সবজির ভেন্ডারদের মহল্লায় মহল্লায় যাওয়া বন্ধ কেন প্রশ্ন

প্রদীপ চক্রবর্তী

করোনা মোকাবেলা জনিত কারণে লকডাউন ঘোষনার পরপরই রাজ্য সরকার বাড়ী বাড়ী সবজি বিক্রির জন্য যে ভেন্ডারিং প্রথা চালু করেছিল তা এখন অনেকটাই গঙ্গা প্রাপ্তি ঘটার পথে। এ নিয়ে নানা স্তরে যেমন আলোচনা হচ্ছে তেমনি সমালোচনাও হচ্ছে।

আসলে নুতন বৌ বাড়ী এলে তাকে দেখার জন্য প্রতিবেশীরা হামলে পড়ে। কে কার আগে নুতন বৌ দেখবে তা নিয়ে বিকাল হতেই শুরু হয় তাড়াহুড়ো। নুতন গুড়ের চাক এলে মাছি, মৌমাছি ভনভন করে ঘুরতে শুরু করে।সবজি বিক্রির ভেন্ডারদেরও অবস্হা অনেকটাই এমন দশা হয়েছে।

সরকারের ঘোষনার পর পরই এলাকায় এলাকায়, বাড়ী, পাড়ায় বেড়িয়ে পড়তে থাকে ভেন্ডাররা। ভোর পাঁচটার আগেই পাডলে এরা ডাকতে শুরু করে পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ী, মহল্লায়। শুধু সবজি না মাছ নিয়েও বেড়িয়ে পড়তে থাকে এরা। মাঝেমধ্যে মুরগীর মাংসও ছিল বাড়ী বসে পাওয়ার বা কেনার সুযোগ।

কিন্তু এখন তো ভেন্ডারিং প্রথা প্রায় নেই। অর্থাৎ এই প্রথা বন্ধ হওয়ার পথে। কেন এই অবস্থা তা বলতে পারবে পরিচালক বা সমিতি, মন্ডলের মহামহিমরা।

তবে এটা ঠিক এখন আর ভেন্ডাররা আসেও না, ডাকেও না। ক্রেতারাও ছুটে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। তবে ওই প্রথা চালুর পর ভোক্তাদের অনেকটাই সুবিধা হয়ে ছিল। বাজার যেতে না হওয়ায় ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে অনেকটাই সুবিধা হয়। উপকৃত হন সাধারণ মানুষ।

কিন্তু এখন তো সাত সকালে ভেন্ডারদের ডাক শোনা যায় না অর্থাৎ এঁরা এখন আসেনা। এতে মহল্লার লোকজন বেকায়দায় পড়েছেন এবং বাধ্য হয়ে বাজারে ছুটতে হচ্ছে। বাজারে ভীড়ের ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। ঝুঁকি বেড়েই চলেছে সংক্রমনের। এমনিতেই রাজ্যে নিত্যদিন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবজি বাজারে ক্রেতাদের ভীড় এই সংক্রমন ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এদিকে প্রশাসনের কোন নজর নেই, তদারকি নেই। স্বাভাবিক ভাবেই ব্যবস্হা গ্রহনের প্রশ্ন ও উঠেনা। অবশ্য গত ৮ জুন থেকে আইতরমা কতৃপক্ষ একটি মোবাইল ভ্যান-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে। মেট্রো বাজারে আইতরমা বিলদিং-এর নিচে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই মোবাইল ডোর-স্টেপ ডেলিভারী ভ্যান-এর শুভারম্ভ করেন ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান শ্রীসন্তোষ সাহা, উপস্থিত ছিলেন আইতরমার চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শ্রী মানিক দাশগুপ্ত।

জানাগেছে, আপাতত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেল, সোয়াবিন, ত্রিপুরেশ্বরী টি, আলু ইত্যাদি নিত্যপন্য সামগ্রী সুলভ মূল্যে বাড়ী বাড়ী মোবাইল ভ্যানে নিয়ে ঘুরবে আইতরমার মোবাইল ভ্যান। অবশ্য কোন এলাকায় কোন দিন যাবে বা কোথায় কল করলে ডোর স্টেপ হোম ডেলিভারী পাওয়া যাবে এখনো এব্যাপারে আইতরমা কতৃপক্ষ কোন কিছু চূড়ান্ত করেন নি। এক্ষেত্রেও মহারাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের মত কোপারেটিভ দপ্তরের অধীন আইতরমাকে দিয়ে বাড়ী বাড়ী নিত্যপন্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ কতদিন চলে তাই এখন দেখার। করোনা মহামারী জনিত সমস্যা খুব সহসায় সমাধান হচ্ছে না। এই অবস্থায় মানুষকে যত বেশী বাড়ী ঘরে আটকে রাখার লক্ষকে সামনে রেখেই কিছু অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপন্য সামগ্রীর হোম ডেলিভারী বা পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা সচল রাখতে পারলে ভালই হত।






You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.