আরে কি অদ্ভুত ব্যাপার! দুই বগির রেল। তাও আবার সিলেট ষ্টেশনে
প্রদীপ চক্রবর্তী
আরে কি অদ্ভুত ব্যাপার! বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করেই দুই বগির রেল। তাও আবার সিলেট ষ্টেশনে। চলা বন্ধ হতেই যাত্রীরা যে যার ভাবে বগি থেকে নেমে পড়িমরি ছুট। মূহুর্তের মধ্যেই ভ্যানিশ! অনেকের অবাক হওয়ার উপক্রম।
এপ্রিল ১৯ রবিবার সাত সকালের ঘটনা। স্হান সিলেট রেল ষ্টেশন। বাংলাদেশ। দুই বগীর একটি রেল এসে থামল ষ্টেশনে। বেশ কয়েকজন যে যার ভাবে বগী থেকে দ্রুত নেমে এলেন এবং দিলেন ছুট। কজনের হাতে আবার ট্রাভেল ব্যাগ।
কি ব্যাপার! লক গাউনের রেল? তাও আবার ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে।
খবর নিয়ে জানা গেল, ৬০ জন যাত্রী ছিল। লকডাউনে রেল চড়েছেন। শুরু হল খোঁজ খবর। বিশদ কিছু জানাই গেল না।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশ জুড়েই লকডাউন। সিলেট তার ব্যতিক্রম নয়। সবচেয়ে ধনাঢ্য শহর বা জেলা। লন্ডনেই বেশীর ভাগ থাকেন। নানা পেশায় নিয়োজিত। সেই আদ্যিকাল থেকেই সিলেটকে লন্ডৈননা শহর বলা হয়ে থাকে। জেলা জুড়ে বিশাল বিশাল বাড়ী। যাকে বলা চলে ইমারত। দেখা যায় খেতের মাঝখানে দাড়িয়ে আছে জনমানবহীন ইয়া অট্টালিকা। এখনো প্রবাসেই আছেন। আছেন ওসি, ডিও, গাকা পদে কর্মরত। শুনে ভিড়কি খাওয়ার উপক্রম। আসলে ডিসি যিনি তিনি ডিশ ওয়াশ করেন। তাই তাকে বলা হয় ডিশ ওয়াশার। ওসি কাটেন ওনিয়ন বা পেঁয়াজ। আর গাকা হলেন গার্লিক কাটার।
শিক্ষায়ও সিলেট সেরা। আমাদের এখানে যেমন কেরালা। আসলে অধিকাংশই বিদেশে কাজ করে অর্থ রোজগার করে। বৈদেশিক মুদ্রায় গড়ে উঠে ইয়া বড় ইমারত।
লকডাউনে রেল চলাচল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে তো ভাইরাস বিস্তার হয়ে যাবে। একসাথে ৬০ জনের রেল চলাচল তো তাই ইঙ্গিত করে। খবর হলো কারো মাক্স ছিল না, ছিল না সেনিটাইজার। সংক্রমনের ঝুঁকি তো অবধারিত ভাবেই বেড়ে গেল।
এই কান্ড এমন সময়ে ঘটেছে যখন ব্রাক্ষনবাড়িয়ার সড়াইলে এক জানাজায় লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ ঘটে ঠিক তারপর। একের পর এক বিপদ বাড়ছেই। সড়াইল ও তার আশপাশের অঞ্চল প্রায় ৫০ হাজার লোককে কোয়ারেনটাইনে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, ওই সমাবেশ বিধিসম্মত ছিল না। তদোপরি কোয়ারেনটাইন বিধি ভয়ংকর ভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এদিকে নারায়নগঞ্জ এলাকায় একটি ট্রেকারের ভেতর থেকে মধ্যরাতে চল্লিশজনকে আটক করা হয়েছে। আরো বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দেশেও এমন বেআইনি লোকজন চলাচল ধরা পড়েছে।
কিন্তু সব থেকে উদ্বেগের বিষয় ঘরে বাইরে যেভাবে লকডাউন বিধি লঙ্ঘিত হয়ে চলেছে তাতো মানবসভ্যতার বিরোধী। এমনিতেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংকট সভ্যতার অস্তিত্বের। সেকেন্ডে সেকেন্ডে মহামারী কেড়ে নিচ্ছে প্রান।