স্বচ্ছতা, সততার মূল্য চোকাচ্ছেন দিবা চন্দ্র রাংখল
প্রদীপ চক্রবর্তী
একঢিলে দুই পাখী নয়, বহু পাখী মারার কৌশলটা ভালভাবেই রপ্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এডিসি ভোটের আগে সমাজপতিদের জন্য মাসিক দুহাজার টাকা সান্মানিক ভাতা প্রদানের ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শাসক বিজেপি ও শরীক আইপিএফটি দলের মতামত নিয়েছেন বলে মনে হয়না। মতামত নেয়াটা জোটধর্ম। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই ধর্ম লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অন্দরের খবর। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে অন্যত্র।
মতামত নেয়াতো দূরের কথা, অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী তার নিজ দলের সবচেয়ে প্রবীন নেতা তথা বিধায়কেরই মতামত নেননি। মতামত নেওয়া না নেওয়াটা মুখ্যমন্ত্রীর এক্তিয়ারে। কিন্তু ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানোই হয়নি প্রবীন বিজেপি বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাংখলকে। করমছড়া নির্বাচন কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিধায়ক যিনি সব চেয়ে সিনিয়র। তাঁর অভিজ্ঞতার ধারে কাছে আসার মত কেউ আছে বলে জানা নেই।
অত্যন্ত গরীব ঘরের সন্তান, জুমিয়া দিবা চন্দ্র রাংখল অত্যন্ত সৎ ও অমায়িক। কংগ্রেস-যুব সমিতি জোট সরকারের আমলে যেমন তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো আঙ্গুল তুলতে পারেননি, এখন তো প্রশ্নই উঠেনা। কারন তাঁকে অনেকটা যেমন একঘড়ে করে রাখা হয়েছে। তেমনি দলীয় ক্ষেত্রেও থাকা না থাকার সামিল পদে রাখা হয়েছে। অদ্ভুত ব্যাপার। একজন প্রবীন বিধায়ক, সৎ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রতীক যিনি তাঁকে কেন এমনটা করে রাখা হয়েছে তা বিপ্লব কুমার দেব বা তার দল বলতে পারবে। অন্যদের পক্ষে বলা সম্ভব না ও হতে পারে।
জানাগেছে, জোট আমলে তাঁর মাধ্যমে উওর ও ধলাই জেলার বহু লোক যেমন সরকারী চাকুরী পেয়েছেন তেমনি আর্থিক ভাবে দূর্বল লোকজনও সরকারী চাকুরী পেয়েছেন। ডিসি বাবুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ও বিপজ্জনক অভিযোগও রয়েছে। কি সেসব অভিযোগ? বড় অভিযোগ হল যে তিনি কারো কাছ থেকে কানাকড়ি নেওয়াতো দূরের কথা কারো বাড়ীতে বা দোকানে বিনে পয়সায় এক কাপ চাও খাননি।
বরং আমবাসা, মনু, ছৈলেংটা, ছামনু, কুমারঘাট, করমছড়ার লোকজন আগরতলা এলে সমস্যায় পড়লে উনার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে থাকেন। আমি নিজেই দেখেছি এসব। প্রাক্তন মন্ত্রী দ্রাউকুমার রিয়াংকে দেখেছি এম এল এ হোষ্টেলে এসে ডিসি বাবুর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতে। অথচ দ্রাউকুমার এ রাজ্যের বনদপ্তরের ও উপজাতি কল্যানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁরা এমনই দূর্নীতি (!) করেছেন যে ১০/২০ টাকার জন্য হাত পাততে হয়। এঁরা দুজন ই অসুস্থ। শয্যাশায়ী। এদের সাহায্য সহায়তা করার মত লোকজনও নেই। এক নেতা রয়েছেন বিমল চাকমা, যিনি নিজেরটা গোছাতেই ব্যস্ত।অন্যদের জন্য কি করবেন। তবে হ্যাঁ, বিমল বাবুর কিন্তু কিছু গুন রয়েছে। তা বলা চলে মুখে মারিতং জগত। এখন শান্তনা চাকমার আশপাশে ঘুরঘুর করেন আর কিছু আমদানিও করে থাকেন বলে অনেকেই বলে থাকেন।উপজাতিয় সমাজপতিদের জন্য মাসিক ভাতার ঘোষণা দিয়ে বিপ্লব বাবু এডিসি ভোটের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।