লকডাউন জনিত কারনে ত্রিপুরার মিডিয়া শিল্পে উর্দ্ধশ্বাস উঠেছে, নিউজ পেপার সোসাইটির উদ্বেগ
প্রদীপ চক্রবর্তী
লকডাউন জনিত কারনে প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরার সংবাদপত্র শিল্পের উর্দ্ধশ্বাস উঠেছে। শুধু সংবাদপত্র নয়, বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম ও ওয়েব পোর্টালগুলির দফারফা অবস্হা। এঁরা যে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে তাতে কিভাবে এরা এগুলি টিকিয়ে রাখবে তা এখন গভীর চিন্তা ও উদ্বেগের কারন হয়ে উঠেছে। এই শিল্পের সাথে নানা ভাবে জড়িয়ে আছে উল্লেখযোগ্য কর্ম ও শ্রমশক্তি। এদের সমস্যা কর্মহীনতা। এটা প্রায় অবধারিত হয়ে উঠেছে।
লকডাউন জনিত কারনে সংবাদপত্র গোষ্ঠীর আয় প্রায় নব্বই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কেননা বেসরকারী বিজ্ঞাপন একেবারেই নেই। এম এন সি গুলিও বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারী বিজ্ঞাপনও খুব কম। এক কথায় এদের আয় প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। অথচ মাসের প্রথম দিকে পরিচালন কর্তৃপক্ষকে বেতন-ভাতা গুনতে হচ্ছে। বেতনের অর্থ কোত্থেকে আসছে বা আসবে সে চিন্তায় এদের ঘুম উড়ে গেছে। এই অবস্থায় ক্রমান্বয়ে ছাঁটাই করতেই হচ্ছে কর্মীদের। এছাড়া বিকল্প পথও কিছু নেই।
যতটুকু খবর ত্রিপুরাতেও ইতিমধ্যেই কিছু প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে। আগামীতে বড়সংখ্যক কর্মী সম্ভাব্য ছাঁটাই-র তালিকায় রয়েছে। গোটা দেশেই সংবাদপত্র শিল্পের এই অবস্হা। ছবি অভিন্ন নয়। বহু জাতীয় দৈনিক পত্রিকা কর্মী সংকোচন করেছে। তবে এক্ষেত্রে এদের আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। হলে কি হবে? এরা তো ভবিষ্যতের চিন্তায় ভাবিত। কিভাবে সংসার প্রতিপালন করবে? স্বাভাবিক বা সঙ্গত ভাবনা।
বাইরের সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেলগুলির সাথে এ রাজ্যের সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ও ওয়েব পোর্টালগুলির তুলনা করা চলে না। কারন এরা নিজেরাই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। এদের নূন আনতে পান্তা ফুরোয়। লোকে বলে বেতন-ভাতা ও ঠিক সময়ে দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে ব্যতিক্রম তো অবশ্যই রয়েছে। এ রাজ্যেও নাকি কয়েকটি চ্যানেল পাততাড়ি গুটিয়ে নিয়েছে। বা নিতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে এটাও ঠিক স্হানীয় চ্যানেলের মধ্যে কয়েকটি সরকারি বিজ্ঞাপন পেয়ে যাচ্ছে। সব বিজ্ঞাপন অবশ্য করোনা প্রতিরোধ সম্পর্কিত। আবার কিছু মিডিয়াকে অন্যায় ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি নিউজ পেপার সোসাইটি থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে আর্থিক প্যাকেজ দাবী করা হয়েছে। বিজ্ঞাপন বৃদ্ধি-র দাবীও জানানো হয়েছে।
তবে খবর হলো রাজ্য সরকার সংবাদপত্র ও টেলিভিশন ও ওয়েব পোর্টালগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করার চিন্তা ভাবনা করছে। কতটা কি সাহায্য করা হবে জানা যায়নি। কিন্তু এটা ঘটনা যদি রাজ্য সরকার কিছুএকটা আন্তরিক উদ্দোগ গ্রহণ না করে তাহলে রাজ্য-এর সংবাদপত্র জগতে অন্ধকার নেমে আসতে খুব বেশি দিন লাগবেনা।