিশ্রাম নিচ্ছিলো?
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গঠনের ডাক দিয়েছেন ক্ষমতায় আসার পর। গাঁজা চাষের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক অভিযান ও অব্যাহত রাখা হয়। অভিযান চলে নেশাজাতীয় অন্য পন্যের বিরুদ্ধেও। এখনো এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কিন্তু এর মধ্যেই কি ভাবে নেশাজাতীয় দ্রব্য নিয়ে বহিরাজ্যের দুটি ট্রাক আগরতলা এসে পৌঁছে গেল? যেখানে জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে বেশকিছু থানা, আউটপোষ্ট?
চোড়াইবাড়ী গেইটে তো বৈধ পন্যবাহী ট্রাকগুলিকে আগরতলার দিকে আসার অনুমতি দেয়া হয় অন্তত দু'দিন দাড় করিয়ে রেখে। পদে পদে টু পাইস দিতে হয় বলে অভিযোগ। প্রচলিত প্রবাদ ওখানে নীচে ৩ এবং খুব বেশি হলে ৬ মাস পোষ্টিং থাকলেই হল। সাড়া জীবনের আয় হয়ে যায়।চোড়াইবাড়ীতে কর্মরতদের নানা নামে ওখানে ব্যান্ক একাউন্ট রয়েছে। ওই সব ব্যান্কের কর্মীরা সারাদিন ওখানে ঘুরঘুর করে । যারা পন্য সামগ্রী পাঠিয়ে থাকে তাঁরা এই সব একাউন্টে টাকা জমা দিয়ে দেয়।ব্যস হয়ে গেল।টাকা পেলেই এবার ট্রাক ছাড়। ওখানে নানা দপ্তরের পোষ্ট বা অফিস রয়েছে। সব পোষ্টেই টাকার খেলা। এক্ষেত্রে ও তাই হয়েছে।অন্যথায় কিভাবে ট্রাক দুটি চোড়াইবাড়ী গেইটে ছাড় পেল?
এবার চোড়াইবাড়ীর পর আরো 12 খানা, আউটপোষ্ট রয়েছে।পানিসাগর, পেচারথল, কুমারঘাট, মনু, আমবাসা, মুঙ্গিয়াকামী, তেলিয়ামুড়া, চম্পকনগর, জিরানীয়া থানা থেকে কিভাবে ছাড় পেল? থানা ছাড়াও বসে থাকে নাকা গেইট। ওখানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। সব তল্লাসী নগদ নারায়নের কৃপায় ছাড়পত্র পেয়ে যায় বলে সংবাদ ও অভিযোগ। থানা, আউটপোষ্ট, নাকা ছাড়াও রয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে পেট্রোলিং। এতগুলি বেষ্টনী পেড়িয়ে এই দুই ট্রাক কিভাবে চন্দ্রপুর আইএসবিটি তে চলে এল সেটা এখন বড় প্রশ্ন। এই প্রশ্ন ধরে টান দিলে সব কিছু বেড়িয়ে আসবে।
এতো একদিন দুদিনের ঘটনা নয়, দিনের পর দিন, বছরের পর বছরের ঘটনা। কিন্তু মূলে ধরে টান দেয়ার ফুসরৎ হয়নি কারোর।
দূর্নীতি বিশ্বজনীন ঘটনা। সব খানেই আছে। তবে কম আর বেশি। এর মাধ্যমে কেউ লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে, কেউবা কোটি টাকা। চোড়াইবাড়ী বা থানা পর্যায়ে যে সব লেনদেন হয়ে থাকে তাও অবৈধ উপায়ে। মানে হাওলার মাধ্যমে।তা সবাই জানে।এটা দিবালোকের মত পরিস্কার।