আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি আর সমাজকে বিপদে ফেলে দিচ্ছি

প্রদীপ চক্রবর্তী

ফের লকডাউন। সেই সাথে মাক্স, নাকমুখ আড়ালী, সামাজিক দূরত্ব বজায়, সেনিটাইজার বা সাবান এখন বেচেঁ থাকার জন্য আবশ‍্যিক হয়ে উঠেছে। করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধগড়ে তুলতে বা সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে এগুলি ছাড়া বিকল্প যেমন কিছু নেই তেমনি নেই এন্টিজেন পরীক্ষা ছাড়া অন্যকিছু।

চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে এখন একমাত্র উপায় "টেষ্ট, ট্রেক, ট্রিটমেন্ট"।

এন্টিজেন টেষ্ট রাজ্যেও জোর কদমে এগিয়ে চলছে বলে দাবী করা হচ্ছে। প্রতিদিন পরীক্ষা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে এতে সংক্রমিত সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরো উদ্বেগজনক বিষয় কন্টাক্ট বা সংষ্প্রশিত রোগী বৃদ্ধি। এটা ভাববার বিষয়।যেখানে রাজ্য, কেন্দ্র সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক প্রচার অব্যাহত রেখেছে সেখানে তাতে অনেকেই আমল দিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে একশ্রেনীর লোকজন দিব্যি বাজার হাট যাচ্ছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায়ের বালাইতো নেই , তার উপর মাক্সো নেই। বাজার কমিটি গুলি সচেতনতার ফ্ল্যাক্স লাগিয়ে দায়িত্ব খালাস করছে। বাজারের প্রবেশ ও নির্গমন পথে সাঁটিয়ে রেখেছে মাক্স ছাড়া কেউ বাজারে ঢুকতে পারবে না। হুলিয়া জারী রয়েছে মাক্স বিহীন কারো কাছে কোন পন্য বিক্রি করা হবেনা। ব্যস, এটাই যথেষ্ট। যানবাহনের জন্য কঠোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মানাই হচ্ছে না। টমটমে দুজনের বেশী যাত্রী বহন নিষিদ্ধ। কিন্তু ৪/৫ জন ছাড়া ওগুলি চলেই না। যাত্রীরা প্রতিবাদ করছে না। বরং হুড়হুড়িয়ে উঠে যাচ্ছে। ষ্টান্ড গুলিতে তো আরো ভয়ংকর অবস্থা।

প্রশাসনিক তরফে মাঝেমধ্যে ক্যামেরাম্যান নিয়ে নানা স্হানে ২০/২৫ মিলে অভিযান চালানো হচ্ছে। ছবি উঠানোর কাজ শেষ তো অফিসার বাবুরা পগারপাড়।

এটাই বাস্তব।

রাজ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় কারন যদি কিছু থাকে তাহলে এটাই। আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি আর সমাজকে বিপদে ফেলে দিচ্ছি। এরা আসলেই বুঝতেই পারছেন না করোনার ভয়াবহতা। একশ্রেণীর তথাকথিত বুদ্ধিজীবী রয়েছেন যারা মাক্স দেখানোর জন্য কানে ঝুলিয়ে রাখছেন। বিশ্ব বিজ্ঞানীর মতো কথাবার্তা বলছেন। এদের বুঝিয়েও লাভ নেই। এদের একমাত্র ঔষুধ ডান্ডা, ধোলাই। এদের জন্য তো আমরা বিপন্ন, সমাজ, সভ্যতা বিপন্ন।

একদিকে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ‌অন্যদিকে বাজার আবার ছেয়ে গেছে ভেজাল সেনিটাইজারে। ড্রাগ কন্ট্রোলার বাবুরা নাকে তেল দিয়ে পান চিবোতে চিবোতে শুকটান দিচ্ছেন। ভেজালে ছেয়ে যাক এতে এদের কোন ভাবনাও নেই, নেই প্রতিকার। অবস্থা জয় জগন্নাথ এর মত।

পরীক্ষা নিরীক্ষা করার প্লান প্রোগ্রাম চক আউট করা হচ্ছে কিনা তা রোগ প্রতিরোধ দপ্তর বলতে পারবে। প্রতিদিন রাতে সামাজিক মাধ্যমে জানানো হচ্ছে করোনা আপডেট।

এদিকে গোদের উপর বিষফোঁড়া। বাজার থেকেই উধাও ক্যালপল, প্যারাসিটামল, এরোথ্রোমাইসিন সহ সামান্য কফ, কাশির সিরাপ বা ঔষুধ।

বাজারের এই চিত্র দেখলে সংশয় জাগে রাজ্যে আদৌ সরকার নামে কোন বস্তু আছে কিনা। কেননা সরকার থাকলে তো এভাবে উধাও হয়ে যেতে পারে না ক্লুরোকুইন, প্যারাসিটামল, এরোথ্রমাইসিন, কুইনাইন, হালকা কফ, কাশির ঔষুধ।

সত্যি আমরা আছি ধন্য রাজার পূন্য দেশে। প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এর আন্তরিকতা নিয়ে নয়। উনার আন্তরিকতা রয়েছে, রাজ্যের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখেন তিনি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমলা, আধিকারিকদের একাংশের মানসিকতা নিয়ে। অনেকের অভিযোগ, এঁরা জেগে ঘুমান, দায়সারা দায়িত্ব পালন করছেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.