পেথুরাম ত্রিপুরাদের জীবন যুদ্ধ ও আমরা

বিশেষ প্রতিনিধি

পেথুরাম এিপুরা, বয়স ৬২ বছর, লম্বাবিল পাড়ার বাসিন্দা। মনু ব্লক থেকে বেশি দূর নয়। পরিবারের বতর্মান সদস্য দুই। ছেলে পেথুরাম এিপুরা আর বৃদ্ধ মা। মা-র আনুমানিক বয়স ১০০ এর উপরে গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী। বয়সের কারণে কর্মক্ষমতা হারিয়ে গেছে। চোখের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়েছে। সোজা হয়ে দাড়ানোর ক্ষমতা বয়সের সাথে চলে গেছে অনেক আগেই। ছেলের উপর ভর করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

ছেলে পেথুরামের জীবনেও বাধ্যর্কের ছায়া। রেগার কাজ ঠিক ভাবে করতে পারে না। বি.পি.এল রেশন কার্ড থাকাতে দিনে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। মাসিক আয় ৫০০ টাকার বেশি হয় না। তা দিয়েই কোনভাবে মাসটা কাটিয়ে দিতে চেষ্টা চালায়। যদি বয়স্ক ভাতাটা পেয়ে যেত শেষ জীবটা একটু স্বস্তিতে কাটাতে পারত। কিন্তু সময় যেন পেথুরামের আরও পরিক্ষা নিতে চায়। চোট্ট একটা ঘরে মাকে নিয়ে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ঘরের বেড়াগুলো পেথুরামের বয়সের মতই লরেবরে হয়ে গেছে। ঘরের ছাউনি দিয়ে দিনের বেলায় আকাশের সূর্য আর রাতে আকাশের তারাগুলি ভালই দেখা যায়। শিতের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস আর বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির জল যেন পেথুরামের ঘরের অদৃশ্য সদস্য। দিন হোক বা রাত বৃষ্টির সময় অসহায় ছেলে বৃষ্টির জল থেকে মাকে রক্ষা করতে ঘরের এক কোনে দাঁড়িয়ে থাকে। ভালো করে একটা ঘর বানিয়ে মাকে নিয়ে থাকার খুব ইচ্ছা মনে। কিন্তু অর্থরাশির কথা চিন্তা করে এই ইচ্ছা যেন কবেই উধাও হয়ে গেছে। স্হানীয় ভিলেজ কাউন্সিলে কয়েকবার ঘরের আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। পেথুরাম ভাল করেই বুঝে গেছে সমাজ এবং সময় আর পক্ষে নেই। এখন ঘরের জন্য এবং বয়স্ক ভাতার জন্য ভিলেজ কাউন্সিলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। প্রায় সময়ই খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবে বয়স্ক মাকে নিয়ে সুস্থ এবং সুন্দর পরিবেশে যদি একটি দিনও কাটাতে পারত জীবনটা সার্থক হত। দারিদ্রতার কারনে আত্মীয় সজন কেউ যোগাযোগ রাখে না। পেথুরাম সব কিছু জেনেও মন থেকে সব দুঃখ যন্ত্রণা ভুলে মাকে নিয়ে জীবনের শেষ যুদ্ধটা চালিয়ে যেতে চায়।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.