চেন্নাই, ভেলুড়, কোটা, কলকাতায় আটকে পড়াদের বিপন্নতা, ত্রান ও উদ্ধারের আর্তি
প্রদীপ চক্রবর্তী
এঁরা অনেকেই গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য, আবার ভাল ফলাফলের জন্য,আবার অনেকেই পেশার তাগিদে। কিন্তু সব কিছু তালগোল পাকিয়ে গেল। কেন পাকিয়ে গেল তালগোল?
লকডাউনে এরা সব আটকে গেল। কেউ কেউ ভেলুড়, চেন্নাই, কোটা আবার কলকাতায়। এঁরা এ রাজ্যের। এঁরা ফিরে আসার জন্য প্রায় পাগলপারা। কেননা এদের হাতে টাকা পয়সা নেই। যাদের ছিল, তাদের টান ধরেছে। দুবেলার জায়গায় একবেলা খাচ্ছেন। তাও আবার নামকেওয়াস্তে। বাঁচতে হবে তাই যৎসামান্য মুখে দেওয়া।যারা লজে তারা আরো বিপাকে। ঘুম ভাঙতেই লজ ওয়ালা হাজির। ভাড়ার জন্য। এদের খাওয়া জুটে না,ভাড়া দেবেন কিভাবে? বললেও শুনতেই চায় না। আবার লজ ও ছেড়ে যেতে বলতেই পারছেনা। কিভাবে বলবে একেকজনের কাছে যে বেশ ভালো অংকের পাওনা রয়েছে। এটা বলা হচ্ছে ভেলুড়, চেন্নাই এর কথা। এদের সংখ্যা প্রায় দেড়শর কাছাকাছি।
সরকার বলেছিল আটকে পড়াদের কাছে টাকা পাঠানো হবে। সে অনুযায়ী ব্যাঙ্কের একাউন্ট নম্বর নেওয়া হল। কুড়ি জনের কাছে দুহাজার করে পৌঁছেছে। কিন্তু বাদবাকিদের কাছে কিছু পৌঁছে নি। আদৌ পৌঁছাবে কিনা তা যেমন অনিশ্চিত তেমনি অনিশ্চিত প্রাপ্তি নিয়ে।
প্রশ্ন হল, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বলেছেন সেখানে কেন তার বলা বাস্তবায়িত হবে না? বাধা বা প্রতিবন্ধকতা কোথায়। তবে এটাতো ঠিক ফাইল প্রসেস হয়েছে, অর্থ দপ্তর মঞ্জুরি দিয়েছে, এ মোতাবেক কয়েকজন টাকা পেয়েছেনও। তাহলে অন্যরা কেন এখনো পায়নি? এর দায়ভার কার? সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্হা নেবেন না? এতে তো তার বিরুদ্ধেই ক্ষোভ সৃষ্টি হবে বা হচ্ছে।
ওদিকে টাকার চিন্তায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার উপর রয়েছে ফিরে আসার চিন্তা। কবে আস্তে পারবে, কিভাবে আসবে, টাকাই পাবে কোথায়?
এদিকে কোটাতে আটকে পড়েছেন রাজ্যের প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা। এদেরও এখন না খেয়েই কাটাতে হচ্ছে বলে খবর।
আরো উদ্বেগজনক হল অনেকেই অনেক কিছু জলের দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া উপায়ও নেই। লজ বা বাড়ী ভাড়াও দিতে পারছেন না অনেকেই। আবার অনেক বাড়ীওইয়ালা বাড়ী ছেড়ে দেয়ার নোটিশ দিয়েছে। সে এক অভাবিত ও অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। এঁরাও আর্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর অফিস বরাবরে। কিন্তু ইতিবাচক খবর এখন পর্যন্ত নেই । তবে গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্হা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এতো বাস্তবায়িত হচ্ছে না। অথচ রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা বহিঃরাজ্যে বিপন্ন, চেন্নাইতে বিপন্নতা। এদের জন্য তো জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।রতন নাথ তো শিক্ষামন্ত্রী।কোটার ছাত্র ছাত্রী দের উদ্ধার করার জন্য তো উনার উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। এদিকে কলকাতায় ও প্রচুর লোকজন আটকে পড়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে ছাত্রছাত্রী ও রোগী। ত্রিপুরাভবনে রোগীদের, আত্মীয়দের ভীড় উপচে পড়ছে। তিলধারনের স্হান নেই। সরকারী তরফে এদের থাকা খাওয়া হচ্ছে। কিন্তু আভ্যন্তরীন পরিবেশ উপচে পড়া ভীড়ে নোংরাও হচ্ছে বলে খবর।
এখন প্রয়োজন দ্রুত এদের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়ে প্রায় বন্দীদশা থেকে এদের উদ্ধার করে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্হা করা। প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দে ও একই দাবী করেছেন বলে জানিয়েছেন।