ভঙ্গুর যোগাযোগ,বাড়ছে সমস্যা, অভূতপূর্ব খোয়াই!

প্রদীপ চক্রবর্তী

রবিবার সকাল ১১ টা। সবাই সাড়ি দিয়ে বসে।সামনে হরেক রকম সবজী। খাঁখাঁ রোদ। ক্রেতার দেখা নেই। প্রায় আধঘণ্টা একই দৃশ্য। সামনেই কোহিনুর মার্কেট। দোকান পাট, ষ্টল খোলা। দোকানীরা বসেই আছে। মাছ, মাংস বাজারেও প্রায় একই ছবি। মূল সড়কে মাঝেমধ্যে একটি দুটি করে অটো, টমটম ছুটছে। এক দুজন যাত্রী। অধিকাংশ টমটম দাড়িয়ে। রিকসাতো প্রায় নেই। কিছু কিছু দোকান খোলা। বিক্ষিপ্ত ভাবে কেনাবেচা চলছে।

বলা হচ্ছে খোয়াইর সুভাষপার্কের কথা। করোনা যেন জীবনযাত্রা প্রায় স্তব্দ করে দিয়েছে। লোকজন চলছে নামকেওয়াস্তে।যাদের না আসলে চলেনা, তারাই বাড়ী থেকে বেড়িয়েছে। কিন্তু মাক্স নেই। মাক্সধারীদের সংখ্যা বিরল। দোকানীদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। তা বলে সবার নয়। গ্রামীন জীবন যেন থ মেরে আছে। অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম। সব কিছুই যেন টেনেটুনে চলছে।চলতে হয়, বা যেতে হয় তাই চলা বা যাওয়া। অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না। করোনা আবহ তো ৪ মাস হয়েছে। কিন্তু এর আগে তো সবকিছু অনেকটাই ঠিকঠাক ছিল। তাহলে কি ঠিকঠাক নেই? প্রশ্ন তো এখানেই। ঠিকঠাক অনেক কিছু নেই।

এই যেমন উন্নয়ন। সড়ক যোগাযোগ বেহাল। রাস্তায় যেমন চুনকাম হওয়ার কথা। হয়নি। কেন হয়নি বাবুরা বলতে পারবেন। এই যেমন তাঁত চৌমুহনী থেকে অজগর টিলা রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে হোঁচট তো খেতেই হবে। রাস্তায় এবড়ো থেবড়ো গর্ত। কোথাও পিচ উবে গেছে। ইটও নেই। টানা রিকসা তো আসেনা। টমটম ডান বাম করে চলে। যাত্রীদের কখনো হুমড়ো খেতে খেতে সিটের এমাথা থেকে ওমাথা যেতে হয়। দশ মিনিটের জার্নি করলে কোমড় ব্যথায় ককিয়ে উঠতে হয় অন্তত একদিন। ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তা। ফিলিং আর মাটি ভরাট করলে যন্ত্রনা কমে যায়। হ্রাস পেতে পারে দুর্ভোগ । সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হতে পারে।কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।

সুবলসিং থেকে খোয়াই রাস্তারও বেহাল দশা। অথচ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই রাস্তার উপর চাপ বেশী। প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। পন্যবাহী ট্রাক কৈলাশহর থেকে কমলপুর হয়ে খোয়াই ধরে ৩ ঘন্টায় আগরতলায় পৌঁছে যায়। বিকল্প জাতীয় সড়ক। ভাড়াও কম, সময়ও কম লাগে। বাইজালবাড়ী দিয়ে আশারামবাড়ী হয়ে সড়ক পথে খোয়াই থেকে কমলপুর একঘন্টায় অনায়াসে যাতায়াত করা যায়। লোকজন এ পথেই চলছে। সে রাস্তা উন্নত ছিল। অনায়াসে চলাচল করা যেত। কিন্তু সমস্যা সেই সংস্কার না হওয়া।

খোয়াই শহরে পানীয় জল সরবরাহও ব্যবস্হা দুর্বল । দিনে একবার পাইপে জল সরবরাহ করা হয়ে থাকে বলে স্হানীয়রা বলেছেন। অথচ খোয়াই শহরে জন সংখ্যা বেড়েছে। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে শহরে। শুধু কাজের সন্ধানে। আবার ছেলেমেয়েদের " ভাল" পড়াশুনার জন্য। ছোট্ট শহরে জনসংখ্যার চাপ পড়ায় বাড়ী ভাড়া বেড়ে গেছে। বাড়ী ভাড়া গুনতে গিয়ে অনেকের দম যাই যাই করে। কিন্তু থাকতে হবে এখানেই।

এই শহরে রয়েছেন, বিভিন্ন কাগজে সংবাদ পাঠিয়ে থাকেন তাদের বক্তব্য জেলা সদরের গ্রামগঞ্জের সড়ক বেহাল হয়ে আছে। সড়ক বেহাল হওয়ায় রেশনপন্য ডেলিভারী দেওয়া কষ্টকর। তবু সরবরাহ হচ্ছে। জনসাধারণ রেশনপন্য পাচ্ছেন। যদিও নিয়মিত নয়। অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু করোনা আবহে সব জানি কেমন হয়ে আছে সার্বিক পরিস্থিতি।

খোয়াই-র একমাত্র বাজার বা প্রধান বাজার ছিল পুরাতন বাজার। যাকে এখনো লোকজন মানে প্রবীনরা বাল্লা বাজার বলে থাকে। কালের প্রয়োজনে মুল ব্যবসাকেন্দ্র হয়ে গেছে সুভাষপার্ক। ওখানে আছে থানা, কাষ্টম, পোষ্ট অফিস। থানার ওপারে খোয়াই নদী তড়তড় করে বইছে। এটি চলে গেছে বাংলাদেশ। হবিগঞ্জে গিয়ে কুশিয়ারার সাথে মিশেছে। থানার ওপারে নদী। বাল্লা রেলষ্টেশন। বাল্লা জুড়ে রেখেছে চুনারুঘাট, সায়েস্তাগঞ্জ। সায়েস্তাগঞ্জ থেকে চলে গেছে শ্রীমঙ্গল, সিলেট।আর সায়েস্তাগন্জ থেকে রেললাইন হবিগঞ্জে। বর্ধিষ্ঙু বানিজ্যিক অঞ্চল। খোয়াইতে বসবাসকারীদের অধিকাংশ ওই অন্চল থেকেই এখানে এসে বসতে গেড়েছেন।

পুরানো বাজার এলাকা উন্নয়নের অভাবে ধূকছে। সরকার একটু নজর দিলেই এটি বহুলাংশে প্রানচঞ্চল হয়ে উঠতে পারে। হয়তোবা আগামীদিনে হবে সব কিছু। এখনও মানুষ প্রত্যাশায় বুক বেঁধে আছেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
মন্তব্যের তারিখ (Posted On)মন্তব্যকারির নাম (Name)মন্তব্য (Comment)
13.08.2020Dr. niladri paulEvery thing is correct. But people are receiving their results of their anti-natural activities. Human is 1 of the living entity created by NATURE but HUMAN use their brain to act against NATURE. I BELIEVE - only household culture can survive HUMAN BEING.